অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তী ফেসবুক
চলচিত্র থেকে শুরু করে মেগা— নির্বাচনের আগে অভিনেতাদের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে যোগ দেওয়ার হিড়িক চারদিকে। মিশে যাচ্ছে রাজনীতি ও টলিউড। এই প্রবণতা নিয়ে কী ভাবছেন টলিউডের উচ্চ প্রশংসিত অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তী? জানালেন আনন্দবাজার ডিজিটালকে।
বিধানসভা নির্বাচনের আগে টলি-পাড়া থেকে দলে দলে মানুষ যোগ দিচ্ছেন দলীয় রাজনীতিতে, কী বক্তব্য আপনার?
ঋত্বিক: অভিনেতা-অভিনেত্রীরা দলে দলে দলীয় রাজনীতিতে যোগ দিচ্ছেন। রাজনৈতিক দলের নেতাদের মনে তা নিয়ে বড়ই আনন্দ। বেশ বড় লাভের মুখ দেখতে চলেছেন তাঁরা। নির্বাচনের আগে পরিচিত মুখেরা দলে আসা মানে জয় পাকা! কিন্তু এখানেই ভুল করে বসছেন তাঁরা। ইতিহাস বলছে, কিছু দিন পর থেকে সেই পরিচিত মুখদের আর রাজনীতির প্রতি দায়বদ্ধতা থাকে না।
আর এই দল-বদল?
ঋত্বিক: নির্বাচনের আগে দল বদলের হিড়িক তো লেগেই থাকে। রাজনৈতিক দলের মানুষও যেমন লম্ফঝম্প করছেন, তেমনই টলি-পাড়ার মানুষও এ-দিক ও-দিক করছেন। এটা তো সমাজের ছোঁয়া। অভিনেতা-অভিনেত্রীরা তো আর সমাজের বাইরের নয়।
সায়নী ঘোয ও দেবলীনা দত্তকে যে ভাবে গণধর্ষণের হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে, তা কি ভয়ানক কিছুর আগাম সংকেত?
ঋত্বিক: সায়নী ও দেবলীনা-কে যারা ধর্ষণের হুমকি দিচ্ছে, তারা আসলে খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ মানুষই নয়। কিন্তু এই প্রবণতাটা বাড়ছে। এটা যে সাংঘাতিক কোনও কিছুর সংকেত, সেটা নিয়ে সন্দেহ নেই। যারা এ সব মন্তব্য করছে, তাদের আসল উদ্দেশ্যটা কী, সেটা আমাদের বোঝা উচিত। আর কে কী খাবে, কে কী পরবে, সেটা সেই মানুষের ইচ্ছে। আর এটা আমাদের সংবিধানেই লেখা রয়েছে। সে কথাও ওই মানুষগুলো ভাল করেই জানে। তাও যেখানে-সেখানে হাজির হয়ে হুমকিটা দিয়ে নেয়। তবে সে ক্ষেত্রে আমাদের প্রশাসনকে দায়িত্ব নিতে হবে। এই ধরনের মানুষের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা উচিত।
কিন্তু এই ধরনের মন্তব্য তো মানুষের ভাবাবেগে আঘাত করছে…
ঋত্বিক: এই ভাবাবেগ! উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে কেউ কারও ভাবাবেগে আঘাত করতে চায় না। ‘চলো, একটু মানুষের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত দেওয়া যাক!’ এ রকমটা আমরা কেউই চাই না। আমার ধারণা, যাঁরা এই ভাবাবেগ ভাবাবেগ করেন, তাঁরা বোধহয় আগ বাড়িয়ে আঘাতটা পেতে ভালবাসেন।
মেট্রো চ্যানেলে মহিলাদের উপর আক্রমণ নেমে আসার বিরুদ্ধে যে প্রতিবাদ সভা হয়েছিল, আপনি তাতে উপস্থিত ছিলেন না কেন?
ঋত্বিক: আমি কোনও কারণে ওই সভাটার খবর পাইনি। পেলে অবশ্যই যেতাম। প্রতিবাদ মঞ্চের উদ্দেশ্যর সঙ্গে সম্পূর্ণ সহমত আমি।
কখনও দলীয় রাজনীতিতে যোগ দেওয়া ইচ্ছে রয়েছে?
ঋত্বিক: দলীয় রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার কোনও ইচ্ছে নেই আমার। আমার নিজস্ব রাজনীতি নিয়ে আমি থাকতে চাই। যথেষ্ট সচেতন মানুষ বলেই মনে করি আমি নিজেকে। আমার আয়করের টাকা কোথায় যাচ্ছে, সে দিকে নজর রাখছি। আশেপাশে কী ঘটছে, সব নিয়ে সতর্ক আমি। আমার জীবনে, যাপনে, চারণে, কথাবার্তায় আমার রাজনীতি প্রকাশ পায় বলেই আমি বিশ্বাস করি।
রুদ্রনীল ঘোষ তো বিজেপিতে যোগ দিলেন, তাঁর রাজনৈতিক মতামত নিয়ে কী ধারণা?
ঋত্বিক: রুদ্রর কোনও মন্তব্যে বা কার্যকলাপের উপর টিপ্পনি কাটার প্রয়োজন বোধ করছি না। কারণ, এই মুহূর্তে রুদ্রকে খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছি না আমি। এ ছাড়া রুদ্রর সঙ্গে আমি কাজ করেছি। দেখা হলে আড্ডা হয়। ব্যস অতটুকুই। কিন্তু দেবলীনার সঙ্গে ওর অনেক দিনের বন্ধুত্ব। সেখান থেকে রুদ্র ওঁর পাশে দাঁড়ালেন না! তাই এটা বুঝতে পারছি যে, ওঁর খানিক অসুবিধা হবে বন্ধুত্বটা বজায় রাখতে। কিন্তু আমার সঙ্গে অত ঘনিষ্ঠতা কোনও দিনই ছিল না রুদ্রর। আর এখনকার পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে সেটা আর কোনও দিন সম্ভব নয়। কারণ, এখন ও সম্পূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হয়ে উঠেছে। আমার রাজনৈতিক মত হোক বা ব্যক্তিগত মত, তার সঙ্গে সব কথা ভাগ করে নেওয়ার প্রয়োজন নেই আর আমার। সংবিধান আমাকে ভোট দেওয়ার অধিকার দিয়েছে, আমি সেখানেই নিজের রাজনৈতিক মতামত প্রকাশ করব। রুদ্রনীলকে নিয়ে এই মুহূর্তে যে মাতামাতিটা হচ্ছে সেটা নিয়ে আমার আপত্তি রয়েছে। আমি ওঁকে সাংঘাতিক রাজনৈতিক ব্যক্তি বলেই মনে করছি না।
টলি-পাড়ার একাধিক তারকা বিভিন্ন দলে যোগ দেওয়ার সময়ে বলছেন যে তাঁরা মানুষের জন্য কাজ করতে চান বলে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন…
ঋত্বিক: মানুষের জন্য কাজ করতে বড্ড আকুলিবিকুলি করছে সবাই! ব্যাপারটা শুনতে খুব ভাল লাগছে। কিন্তু সেটা যদি সত্যি হত, তা হলে আমাদের দেশটা অনেক দিন আগেই বদলে যেত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy