থ্রি টু ওয়ান জ়িরো। এবং দৌড় শুরু। ‘জব হ্যারি মেট সেজল’ ছিল শেষের আগের ল্যাপ এবং ‘জ়িরো’ শেষ, যা শাহরুখ খানকে ঠেলে দিল যে দিকে, সে দিকে শুধুই অনন্ত শূন্যতা!
‘বাদশা’ এ ছবিতে সাজতে চেয়েছিলেন মেরঠের চার ফুট ছ’ইঞ্চির বাউয়া সিংহ। সাধারণ এক জন। তার জন্য তো সুপারস্টারের হাত ছড়িয়ে চিরপরিচিত ম্যানারিজ়ম, চোখের আকুতি, চুলের কায়দা এ সব থেকে বেরোতে হবে। কিন্তু সে লোভ ছাড়া কি চাট্টিখানি কথা? শাহরুখ খানের চৌম্বক তো সেখানেই। আবার অন্য রকম চরিত্র করার ইচ্ছেও তাঁর ষোলোআনা। ফলে দুইয়ের মিশেলে যেটা দাঁড়িয়েছে, তিনি পর্দায় শাহরুখ খানই রয়ে গিয়েছেন। কম্পিউটার ও ক্যামেরার কারসাজিতে তাঁকে উচ্চতায় ছোট লেগেছে, এই যা! যদি সেটাই হয়, তা হলে কেন এই বামন সাজার ভ্রান্ত চেষ্টা? দর্শক তফাত করতে পারবেন না ভেবে?
পরিচালক আনন্দ এল রাইও গুলিয়ে ফেলেছেন শাহরুখ খানকে নিয়ে তিনি কমেডি, রোম্যান্স না কি ফ্যান্টাসি ড্রামা, ঠিক কী ধরনের ছবি বানাতে চান! অথচ এর আগে তিনিই তো বানিয়েছেন ‘রাঞ্ঝনা’ বা ‘তনু ওয়েডস মনু’র মতো ছবি। যেখানে গল্পের নানা আঙ্গিক কিংবা চরিত্রের স্তর দর্শককে বুঁদ করে রাখে। এখানেও পরিচালক সেই ছকটাই রাখতে চেয়েছিলেন। বাবার টাকা উড়িয়ে বেড়ানো আদরের বাউয়ার প্রেমে পড়ে সেরিব্রাল পলসিতে আক্রান্ত স্পেস সায়েন্টিস্ট আফিয়া (অনুষ্কা শর্মা)। সে প্রেমের কাহিনি এতটাই অবাস্তবতা, অতিরঞ্জনে ভরা যে, তা নিয়ে বিশদে গেলাম না। তবে একটা সম্ভাবনা কিন্তু ছিল। বাউয়া এবং আফিয়ার মধ্যে যে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, তা তাদের কারওই চোখে পড়ে না। পরস্পরকে তারা দু’জন মানুষ হিসেবেই দেখে। যদিও অচিরেই সে সূক্ষ্ম তার কেটে যায়। অবশ্য রোম্যান্স কিং-এর প্রেমের দৃশ্যে পারদর্শিতা বা ‘মেরে নাম তু’ গানের দৌলতে ছবির প্রথমার্ধ ধৈর্যের খুব বেশি পরীক্ষা নেয় না। হুইল চেয়ারে বসা বিজ্ঞানীর চরিত্রটিকে ফুটিয়ে তোলার অনুষ্কার অতিরিক্ত চেষ্টা ভীষণ ভাবে আরোপিত। বিয়ের দিন আফিয়াকে রেখে বাউয়া পালিয়ে যায় এক ডান্স কম্পিটিশনে যোগ দেবে বলে। জিতলে পুরস্কার তার স্বপ্নের নায়িকা ববিতা কুমারির (ক্যাটরিনা কাইফ) সঙ্গে সাক্ষাৎ। প্রথম সারির নায়িকার নাম ববিতা কুমারি! শুনেছেন কখনও? দেখেছেন কি নায়িকা পাবলিক অ্যাপিয়ারেন্স দিচ্ছেন জলে ভরা, কাজল ধ্যাবড়ানো চোখে? প্রেমিককে অন্য নারীর সঙ্গে দেখে মিডিয়ার উপস্থিতিতে স্থান-কাল-পাত্র গুলিয়ে ফেলতে? অসঙ্গতির তালিকা দেওয়া মানে চালুনির ছিদ্র গোনা। যদিও এ ছবিতে ক্যাটরিনার অভিনয় ও শরীরী ভাষা প্রশংসনীয়।
সব ভুলভ্রান্তি ছাপিয়ে গিয়েছে মেরঠ থেকে বাউয়ার মঙ্গলে ‘যাত্রা’পালা। পরিচালক, অভিনেতা এই অংশে এসে যুক্তি-বুদ্ধি সব হারিয়ে ফেলেন। ফলে ১৬২ মিনিট ধরে পর্দায় দর্শকের ধৈর্যের পরীক্ষা নিয়ে শাহরুখের ঝুলিতে এল শুধুই রাগ, হতাশা। এখান থেকে তিনি যদি ফেরেন, তা হলে সেটা হবে এ ছবির গল্পের মতোই, যেখানে স্পেসশিপ মহাশূন্যে হারিয়ে যাওয়ার পনেরো বছর পরে হঠাৎ তার খোঁজ পাওয়া যায় এবং সেখানে জীবন্ত বাউয়া! অসম্ভবকে সম্ভব করতে তো আপনিই পারেন শাহরুখ!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy