শ্রীকান্ত মোহতা।
জামিন পেলেন শ্রী বেঙ্কটেশ ফিল্মস (এসভিএফ)-এর অন্যতম কর্ণধার শ্রীকান্ত মোহতা। ভুবনেশ্বরের আদালত সোমবার তাঁর জামিন মঞ্জুর করেছে। জামিনের খবরে স্বভাবতই খুশি শ্রীকান্ত এবং তাঁর পরিবার। খুশি সহকর্মীরাও। মঙ্গল বা বুধবার ভুবনেশ্বর থেকে কলকাতায় পৌঁছবেন শ্রীকান্ত।
প্রসঙ্গত, রোজভ্যালি চিটফান্ড মামলায় ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে শ্রীকান্তকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। টলিউডের ‘অত্যন্ত প্রভাবশালী’ হিসাবে পরিচিত শ্রীকান্তকে সিবিআই গ্রেফতারে অনেকে ‘রাজনৈতিক কারণ’-ও দেখেছিলেন। ঘটনাচক্রে, শ্রীকান্ত ছিলেন শাসক তৃণমূল শিবিরের ‘ঘনিষ্ঠ’। দীর্ঘদিন পর তাঁর জামিন মঞ্জুর হওয়ায় এসভিএফ-এর অপর কর্ণধার মহেন্দ্র সোনি আনন্দবাজার ডিজিটালকে বলেন, “আমাদের বরাবর বিচারব্যবস্থার বিশ্বাস এবং ভরসা ছিল। সেই বিশ্বাসের জায়গা থেকেই আমরা মনে করেছিলাম শ্রীকান্তের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করবে মহামান্য আদালত। আদালতের এই নির্দেশে আমরা খুশি। আমাদের সংস্থার সহকর্মীরাও আনন্দিত।’’ মহেন্দ্র জানাচ্ছেন, জেল হেফাজতে শ্রীকান্ত একবার অসুস্থ হয়ে পড়লেও এখন তিনি শারীরিক ভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ। নির্দেশের প্রতিলিপি এখনও তাঁরা পাননি। তবে তাঁদের আশা, জামিনের পদ্ধতিগত দিকগুলি দ্রুত শেষ করে ফেলতে পারলে মঙ্গল বা বুধবার শ্রীকান্ত কলকাতায় ফিরতে পারবেন। মহেন্দ্রর কথায়, ‘‘আশা করছি, দু-একদিন পরে শ্রীকান্ত কলকাতায় ফিরতে পারবে।’’
এর আগে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর তদন্তেও শ্রীকান্তের নাম উঠেছিল। রোজভ্যালি নিয়ে সিবিআই তদন্তের সময়ে ইডি তাদের যে তদন্ত রিপোর্ট দিয়েছিল সিবিআইকে, সেখানে শ্রীকান্তের নাম উল্লেখ করা হয়। সেই রিপোর্টের সূত্র ধরেই রোজভ্যালির জেলবন্দি কর্ণধার গৌতম কুণ্ডুকে জেরা করেন সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা। সেই জেরাতেই গৌতম দাবি করেন, রোজভ্যালি গোষ্ঠীর টেলিভিশন চ্যানেলের সঙ্গে ২০১০ সালে শ্রীকান্তের শ্রী বেঙ্কটেশ ফিল্মসের একটি চুক্তি হয়। সেই চুক্তি অনুযায়ী ওই প্রযোজনা সংস্থা ২৫ কোটি টাকার বিনিময়ে তাদের ৭০টি ছবি রোজভ্যালির চ্যানেলে দেখানোর স্বত্ব বিক্রি করে। পরে রোজভ্যালির তরফে আদালতে জানানো হয়, চুক্তি অনুযায়ী সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত ছবিও দেওয়ার কথা ছিল বেঙ্কটেশের। কিন্তু যে ৩০টি ছবি শ্রী বেঙ্কটেশ ফিল্মস দিয়েছিল, তার মধ্যে অধিকাংশই ছিল পুরনো। সিবিআইয়ের দাবি, ওই চুক্তিতে এটাও উল্লিখিত ছিল যে এসভিএফ রোজভ্যালি থেকে পাওয়া ওই টাকা দিয়ে ছবি বানাবে। তারও ছোটপর্দায় সম্প্রচার স্বত্ব থাকবে রোজভ্যালির হাতেই। কিন্তু সেই শর্তও পূরণ করেননি শ্রীকান্ত। কার্যত সেই টাকা তিনি ‘আত্মসাৎ’ করেছেন।
আরও পড়ুন: গুনগুনের মতো নাচতে নাচতে নীলকে আনতে গেলে মন্দ হয় না: তৃণা সাহা
সেই অভিযোগের তদন্ত করতেই জেরার জন্য ডেকে পাঠানো হয়েছিল শ্রীকান্তকে। সিবিআই আধিকারিকদের দাবি ছিল, শ্রীকান্তের দেওয়া নথি ‘অসম্পূর্ণ’। তিনি বেশ কিছু তথ্য এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। তদন্তে ‘সহযোগিতা’ করেননি। তাঁর দেওয়া আর্থিক লেনদেনের নথিতেও ‘অস্পষ্টতা’ রয়েছে। সিবিআই সূত্রের খবর, তদন্তে অসহযোগিতা করার জন্যই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এত দিন ভুবনেশ্বরের জেলে বন্দি ছিলেন শ্রীকান্ত। তাঁর জামিনের খবরে প্রত্যাশিত ভাবেই হাঁফ ছেড়েছে শ্রীকান্তের ঘনিষ্ঠ মহল। স্বস্তিতে তাঁর বন্ধুবান্ধবেরা।
আরও পড়ুন: সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে বার বার আঘাত করছেন, ভক্তদের বললেন থালাইভা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy