৪২ বছর আগে মাত্র ৫৫ বছর বয়সে ৩১ জুলাই প্রয়াত হন মহম্মদ রফি। ‘চাহে কোই মুঝে জংলি কহে', ‘কওন হ্যায় যো সপনো মে আয়া’, ‘বাহারোঁ ফুল বরসাও’, ‘পুকারতা চলা হুঁ ম্যাঁয়’— তালিকা বিরাট। ১৯৫০-'৬০-এর দশকে একের পর এক জনপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন রফি সাহাব।
তাঁর কণ্ঠের জাদুর ছোঁয়া লেগেছিল বাংলা গানেও। ‘এখনি বিদায় বোলো না’, ‘পাখিটার বুকে যেন তির মেরো না’, এমন অজস্র গানের আবেদন আজও অমলিন।
সেই প্রথিতযশা মানুষটিকে খুব ছোট বয়েস থেকেই চেনেন সঙ্গীতশিল্পী পূর্ণিমা।
কেমন ছিল সেই অভিজ্ঞতা? জানতে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল পূর্ণিমার সঙ্গে। প্রথম দিনের কথায় আবেগতাড়িত শিল্পী।
‘‘ছবির নাম ‘আন্দাজ’, ১৯৬৯। ‘হ্যায় না বোল বোল’। আমার জীবনের প্রথম রেকর্ডিং রফি সাহাবের সঙ্গে। তখন আমার বয়স মাত্র ন’বছর। প্রথম দেখলাম মহম্মদ রফিকে। আমার বাড়িতে সঙ্গীতের পরিবেশ থাকায় নামটার সঙ্গে পরিচিত ছিলাম। গান গাওয়ার সময় কখনও মনে হয়নি, আমি এত বড় মাপের একজন শিল্পীর সঙ্গে গাইছি। রেকর্ডিং শেষ হওয়ার পর তিনি আমাকে ১০০ টাকা দিয়েছিলেন। আমার জীবনের সেরা উপহার।’’
মহম্মদ রফি ও শাম্মি কপূর কোথাও যেন সমার্থক। শাম্মির পাগলামো, ছটফটে প্রেমিক-মনের সঙ্গে অদ্ভুত ভাবে মিশে যেতে পারতেন রফি সাহাব। তিনিও কি ব্যক্তিগত ভাবে এমনই ছিলেন? পূর্ণিমার উত্তর, ‘‘খুব আস্তে কথা বলতেন তিনি। তাঁর মুখে সারা ক্ষণ লেগে থাকত প্রশান্তির হাসি। রেকর্ডিংয়ের সময় ওই শান্ত হাসিমুখ দেখলেই ভয় কেটে যেত। ওঁকে গানে যে ভাবে আমরা পেয়েছি, মনের দিক থেকে উনি ছিলেন ঠিক তেমনই। উচ্ছল, ছটফটে একটা মানুষ, যাঁর মনটা শিশুর মতো সরল।’’
‘হম কিসিসে কম নেহি’ ছবির ‘ক্যা হুয়া তেরা ওয়াদা’ গানটিতেও রফির সহশিল্পী ছিলেন পূর্ণিমা। তখন তিনি কিশোরী। আর রফি সাহাব? সেই একই রকম শান্ত, মুখে স্মিত হাসি। পূর্ণিমা তখন অনুষ্ঠান করছেন বিভিন্ন মঞ্চে। এমনই এক মঞ্চে এক অন্য রফি সাহাবকে আবিষ্কার করেছিলেন শিল্পী।
কী ঘটেছিল সে দিন?
পূর্ণিমা বললেন, "পুণেতে অনুষ্ঠান ছিল আমাদের, মুম্বই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির তাবড় অভিনেতা, গায়ক উপস্থিত ছিলেন ওই অনুষ্ঠানে। রফিজিও ছিলেন। ‘ইয়াদোঁ কি বারাত’ ছবির ‘চুরা লিয়া হ্যায় তুমনে যো দিলকো’ গানটা তখন বেশ জনপ্রিয়। আমার ইচ্ছে হয়েছিল, ওই গানটা রফিজির সঙ্গে গাইব। ওঁর সঙ্গে যিনি স্যাক্সোফোন বাজাতেন, তাঁকে ‘কাকা’ বলে ডাকতাম। নিজে বলার সাহস ছিল না, তাই কাকাকে অনুরোধ করলাম। কিছু ক্ষণ পর কাকা এসে জানালেন, উনি আমার সঙ্গে গাইতে রাজি হননি। খুব কষ্ট হচ্ছিল, ওখানেই বসে কাঁদছিলাম। হঠাৎ দেখি, সামনে রফিজি। সাদা শার্ট, সাদা প্যান্ট, মুখে হালকা হাসি। আমাকে কিছু না বলে সরাসরি মাকে বললেন, 'আমি জানি আমার না বলায় পূর্ণিমা কষ্ট পেয়েছে, আমারও খারাপ লেগেছে। কিন্তু এত দর্শকের সামনে এই রকম একটা রোম্যান্টিক গান মেয়ের বয়সি কারও সঙ্গে গাইতে পারব না।' এক অন্য রফি সাহাবকে দেখেছিলাম সে দিন। এ ভাবেও যে কোনও শিল্পী ভাবতে পারেন, জানা ছিল না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy