প্রদীপদার সঙ্গে তিন জামাই-এর ‘বেলাশেষে’তে যে দৃশ্য ছিল সেটা দর্শকের খুব মনে ধরেছিল। ‘বেলাশুরু’তেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। বিশেষ করে প্রদীপদার সব থেকে প্রিয় যেটা, প্রদীপদার ‘কে?’ বলাটা। এবং কোনও কিছুই প্রদীপদা বুঝতে পারছে না। খরাজদা তার পরেই প্রদীপদাকে বলে, “ব্যস হয়ে গেল, এ বার ও আর কোনও কথাই বুঝতে পারবে না।”
প্রদীপ-খরাজ
প্রদীপ ভট্টাচার্য মানে ‘বেলাশেষে’র এবং ‘বেলাশুরু’র গণশা দর্শকের অত্যন্ত প্রিয় চরিত্র। ‘বেলাশেষে’ সিনেমাতে প্রদীপদার দুটো মুখ্য দৃশ্য ছাড়া কোনও সংলাপ ছিল না। আমাদের সহযোগী পরিচালকেরা আমাদের জিজ্ঞেস করেছিল তা হলে ১৬দিন ওঁকে লাগবে কেন? আমাদের উত্তর ছিল বিশ্বনাথের জীবনে আরতি যতটা প্রয়োজনীয়, গণশাও ঠিক ততটাই। বিশ্বানাথের ছায়াসঙ্গী। ‘বেলাশুরু’তেও তাই। সেই ভাবেই তৈরি করা গণশার চরিত্র। আর গণশা পর্দায় আসা মানেই একরাশ মজা, একরাশ আবেগ।এই সিনেমাতেও তাই রয়েছে। একটি বিশেষ দৃশ্য আছে, যে দৃশ্যটার নাম আমরা দিয়েছি ‘কিছু ভুলছি না তো’।
প্রদীপ ভট্টাচার্য এবং খরাজ মুখোপাধ্যায় দুজনের যুগলবন্দী, আর দর্শক এটা খুবই পছন্দ করবেন।
সোনাঝুড়ি জঙ্গলে আগুন জ্বলছে। আগুনের তাত নিতে নিতে এই দুই অভিনেতা তাঁদের দৃশ্যটি করছেন। প্রদীপদা বলতে চাইছেন যে প্রদীপদাকে বাজার করতে দেওয়া হয়েছিল। অনেক কিছু জিনিস কিনেছেন তিনি এবং তাঁর বারবারই মনে হচ্ছে সে কিছু ভুলছে না তো? এর থেকে বেশি এই দৃশ্যটা সম্পর্কে কিছু বলব না। কিন্তু, এই দৃশ্যটা হওয়ার পর যেটা হল সারা শ্যুটিং ইউনিটের মধ্যে এই কথাটা চালু হয়ে গেল ‘কিছু ভুলছি না তো?’ ইলেক্ট্রিশিয়ান তার সমস্ত জিনিসপত্র শ্যুটিং -এর শেষে গোছাতে গোছাতে বলে ‘কিছু ভুলছি না তো?’। মেক-আপ ম্যান তার মেক-আপের কিট গোছাতে গোছাতে বলে ‘কিছু ভুলছি না তো?’
আমরা যখন শান্তিনিকেতন থেকে কলকাতায় ফিরছি ট্রেনে করে, ট্রেনে সবার ব্যাগ তোলা হচ্ছে। প্রডাকশনের লোক বলে, সবার ব্যাগ তোলা হল। মনামীদির ব্যাগ তোলা হয়েছে, অপাদির ব্যাগ তোলা হয়েছে, ঋতুদির ব্যাগ তোলা হয়েছে আর কিছু ভুলছি না তো?
ট্রেনের ভেতরে সৌমিত্রদা। সৌমিত্রদা বললেন, ‘সবাই উঠেছে তো ট্রেনে?’ খরাজ, ঋতু, মনামী সবার নাম করে বললেন ‘কিছু ভুলছি না তো?’ এই মজাটা শ্যুটিং শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও বেশ কিছু দিন আমাদের মধ্যে ছিল এবং আমাদের ইউনিটের ভেতরেও ছিল, যে সবকিছু গুছিয়ে নেওয়ার পর কেউ কিছু ফেলে যাচ্ছে না তো? কিছু ভুলছি না তো?
প্রদীপদার সঙ্গে তিন জামাই-এর ‘বেলাশেষে’তে যে দৃশ্য ছিল সেটা দর্শকের খুব মনে ধরেছিল। ‘বেলাশুরু’তেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। বিশেষ করে প্রদীপদার সব থেকে প্রিয় যেটা, প্রদীপদার ‘কে?’ বলাটা। এবং কোনও কিছুই প্রদীপদা বুঝতে পারছে না। খরাজদা তার পরেই প্রদীপদাকে বলে, “ব্যস হয়ে গেল, এ বার ও আর কোনও কথাই বুঝতে পারবে না।” দৃশ্যে গণশাকে বোঝাতে গিয়ে বড় জামাই বলছে, “কে?”, এটাও আমাদের মধ্যে একটা চালু হয়েছিল। কেউ যখন কোনও কথা বুঝতে পারত না তখন তাকে বলতাম “ব্যস! এখন গণশা হয়ে গেছে ও।”
‘বেলাশেষে’তে প্রদীপ ভট্টাচার্য অদ্ভুত ভাবে দর্শকের সামনে নতুন রূপে এসেছিলেন। এখন প্রদীপদাকে নিয়ে অনেকেই কাজ করেন। ভাল লাগে। প্রদীপ ভট্টাচার্য বহরমপুর রেপার্টরি থিয়েটারের জনক। কারাগারের মানুষদের নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করেছেন। প্রদীপদার কাজ অভিনয় আরও মানুষের কাছে আসা উচিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy