প্রতিবাদী মেখলা দাশগুপ্ত। ছবি: ফেসবুক।
নিজের মতো করে প্রতিবাদী গায়িকা মেখলা দাশগুপ্ত। না, কোনও প্ল্যাকার্ড নেই তাঁর হাতে। তিনি কোনও সমাবেশে জ্বালাময়ী ভাষণও দেননি। বদলে সমাজমাধ্যমে তিনি মুখর। একটি ভিডিয়োয় তাঁর বক্তব্য, “ধর্ষণ শুধুই লালসার ফল নয়। ভয় দেখাতেও ধর্ষণ করা হয়। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের সঙ্গে যা হয়েছে।” তাঁর উপলব্ধি, মৃতা তরুণীর মতো করে আগামী দিনে যাতে আর কেউ প্রতিবাদী হওয়ার সাহস না দেখান, তার জন্যই এ রকম নারকীয় কাণ্ড ঘটানো হয়েছে। মেখলাও বিষয়টি নিয়ে সমাজমাধ্যমে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। তাঁর ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই চর্চিত। গায়িকার ধর্ষণের ভয় নেই? ভিডিয়ো দেখে প্রশ্ন রেখেছিল আনন্দবাজার অনলাইন। জবাবে তাঁর বক্তব্য, “হ্যাঁ, ধর্ষণের ভয় আমারও অল্পবিস্তর আছে। তার পরেও মনে হয়, মাথার উপরে ঈশ্বর আছেন। নিশ্চয়ই তিনি বিচার এবং রক্ষা— দুটোই করবেন।”
মেখলার মন্তব্যবাক্স বলছে, তাঁর বক্তব্য শুনে প্রভাবিত অনেকেই। তাঁরা সে কথা লিখে জানিয়েওছেন। ভিডিয়োবার্তায় কী বলেছেন গায়িকা? তাঁর মত, “অনেকেই মিছিলে বলছেন, মেয়েদের ‘না’ মানে যে না আর হ্যাঁ মানে ‘হ্যাঁ’— এটা মানতে হবে। এটা ঠিক নয়। কারণ আমার মতে, সব ধর্ষণ লালসা থেকে হয় না। অনেক সময় ভয় দেখানোর জন্যও হয়।” নিজের কথার পক্ষে তাঁর যুক্তি, সে ক্ষেত্রে তাঁর মৃত্যু অন্য ভাবেও ঘটতে পারত। কিন্তু সেটা ঘটেনি। বদলে নারকীয় কাণ্ড ঘটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। উদ্দেশ্য, বাকিদের মনে ভয় জাগানো। আনন্দবাজার অনলাইনকে মেখলা বলেছেন, “সাধারণ মানুষ মৃত্যুভয়ে, কাজ হারানোর ভয়ে অনেক অন্যায় দেখেও চুপ করে থাকেন। ভয়ের চোটে অনেকে অন্যায়কারীর হ্যাঁ-তে হ্যাঁ, না-তে না বলেন। এই ভয় যে দিন জয় করা যাবে, সে দিন অন্যায় পরাস্ত হবে। তার জন্য প্রতিবাদ প্রয়োজন।”
এই জায়গা থেকেই গায়িকার দাবি, না খেতে পেয়ে মরার ভয় তাঁর নেই। আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে নিজের মত প্রকাশ করে বলেছেন, “আমি নিজের মতো করে কাজ বেশি করি। খুব যে ছবিতে গাই বা প্রচুর পুরস্কার পাই, তেমন নয়। ফলে, কাজ না পাওয়ার ভয় আমার কম।” তার পরেও যদি কাজ আর না-ই পান তা হলে তিনি গান শেখাবেন। আঁকতে জানেন। সেটাও যত্ন নিয়ে শেখাতে পারবেন। ফলে, অন্নের অভাব তাঁর কোনও দিন হবে না। যাঁরা তাঁর মতো শিক্ষিত হওয়ার সুযোগ পাননি, তাঁদের জন্য তাঁর কী বার্তা? মেখলার কথায়, “এই জন্যই নারীর শিক্ষা আর উপার্জনের উপর জোর দেওয়া হয়। প্রত্যেক মানুষের ক্ষেত্রে এই দুটো বিষয় জরুরি। তার পরেও বলব, যাঁরা পিছিয়ে রয়েছেন, তাঁরা যদি সৎ পথে থাকেন, ঘুরপথে না গিয়ে, পরিশ্রম করে নিজের প্রাপ্য পাওয়ার চেষ্টা করেন তা হলেও তাঁরা জিতবেন। হয়তো কষ্ট বেশি করতে হবে। বদলে অন্যায় পিছু হটবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy