সমাজের উদ্দেশে গুরুগম্ভীর বার্তা নয়। সেরা অভিনেতার পুরস্কার হাতে ৫৯ বছরের গ্যারি ওল্ডম্যান ক্যামেরা মারফত তাঁর ৯৯ বছরের মাকে বললেন, ‘‘চা বসাও। অস্কার আনছি।’’ ৯০তম বছরে এতটাই আধুনিক আর প্রাণবন্ত অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডস। শ্বেতাঙ্গ, পুরুষ, বাস্তববাদী সিনেমার প্রতি পক্ষপাতের অভিযোগগুলির জবাব দিল সকলকে বুকে টেনে নিয়ে। মুসলিম, কৃষ্ণাঙ্গ, নারী, মূক-বধির শিশু বা কল্পনাবিলাসী— মঞ্চে সবাই নিজের আওয়াজ তোলার সুযোগ পেলেন।
ক্যালিফোর্নিয়ার ডলবি থিয়েটারে অনুষ্ঠিত এই পুরস্কারসভায় যাঁরা পুরস্কার পাবেন বলে আশা ছিল, তাঁরাই পেয়েছেন। তবে লক্ষণীয়, হার্ভে উইনস্টাইন বা জেমস ফ্রাঙ্কোর মতো সমালোচিত মানুষের অনুপস্থিতি। সেরা ছবি, পরিচালকের ট্রফি সামলাতে সামলাতে গিয়ের্মো দেল তোরো বললেন, ‘‘আমি গর্বিত, আমি অভিবাসী। আমি স্বপ্ন দেখি।’’
জিমি কেমেল পরপর দু’বছর অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করলেন। পরের বার তিনি দায়িত্ব না নিলে, দৌড়ে থাকবেন টিফানি হ্যাডিশ ও মায়া রুডোল্ফ-এর সাদা-কালো জুটি। ক’মিনিটেই মঞ্চ মাতালেন তাঁরা। হাই হিল ছেড়ে বাড়ির স্লিপার পরে এসে এই রক্ষণশীল আসরে যেন পুরো জীবন ঢেলে দিলেন। তাঁদের তালে তাল মিলিয়ে হাওয়াই দ্বীপের কিয়ালা সেটল গাইলেন, ‘‘আমি রক্তাক্ত, আমি সাহসী। দিস ইজ মি।’’
কাহিনির সেরা চলচ্চিত্রায়নের জন্য পুরস্কৃত ‘কল মি বাই ইয়োর নেম’-এর ৮৯ বছরের যুবক জেমস আইভরি। তিনি কিশোর ও যুবকের সমলিঙ্গ প্রেমের অসমসাহসী সিনেমা লিখেছেন। পরপর পাঁচ বার মঞ্চে জয়জয়কার লাতিন আমেরিকার। সেরা ছবি ছাড়াও সেরা অ্যানিমেশন (কোকো), সেরা বিদেশি ছবি সব চিলে, মেক্সিকোর দখলে।
শ্রদ্ধার্ঘ্য-পর্বে তারা হয়ে যাওয়া তারকাদের তালিকায় জেমস বন্ড-খ্যাত রজার মুর, কমেডির রাজা জেরি লুইসের পাশে সম্রাটের মতো দেখা দিলেন এ দেশের নাট্য ও চলচ্চিত্রের প্রবাদপুরুষ শশী কপূর। এবং তামাম ভারতকে শিউরে, শশীরও আগে, এক লহমার জন্য নতুন চেহারার অস্কারের প্রণাম পেলেন এই অভিজাত আঙিনায় বরাবর ব্রাত্য বলিউডের উচ্ছ্বল এক প্রাণ। তিনি শ্রীদেবী!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy