ইরফান খান
আংরেজ়ি মিডিয়াম
পরিচালনা: হোমি আদাজানিয়া
অভিনয়: ইরফান, দীপক, রাধিকা, করিনা, ডিম্পল, রণবীর
৫.৫/১০
ইরফান খান। নামটাই যথেষ্ট। যে দিন থেকে তাঁর দুরারোগ্য ব্যাধির কথা অনুরাগীরা জেনেছেন, সে দিন থেকে এই দিনটার জন্যই অপেক্ষা করছিলেন তাঁরা— পর্দায় অভিনেতার ঘর ওয়াপসির। হোমি আদাজানিয়ার ‘আংরেজ়ি মিডিয়াম’-এ ইরফানই প্রথম ও শেষ কথা। তবে দুঃখের বিষয়, তাঁকে ছাড়া ছবি নিয়ে বিশেষ কিছু বলার নেই।
সাকেত চৌধুরী পরিচালিত ‘হিন্দি মিডিয়াম’-এর সিকুয়েল এ ছবি। মূল বক্তব্য এবং গল্প বলার ধরনেও ফ্র্যাঞ্চাইজ়িকে বাঁচিয়ে রেখেছেন হোমি। তবে আড়াই ঘণ্টার ছবিতে প্লটের গতি মসৃণ নয়। শুরু থেকেই মনে হবে, গল্পকে ঠেলে ঠেলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। চরিত্রদের মুখে মজার সংলাপ দেওয়া হয়েছে ঠিকই। তবু তা দিয়েও ছবির প্রত্যাশিত মুড তৈরি হয় না।
ইরফানের পাশাপাশি ছবিতে দীর্ঘ সময় ধরে ছিলেন দীপক দোব্রিয়াল। রাম-লক্ষ্মণ জুটির মতো দুই তাবড় অভিনেতার রসায়ন এই ছবির স্তম্ভ। ইরফানের মেয়ের চরিত্রে রাধিকা মদনেরও প্রথমার্ধে অনেকটাই স্ক্রিন প্রেজ়েন্স রয়েছে। তবে এই তিন চরিত্র ছাড়া বাকিদের সে ভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। দ্বিতীয়ার্ধে করিনা কপূর খান এবং ডিম্পল কাপাডিয়ার মতো অভিনেত্রীদের প্লট বদলের অনুঘটক হিসেবে ব্যবহার করা হলেও, তাঁদের চরিত্রায়নে খামতি রয়ে গিয়েছে। এ দিকে ইরফান-দীপক-রাধিকার ত্রিশঙ্কুও ছবিতে কখনও কখনও অতিরিক্ত মনে হচ্ছিল।
পরিচালক হোমির হাতে তাবড় অভিনেতারা ছিলেন। তবে গল্পটাকে আরও জমাটি ভঙ্গিতে বাঁধতে হত। নামী মুখেদের যখন নিয়েছেন, তখন তাঁদের জায়গা করে দেওয়ারও প্রয়োজন ছিল। সেখানেই এই ছবি পিছিয়ে পড়ে। ছোট ছোট চরিত্রে রণবীর শোরে, পঙ্কজ ত্রিপাঠী, কিকু শারদা— কেউ কারও চেয়ে কম যান না। রাধিকা অভিনেত্রী হিসেবে যথেষ্ট শক্তিশালী। তবে ইরফানের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে তাঁর আপ্রাণ চেষ্টা কোথাও কোথাও প্রকট হয়েছে।
এই ফ্র্যাঞ্চাইজ়ির নৈতিক বার্তা তুলে ধরার দায় রয়েছে। আগের ছবির মতো এ ছবিতেও সেই ধারা অক্ষুণ্ণ। সন্তানের খুশির জন্য নিজের শেষ সম্বলটুকু দিয়ে চেষ্টা করেন অভিভাবকেরা। তবে সন্তানেরও বোঝা দরকার, কী দিলে কতটুকু পাওয়া যায়।
‘হিন্দি মিডিয়াম’-এর সঙ্গে এ ছবির পার্থক্য বলতে, ইরফান এখানে একা অভিভাবক। স্ত্রীকে উচ্চশিক্ষার ছাড়পত্র না দেওয়ার আত্মগ্লানি মেয়ের স্বপ্নপূরণের মধ্য দিয়ে মেটাতে চায় সে। দেশ-কাল-পাত্র ভেদে বাবা-মেয়ের সম্পর্কে বাধা হয়ে দাঁড়ায় জেনারেশন গ্যাপ, শিক্ষাগত যোগ্যতা, ইংরেজ ও ইংরেজি ভাষা। ইরফান এবং রাধিকার হাসি-কান্না ছবির ভাল লাগার মুহূর্তগুলির মধ্যে অন্যতম। মেয়ের স্বপ্নপূরণে মরিয়া বাবার চেষ্টা ও বিড়ম্বনার স্ল্যাপস্টিক কমেডির ছকও চেনা।
তবু এ ছবির হোঁচট খাওয়া চিত্রনাট্যে অবিরত প্রাণ ফুঁকে যান ইরফান। চাহনির ওঠাপড়া, স্বল্প অভিব্যক্তি এবং ভণিতাহীন অভিনয়ে দর্শককে তিনি একটা কথাই বলতে চান। ভাষার মিডিয়াম যতই বদলাক, ইরফান-মিডিয়ামের কোনও বিকল্প নেই। অন্তত এই ফ্র্যাঞ্চাইজ়ির জন্য তো বটেই!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy