২০১৮-১৯ সালে ১৪ লাখ টাকা রোজগার করেন রিয়া, প্রশ্ন উঠছে সেখানে কী ভাবে ৬৫ লাখ টাকা খরচ করলেন? ফাইল ছবি
সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যুর তদন্ত যত এগোচ্ছে ততই উঠে আসছে চমকে দেওয়া নানা তথ্য। বেশির ভাগ তথ্যই সুশান্তের বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তীকে কেন্দ্র করে।
তদন্তের অভিমুখ এখন রিয়া চক্রবর্তীর সম্পত্তি, টাকাপয়সা ও বিলাসবহুল জীবনযাপন নিয়ে।একটানা প্রায় ছ’ ঘণ্টার উপর ইডি দফতরে রিয়ার জেরা চলছে। ঘুরেফিরে উঠছে রিয়ার সম্পত্তি আর টাকাপয়সা খরচের প্রশ্ন। ২০১৮-’১৯-এ রিয়া চক্রবর্তী যেখানে ১৪ লাখ টাকা রোজগার করেন, সেখানে কী ভাবে ৬৫ লাখ টাকা খরচ করলেন তিনি? সে টাকা কোথা থেকে কী ভাবে পেলেন রিয়া? প্রশ্ন ইডির।
ইডি সূত্রে জানা যাচ্ছে, রিয়ার নামে মুম্বইয়ের অভিজাত এলাকায় দুটো ফ্ল্যাট আছে।জানা গিয়েছে, মুম্বইয়ের খারে-তে ৮৫ লাখ টাকার একটি ফ্ল্যাট রয়েছে তাঁর।আর একটি ফ্ল্যাট আছে ৬০ লক্ষ টাকার। অভিজাত এলাকায় ফ্ল্যাট কেনার টাকা কোথায় পেলেন রিয়া? প্রশ্ন উঠছে সেখানেও। সুশান্তের বাবা আগেই অভিযোগ করেছিলেন, সুশান্তের টাকা আত্মসাৎ করেছেন রিয়া। সুশান্তের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ১৫ কোটি টাকা তিনি সরিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। অন্য দিকে, গতবছর রিয়ার অ্যাকাউন্টে ছিল ১০ লাখ টাকা। সেখান থেকে সেই নগদের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ১৪ লাখে। ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, সুশান্তের মোট চারটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ছিল। তার মধ্যে দু’টি থেকে বড় অঙ্কের টাকা গিয়েছিল রিয়ার অ্যাকাউন্টে। মুম্বইয়ের অভিজাত এলাকায় যে বাড়ি দু’টি কিনেছিলেন রিয়া, তার কাগজপত্রও দেখতে চাওয়া হয়েছে ইডির তরফে।
আরও পড়ুন: মুম্বই পুলিশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ? রিয়ার কল রেকর্ড থেকে নয়া তথ্য
সুশান্তের বাড়ির পরিচারক, ম্যানেজার, ড্রাইভার, বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সকলেই জানাচ্ছেন, সুশান্তকে সম্পূর্ণ নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিয়েছিলেন রিয়া। সমস্ত খরচ করতেন সুশান্তের ক্রেডিট কার্ডে। শপিং থেকে শুরু করে ইয়োরোপ ভ্রমণ, সবটাই হত সুশান্তের টাকায়।
সুশান্তকে নাকি সম্পূর্ণ নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতেন রিয়া। ফাইল ছবি।
এর পাশাপাশি জোর করে সুশান্তকে বান্দ্রার বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে নিয়ে আসা, পরিবারের সমস্ত খরচ চালানো, বিলাসবহুল গাড়ি কেনা— সবটাই নাকি সুশান্তের থেকে আদায় করেছিলেন রিয়া।সুশান্ত যে দুটো কোম্পানি খুলেছিলেন তার মধ্যে একটা ছিল আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স কোম্পানি, যার অংশীদার ছিলেন রিয়ার ভাই শৌভিক চক্রবর্তী। সুশান্তের দ্বিতীয় কোম্পানি ভিভিড্রেজ রিয়ালিটিক্স চালু হয়েছিল ২০১৯-এর সেপ্টেম্বরে। এই কোম্পানি কাজ করে ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি নিয়ে। কোম্পানিটির পার্টনার ছিলেন সুশান্ত নিজে, রিয়া এবং রিয়ার ভাই। তবে কোম্পানি খোলার সময় যে বিনিয়োগ করতে হয় তার পুরোটাই করেছিলেন সুশান্ত। আর তৃতীয় কোম্পানিটি ওয়ার্ল্ড ফাউন্ডেশনের হয়ে কাজ করে। নাম, ‘ফ্রন্ট ইন্ডিয়া’। ‘কেদারনাথ’-এর তারকার এই কোম্পানিটি ভারতের মানুষের স্বাস্থ্য, দারিদ্র ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করে। এই কোম্পানিতে অর্থের লেনদেন রিয়ার হাত দিয়েই করতেন সুশান্ত। যদিও সেই অর্থ যে কোম্পানির খাতেই খরচ হয়েছিল সে বিষয়ে নিশ্চিত নয় ইডি।
আরও পড়ুন: ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে অভিনেতা-কলাকুশলীদেরও শুটিংয়ের অনুমতি দিল আদালত
রিয়া চক্রবর্তী প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে মুম্বইয়ের সংবাদমাধ্যমকে সুশান্ত সিংহ রাজপুতের সম্পর্কিত দাদা নীরজ কুমার সিংহ জানান, রিয়া চক্রবর্তী যদি নির্দোষ হন, তাহলে তিনি যেন পালিয়ে না বেড়ান। সংবাদ সংস্থা এএনআইয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে সুশান্তের দাদা বলেন, রিয়া নির্দোষ হলে তদন্তে তাঁর সাহায্য করা উচিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy