Silk Smitha, this south film super star's death is still in dark dgtl
Silk Smitha
নাবালিকা বয়সে গার্হস্থ্য হিংসার শিকার, পরিচারিকা থেকে বোল্ড দক্ষিণী তারকা সিল্কের মৃত্যু আজও রহস্যেই
প্রকৃত নাম বিজয়লক্ষ্মী। তাঁর এই নামটা মনে রাখেননি কেউই। সকলের কাছে তিনি সিল্ক স্মিথা।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২০ ১৬:৫২
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
প্রকৃত নাম বিজয়লক্ষ্মী। তাঁর এই নামটা মনে রাখেননি কেউই। সকলের কাছে তিনি সিল্ক স্মিথা।
০২২০
দক্ষিণী এই সুপারস্টার প্রতি ফিল্মেই ঝড় তুলতেন তাঁর বোল্ড উপস্থিতিতে। একটা সময় এমন এসেছিল, যখন ইন্ডাস্ট্রিতে 'সিল্ক স্মিথা' এবং 'বোল্ড' শব্দ দু'টি সমার্থক হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
০৩২০
পর্দায় যতটাই বোল্ড এবং ডেসপারেট হিসাবে তুলে ধরা হত তাঁকে, বাস্তবে তিনি ছিলেন ঠিক উল্টো। অত্যন্ত দায়িত্বশীল, উচ্চাকাঙ্ক্ষী, নরম হৃদয়ের এবং শিশুসুলভ একজন মানুষ।
০৪২০
কেরিয়ারে্র শীর্ষে থাকার সময় আচমকাই তাঁর মৃত্যু হয়। পুলিশের খাতায় তা নেহাতই সুইসাইডের তকমা পেলেও ইন্ডাস্ট্রিতে আজও গুঞ্জন, তাঁকে খুন করা হয়েছিল। ২৪ বছর পরও তাঁর মৃত্যু রহস্যই থেকে গিয়েছে।
০৫২০
ছোট থেকেই তাঁর জীবন ছিল কষ্টে ভরা। প্রচুর ওঠাপড়া সামলে তিনি ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের জায়গা পাকা করেছিলেন।
০৬২০
১৯৬০ সালের ২ ডিসেম্বর অন্ধ্রপ্রদেশের ইলোরুতে এক তেলুগু পরিবারে জন্ম তাঁর। পরিবারের আর্থিক অবস্থা ছিল শোচনীয়।
০৭২০
অর্থের অভাবে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ার সময় স্কুল ছাড়িয়ে দেওয়া হয় তাঁর। অথচ চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা জানা সিল্ক পরবর্তী কালে ঝরঝরে ইংরেজিতে কথা বলতেন। কাজের প্রতি তাঁর নিষ্ঠা এমনই ছিল।
০৮২০
আকর্ষণীয় চেহারা হওয়ায় বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সিল্ক ছেলেদের কাছ থেকে কুপ্রস্তাব পেতে শুরু করেছিলেন। তাঁকে সচরাচর বাড়ি থেকে বেরতে দিতেন না মা। বেশি দিন বাড়িতে রাখাও নিরাপদ ছিল না।
০৯২০
দরিদ্র মা-বাবা তাই সিল্কের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে তাঁকে বিয়ে দিয়ে দেবেন ঠিক করে বসলেন। মাত্র ১৪ বছর বয়সে এক গরুর গাড়ির চালকের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়।
১০২০
কিন্তু বিবাহিত জীবন ছিল আরও দুঃসহ। বিয়ের পর থেকে তাঁর উপর শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন শুরু হয়। সে সব মানতে না পেরে বাড়ি থেকে পালিয়ে চেন্নাই চলে আসেন।
১১২০
চেন্নাইয়ে এক অভিনেত্রীর বাড়িতে প্রথম পরিচারিকার কাজ পান তিনি। তিনি ওই অভিনেত্রীর মেক আপে সাহায্য করতেন। একদিন ওই অভিনেত্রীর বাড়িতে এক পরিচালক আসেন। তাঁর বড় গাড়ি দাঁড়িয়ে দেখছিলেন সিল্ক।
১২২০
এ নিয়ে অভিনেত্রী তাঁকে ব্যঙ্গ করেছিলেন। সিল্কও প্রত্যুত্তরে জানিয়ে দেন, একদিন এ রকমই বড় গাড়িয়ে চেপে যাবেন তিনি আর সেই গাড়িটা তাঁর নিজের হবে। এর পরই দুনিয়ার কাছে নিজের দক্ষতা প্রমাণ করার জেদ চেপে যায় তাঁর।
১৩২০
তিনি প্রথম একটি মালয়ালম ফিল্মে ছোট চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান। তাঁর অভিনয় দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন পরিচালক ভিনু চক্রবর্তী। এই পরিচালকই সিল্কের মেন্টর।
১৪২০
কী ভাবে কথা বলতে হয়, কী ভাবে চলতে হয়, সব ভিনু এবং তাঁর স্ত্রী নিজে হাতে সিল্ককে শিখিয়েছিলেন।
১৫২০
তাঁদের কাছেই স্কুল ড্রপ আউট সিল্ক ইংরেজিতে কথা বলতে শেখেন। নাচও শেখেন। প্রত্যন্ত অঞ্চলের দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা সিল্কের আদবকায়দা একেবারে বদলে যায়।
১৬২০
১৯৮০-র তামিল ছবি ‘বন্দিচক্করম’ ছিল তাঁর প্রথম ফিল্ম, যাতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেন। এই ফিল্মে তিনি একজন বার গার্ল হয়েছিলেন। এবং তাঁর চরিত্রের নাম হয়েছিল 'সিল্ক'। সেই থেকেই তিনি 'সিল্ক স্মিথা'।
১৭২০
নিজের অভিনয় দিয়ে সিল্ক এতটাই জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন যে, কোনও ফিল্মে তাঁর একটি আইটেম ডান্স ঢুকিয়ে দিলেই সেই ফিল্ম হিট হয়ে যেত।
১৮২০
এ রকমই ছিলেন সিল্ক। তবে তাঁর ভক্তের সংখ্যা যতটা ছিল, তাঁর বন্ধুর সংখ্যা ততটাই কম ছিল। কম কথা বলা সিল্কের হাতেগোনা কয়েক জন বন্ধু ছিলেন। তাঁদের কাছ থেকে জানা যায়, সিল্ক ছিলেন শিশুর মতো নরম মনের মানুষ।
১৯২০
১৯৯৬ সালে ২৩ সেপ্টেম্বর কেরিয়ারের শিখরে থাকার সময়ই রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হয় তাঁর। চেন্নাইয়ে নিজের বাড়িতে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছিল।
২০২০
মৃত্যুর আগে তাঁর এক বন্ধুকে ফোন করে কিছু একটা বলতে চেয়েছিলেন তিনি। তাঁর বন্ধু যত ক্ষণে পৌঁছন, তত ক্ষণে সিল্কের মৃত্যু হয়েছিল। ময়নাতদন্তে তাঁর শরীরে প্রচুর অ্যালকোহল পাওয়া গিয়েছিল এবং এটাকে সুইসাইড বলেই কেস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।