Setting many hearts aflutter Arvind Swamy did not think twice to say adieu to acting dgtl
Arvind Swamy
আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তার পরেও কেন অভিনয় ছেড়ে নিভৃতে চলে গিয়েছিলেন ‘রোজা’-র নায়ক
মণিরত্নমের হাত ধরেই ফিরে আসেন আবার সাত বছর পরে। ২০১৩-এ মুক্তি পায় অরবিন্দ স্বামী অভিনীত ‘কাদাল’। তবে তার আগে তাঁকে পনেরো কেজি ওজন ঝরাতে হয়। এক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে তিনি শয্যাশায়ী ছিলেন দীর্ঘ দিন। ফলে ওজন বেড়ে গিয়েছিল মাত্রাতিরিক্ত হারে।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১০:৫৮
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৬
কলেজজীবনে দরকার ছিল চটজলদি হাতখরচ। সে জন্যই শুরু করেছিলেন মডেলিং। কোনও দিন ভাবেনইনি নায়ক হয়ে ঝড় তুলবেন অসংখ্য তরুণী-হৃদয়ে। স্টারডমের স্বপ্ন ছিল না। তাই নির্দ্বিধায় ছেড়ে গিয়েছিলেন অভিনয়ও। তিনি অরবিন্দ স্বামী।
০২১৬
জন্ম ১৯৭০ সালের ১৮ জুন। তাঁর বাবা ভিডি স্বামী শিল্পপতি এবং স্বাধীনতা সংগ্রামী। মা সিভিএস বসন্ত ছিলেন ভরতনাট্যম শিল্পী। তৎকালীন মাদ্রাজের ডন বস্কো স্কুলের পরে পড়াশোনা লয়োলা কলেজে। ১৯৯০ সালে বিকম পাশ করেন।
০৩১৬
কলেজে থাকতেই মডেলিং-এর সঙ্গে শুরু থিয়েটারে অভিনয়ও। কিন্তু অভিনেতা হিসেবে গুরুত্ব পাননি। লয়োলা থিয়েটার সোসাইটি-তে অভিনয়ের সময় তাঁকে মঞ্চ থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
০৪১৬
মডেলিং করতে করতেই চোখে পড়ে যান মণিরত্নমের। তাঁর এবং পরিচালক সন্তোষ শিবনের কাছেই অভিনয়ের অ-আ-ক-খ শেখা। প্রথম ছবি ‘থলপথি’ মুক্তি পেয়েছিল ১৯৯১ সালে। মণিরত্নমের পরিচালনায় এই তামিল ছবিতে নবাগত অরবিন্দ অভিনয় করেছিলেন রজনীকান্ত, মাম্মুত্তির মতো নামী অভিনেতাদের সঙ্গে।
০৫১৬
এরপর ১৯৯২ সালে ‘রোজা’। তার তিন বছর পরে ‘বম্বে’। মণিরত্নমের নির্দেশনায় বলিউডের দুই আইকনিক ছবিতে অভিনয়। মাত্র দু’টি ছবির দৌলতে হিন্দি ছবির দর্শকদের কাছে অরবিন্দ স্বামী দেশ জুড়ে অকল্পনীয় জনপ্রিয়তা পান। যাঁরা দক্ষিণী ছবির খোঁজ রাখেন না, তাঁদের হৃদয়ে অরবিন্দ স্বামীর জায়গা এই দুই ছবির সুদর্শন নায়ক হিসেবেই।
০৬১৬
নয়ের দশকের গোড়া থেকে ২০০০ অবধি মূলত তামিল, তেলুগু ও মালয়ালম ছবিতে চুটিয়ে অভিনয় করেছেন অরবিন্দ স্বামী। ১৯৯৫-এ ‘বম্বে’-এর পরে তাঁকে বলিউডে ফের দেখা যায় ১৯৯৮-এ। ‘সাত রং কে স্বপ্নে’ ছবিতে। তারপর ২০০০-এ, ‘রাজা কো রানি সে প্যার হো গ্যয়া’ ছবিতে। এর বাইরে সে সময় হিন্দি ছবিতে আর অভিনয় করেননি দক্ষিণের এই সুপারস্টার।
০৭১৬
২০০০-এর পরে ছ’বছর অরবিন্দ স্বামীকে কোনও ইন্ডাস্ট্রিতেই দেখা যায়নি। স্নাতকোত্তর স্তরে পড়াশনো করতে চলে গিয়েছিলেন আমেরিকা। নর্থ ক্যারোলিনার ওয়েক ফরেস্ট ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতকোত্তর করেন ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস নিয়ে।
০৮১৬
দেশে ফিরে অরবিন্দ মন দেন ব্যবসায়। তাঁর ব্যবসার কাজকর্ম বিস্তৃত ছিল আমেরিকা ও ইউরোপে। ব্যবসায়িক সূত্রে তাঁকে মাঝে মাঝেই বিদেশে যেতে হত। সেখানেও তাঁকে অনেকে চিনে ফেলতেন ‘রোজা’র নায়ক হিসেবে।
০৯১৬
ব্যবসা ছাড়াও আরও একটি দিকে ব্যস্ত হয়ে পড়েন অরবিন্দ। সে সময় তিনি ছিলেন সিঙ্গল পেরেন্ট। ২০১০ সালে ভেঙে গিয়েছিল তাঁর ষোলো বছরের দাম্পত্য। বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছিল স্ত্রী গায়ত্রী রামমূর্তির সঙ্গে। মেয়ে অধীরা এবং ছেলে রুদ্রর কাস্টডি পেয়েছিলেন অরবিন্দ। ফলে ব্যবসা, সিঙ্গল পেরেন্টিং-এর পাশাপাশি ফিরতে পারেননি অভিনয়ে।
১০১৬
পরে এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, অভিনয় বা ইন্ডাস্ট্রিকে তিনি যে খুব মিস করছিলেন, তাও নয়। বরং ভাল লাগছিল না স্টারডম। তিনি ভাল অভিনেতা হতে চেয়েছিলেন। নায়ক হওয়ার কোনও ইচ্ছে ছিল না। নায়ক হয়ে প্রাইভেসি বিসর্জন দেওয়া তাঁর পছন্দ হত না।
১১১৬
২০০৬ সালে অভিনয়ে কামব্যাক। তবে পূর্ণমাত্রায় নয়। সে বছর মাত্র একটি ছবিতেই অভিনয় করেন। তামিল ভাষার সে ছবির নাম ‘সসনম’। তারপর আবার সরে যান ইন্ডাস্ট্রি থেকে।
১২১৬
মণিরত্নমের হাত ধরেই ফিরে আসেন আবার সাত বছর পরে। ২০১৩-এ মুক্তি পায় অরবিন্দ স্বামী অভিনীত ‘কাদাল’। তবে তার আগে তাঁকে পনেরো কেজি ওজন ঝরাতে হয়। এক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে তিনি শয্যাশায়ী ছিলেন দীর্ঘ দিন। ফলে ওজন বেড়ে গিয়েছিল মাত্রাতিরিক্ত হারে।
১৩১৬
মণিরত্নমের প্রতি অরবিন্দ স্বামীর গভীর সমীহ। বলেছেন, অসম্ভব পরিশ্রমী এই পরিচালকের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছেন। তিনি জানেন, কোন অভিনেতা কী করতে পারবেন, কী করতে পারবেন না। ফলে তাঁর ছবিতে নিজের সেরাটুকু দিতে কুশীলবদের অসুবিধে হয় না।
১৪১৬
দক্ষিণের ছবিতে আবার ধীরে ধীরে নিয়মিত অভিনয় শুরু করেছেন অরবিন্দ স্বামী। চলতি বছরে মুক্তি পেয়েছে তাঁর চারটি ছবি। অভিনয়ে ফেরার পাশাপাশি ব্যক্তিগত জীবনেও এসেছে নতুন পর্ব। ২০১২ সালে অরবিন্দ বিয়ে করেন আইনজীবী অপর্ণা মুখোপাধ্যায়কে।
১৫১৬
অনেকেই জানেন না, অভিনেতার পাশাপাশি অরবিন্দ স্বামী একজন ডাবিং আর্টিস্ট-ও। ১৯৯৪ সালে ‘দ্য লায়ন কিং’ যখন প্রথমবার মুক্তি পেয়েছিল, অরবিন্দ ডাবিং করেছিলেন পূর্ণবয়স্ক সিম্বা-র চরিত্রে। পঁচিশ বছর পরে ২০১৯ সালে আবার তিনি ডাবিং করেছেন এই ছবির তামিল সংস্করণে। তবে এ বার খলনায়ক, স্কার-এর ভূমিকায়।
১৬১৬
নায়কের ভূমিকা থেকে বিদায় নিলেও অরবিন্দ স্বামীর কোনও আক্ষেপ নেই। তারকাখচিত বৃত্তের বাইরে থেকেই জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করতে চান, জানিয়েছেন তিনি। (ছবি : সোশ্য়াল মিডিয়া)