ব্যাঙ্কিং নেই, সমস্যায় ধারাবাহিক। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ
পরিচালকদের সঙ্গে ফেডারেশনের সমস্যায় সোমবার থেকে টলিপাড়ার সমস্ত শুটিং অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রয়েছে। এই ধরনের ঘটনায় সিনেমা ও ওয়েব সিরিজ়ের কাজ নিয়ন্ত্রণ করা গেলেও, সমস্যায় ধারাবাহিক। কারণ এপিসোড ব্যাঙ্কিং ও সম্প্রচারের চাপ। সপ্তাহের প্রথম দিন অনভিপ্রেত ‘ছুটি’-কে কী ভাবে দেখছেন অভিনেতারা? ধারাবাহিকগুলোর ব্যঙ্কিংয়ের কী অবস্থা? খোঁজ নিল আনন্দবাজার অনলাইন।
সোমবার শরীর খারাপ বলে বাড়িতেই রয়েছেন ‘রোশনাই’ ধারাবাহিকের শন বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু শুটিং বন্ধ রাখাকে তিনি কোনওভাবেই ইতিবাচক দিক থেকে দেখছেন নারাজ। আনন্দবাজার অনলাইনকে বললেন, ‘‘শুধু অভিনেতাদের কথা ভাবলে চলবে না। আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে তো আরও অনেক বিভাগ রয়েছে। যত দ্রুত শুটিং শুরু হবে, সেটা আমাদের প্রত্যেকের জন্যই মঙ্গল।’’
রবিবার থেকে সোমবার ভোর পর্যন্ত টানা শুটিং করেছেন অভিনেত্রী শ্বেতা ভট্টাচার্য। ‘কোন গোপনে মন ভেসেছে’ ধারাবাহিকের ফ্লোর থেকে সোমবার বাড়ি ফিরে আনন্দবাজার অনলাইনকে অভিনেত্রী বললেন, ‘‘এক দিনের ছুটি হলে বিষয়টা অন্য রকম হতো। কিন্তু যখনই ভাবছি এটা অনির্দিষ্ট কালের জন্য, তখনই আরও ভয় লাগছে।’’
ধারাবাহিকে রূপটান, প্রপস্, ইলেকট্রিক-সহ একাধিক বিভাগ রয়েছে। সেখানে দৈনিক চুক্তিতেও বহু অভিনেতা কাজ করেন। শ্বেতা বললেন, ‘‘কালই ফ্লোরে কিছু শিল্পীদের দেখেছি, খুব চিন্তায়। তাঁরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছিলেন যে মঙ্গলবার থেকে সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।’’
রবিবার ছুটি ছিল। কিন্তু শুটিং বন্ধের খবর পেতেই তড়িঘড়ি ‘কথা’ ধারাবাহিকের শুটিং সেরেছেন নির্মাতারা। ধারাবাহিকের অভিনেতা সাহেব ভট্টাচার্য আনন্দবাদার অলাইনকে বললেন, ‘‘কয়েক বছর আগেও একই রকম সমস্যায় শুটিং বন্ধ ছিল। আমার মনে হয়, দু’পক্ষের দ্রুত আলাপ আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়া উচিত।’’ সাহেবের মতে, ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ কমে গিয়েছে। সেখানে কাজের সংখ্যা আরও বাড়ানো উচিত। সাহেবের কথায়, ‘‘কাজের জন্যই তো আইন। আইনের জন্য তো কাজ নয়। এমনই নিময় তৈরি হল যে কাজ বন্ধ হয়ে গেল সেটা কাম্য নয়।’’ সাহেবের মতে, টলিপাড়ায় খুব কম বাজেটে ভাল কাজ করেন টেকনিশিয়ানরা। তাঁদের আরও ভাল ভাবে প্রশিক্ষণ দিয়ে ভাল কাজ করানোর দায়িত্ব ফেডারেশনেরই।
তাঁর অভিনীত ধারাবাহিকের খুব বেশি পর্ব তৈরি নেই বলে বেশ চিন্তায় সাহেব। তাঁকে ভাবাচ্ছে পুনসম্প্রচারের দুশ্চিন্তা। বললেন, ‘‘আমাদের খুব বেশি ব্যাঙ্কিং নেই। এই ভাবে চলতে থাকলে তো দর্শক আর নতুন পর্ব পাবেন না। প্রযোজকদেরও চ্যানেলকে জরিমানা দিতে হবে।’’ পাশাপাশি বাংলা ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে যেন দেশের অন্য ইন্ডাস্ট্রির দৃঙ্গিভঙ্গি বদলে না যায়, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলেই মনে করছেন সাহেব। বললেন, ‘‘মুম্বইয়ের কোনও টিম বাংলায় এসে যেন পরিস্থিতি দেখে অন্য কোথাও সেই কাজ ফিরে না যায়, সেটাও আমাদের দেখতে হবে।’’
বাকিদের মতোই সোমবার ভোর পর্যন্ত শুটিং করেছেন রিজ়ওয়ান রব্বানি শেখ। ‘বঁধূয়া’ ধারাবাহিকের গল্পে সম্প্রতি নতুন বাঁক এসেছে। ফলে খুব বেশি এপিসোড তৈরি নেই। রিজ়ওয়ান বললেন, ‘‘শিল্পী হিসেবে আমি চাই যত দ্রুত সম্ভব শুটিং শুরু হোক। কারণ শুটিং বন্ধ হলে প্রত্যেকের নিরাপত্তাহীনতা বাড়বেই।’’ তবে রিজ়ওয়ানের মতে, শিল্পীরা ছাড়াও প্রযোজকদের বিনিয়োগও আটকে রয়েছে। ফলে বেশি দিন শুটিং বন্ধ থাকলে চ্যানেলের তরফেও চাপ আসবে।
সুতরাং, এখন সবটাই নির্ভর করবে পরিচালকদের সিদ্ধান্ত এবং ফেডারেশনের উপর। ধারাবাহিকের শুটিং আবার কবে থেকে শুরু হবে এখন তা জানার অপেক্ষা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy