বাবা নেই। এই শব্দবন্ধ উলোট পালট করে দিয়েছে শ্রীলেখা মিত্রের জীবন। সম্প্রতি, তিনি সুইৎজারল্যান্ড, ভেনিস, রোম ভ্রমণ সেরে ফিরেছেন। উপলক্ষ, ২১ বছর পরে তাঁর অভিনীত বাংলা ছবি ‘ওয়ান্স আপঅন আ টাইম ইন কলকাতা’ ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে দেখানোর আমন্ত্রণ পেয়েছিল। সেই আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে তিনি ১৪ দিন আনন্দের সাগরে ডুবে ছিলেন। ঘুণাক্ষরেও টেন পাননি, বাস্তবের আরও এক ভয়ঙ্কর রূপ তাঁর প্রতীক্ষায়। বিদেশ থেকে ফেরার দিন কয়েকের মধ্যেই তাঁর বাবা সন্তোষ মিত্র পরলোকে। পুজোর ঠিক আগে বাবাকে হারিয়ে অবসন্ন অভিনেত্রী। নিজেকে সামান্য সামলে নিয়ে মঙ্গলবার ফেসবুকে স্বল্প সময়ের ব্যবধানে দুটো পোস্ট তাঁর। শ্রীলেখা যেন লেখার মধ্যে দিয়ে অঝোরে ঝরেছেন, ‘খুব ভালর পরেই খুব খারাপ। এই দুই বিপরীত মেরুর পরিস্থিতির জন্য একেবারেই তৈরি ছিলাম না। আমি বেসামাল!’
একই সঙ্গে বাবার পুরনো ঝলক দিয়েছেন। তাঁর প্রথম ছবি ‘বিটার হাফ’-এর ক্ল্যাপস্টিক দিয়েছিলেন সন্তোষবাবু। শ্রীলেখার দেওয়া ভিডিয়ো বলছে, একবারই ক্ল্যাপস্টিক দিয়ে যাবতীয় বক্তব্য বলতে পেরেছিলেন তাঁর অভিনেতা বাবা। এ বছরের পুজোয় এই সব স্মৃতিই তাঁর সঙ্গী।
গত বছরের পুজো অন্যরকম ছিল শ্রীলেখার। আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে সেই স্মৃতি ভাগ করে নিয়ে জানিয়েছিলেন, পুজোর আগে দিয়ে তিনি চলে গিয়েছিলেন সুন্দরবনের ঝড়খালিতে। সেখানে মানুষের দূষণ নেই। চার দিক সবুজ আর জলের মাঝে অভিনেত্রী। চতুর্থীর দিনে মাছ ধরেছিলেন, মনে আছে তাঁর। গত বছরে পুজোর আগে একদল ছেলে মিলে ঝড়খালিতে একটা রিট্রিট তৈরি করেছিল। শ্রীলেখা অকপট, ‘‘যে আমি খেতে না পাই, ‘এসি চাই’, ‘এসি চাই’ বলে লাফাই সারাক্ষণ, সেই আমি-ই এখানে অল্প আলোয়, পাখার মধ্যে কেমন কাটাচ্ছি। এটাই আমার পুজো।’’
সেই সময়েই তিনি জানিয়েছিলেন, পুজোর চারটে দিন কাটিয়ে তাঁর প্রথম ছবির পরিচালনা শুরু করবেন। তাই গত বছর তোলা ভিডিয়োয় অভিনেত্রীর বাবার পরনে শীতপোশাক। বাবাকে উষ্ণ ও নিরাপদে রাখতে টুপি, মোজা, মাস্ক, জ্যাকেট, মাফলার— কিচ্ছু বাদ দেননি তিনি। কিন্তু এ বছরে শীত আসার আগেই তাঁর বাবা শীতঘুমে।
শ্রীলেখা মাথা খুঁড়ে মরছেন। তবু তাঁর বাবার এই ঘুম যে আর ভাঙার নয়!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy