টলিউডের ফিটনেস ফ্রিক ঋতাভরী চক্রবর্তী যে ফুল্লরা হয়ে ওঠার জন্য অবলীলায় ২৫ কেজি ওজন বাড়িয়ে ফেলেছিলেন। ছবি: সংগৃহীত।
তিনি একগুচ্ছ ফ্লপ ছবি করার চেয়ে হাতেগোনা মনে রাখার মতো ছবি করায় বিশ্বাসী। ২০২০ সালে ‘ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মটি’ মুক্তি পেয়েছিল। মাঝে তাঁর ‘এফআইআর’ ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল । তার পরই ১২ মে মুক্তি পায় ‘ফাটাফাটি’। অন্য কোনও টলিউড অভিনেতা বা অভিনেত্রী তিন বছরে এত কম সংখ্যায় ছবি করলে হয়তো চিন্তায় পড়ে যেতেন। কিন্তু সে দলে পড়েন না ঋতাভরী চক্রবর্তী। ছবি বাছার সময় মন দিয়ে চিত্রনাট্য পড়েন। শুটিং করার সময় মনপ্রাণ দিয়ে পরিশ্রম করে নিজের চরিত্রটা গড়ে তোলেন। এবং ছবি মুক্তির আগেও প্রচারেও একটুও ফাঁকি দেন না। হয়তো তাই, তিন সপ্তাহ পর যখন বেশির ভাগ বাংলা ছবি হল থেকে চলে যায়, তখন ‘ফাটাফাটি’ শহরের গণ্ডি পেরিয়ে বাকি দেশে পাড়ি দেয়। ২৬ মে মুম্বই, দিল্লি, বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ এবং পুণের প্রেক্ষাগৃহেও দেখানো হচ্ছে ‘ফাটাফাটি’।
২০২৩ সালের পঞ্চম মাস প্রায় শেষের দিকে। মুক্তি পেয়েছে বহু বাংলা ছবি। তবে চলেছে হাতেগোনা কিছু ছবিই। তার মধ্যে রয়েছে অভিজিৎ সেনের ‘প্রজাপতি’ যা সম্প্রতি ১৫০ দিন অতিক্রম করল। জয়দীপ মুখোপাধ্যায়ের ‘একেন: রুদ্ধশ্বাস রাজস্থান’-ও সর্বভারতীয় স্তরে মুক্তি পেয়েছিল। এবং তার পর বক্স অফিসে ভাল ব্যবসা করছে অরিত্র মুখোপাধ্যায়ের ‘ফাটাফাটি’। মূলত নারীকেন্দ্রিক চিত্রনাট্য হলেও দর্শকের মনে ধরেছে ফুল্লরার গল্প। টলিউডের ফিটনেস ফ্রিক ঋতাভরী চক্রবর্তী যে ফুল্লরা হয়ে ওঠার জন্য অবলীলায় ২৫ কেজি ওজন বাড়িয়ে ফেলেছিলেন। কারণ, তাঁর বিশ্বাস ছিল ছবির চিত্রনাট্যে। বরাবরই একটু অন্য রকম গল্প দর্শককে বলতে পছন্দ করেন অভিনেত্রী। তাঁর আগের ছবি ‘ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মটি’ও দর্শকের পছন্দ হয়েছিল। ‘ফাটাফাটি’ মুক্তি পাওয়ার পর থেকে যত গুলি হাউজফুল শো পেয়েছে, তাতেই বোঝা যায়, দর্শকের এ বারও ঋতাভরীর ছবি বাছাই ভাল লেগেছে। এ প্রসঙ্গে ছবির অন্যতম প্রযোজক শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘বাংলা ছবিতে যে নায়িকারাও বক্স অফিস টানতে পারে, তার প্রমাণ ‘ব্রহ্মা’ বা ‘ফাটাফাটি’র মতো ছবি। দীর্ঘ সময় ধরে আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে এমন ছবি হয়েছে যেখানে নারী চরিত্রদের সে ভাবে কোনও কাজ ছিল না। এখন আবার নারীকেন্দ্রিক ছবি তৈরি হচ্ছে। তাই নায়িকারাও নিজেদের প্রমাণ করার সুযোগ পাচ্ছে।’’
ছবির নায়িকা ঋতাভরী এ প্রসঙ্গে কি বললেন? তিনি অবশ্যই ছবির সাফল্যে খুব খুশি। প্রতিটা ছবির পেছনেই তিনি প্রচুর পরিশ্রম করেন। একসঙ্গে একাধিক কাজও করেন না। তাই সেই গল্পগুলো দর্শকের কাছে ঠিকমতো পৌঁছে দিতে পারলেই তিনি খুশি। এর পর কি পরিকল্পনা তাঁর? তিনি কি এর পরও একটু অন্য রকম গল্পই বেছে নেবেন? আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বললেন, ‘‘শুধুই যে নারীকেন্দ্রিক ছবিতে আমায় দেখা যাবে তেমন নয়। আমি সব রকম গল্পেই কাজ করতে চাই। তবে চিত্রনাট্য ভাল হতে হবে। ‘ফাটাফাটি’র চিত্রনাট্য পড়ে আমার মনে হয়েছিল, বডি শেমিং নিয়ে একটা ডায়ালগ শুরু হওয়া প্রয়োজন। তেমনই আমার মনে হয় মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে গল্প বলা প্রয়োজন। অনেকেই বুঝতে পারেন না, সকলের মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা এক রকম হয় না। যেমন সব গাছের ভিতভূমি এক রকম হয় না। তাই সব ঝড়ঝাপটা প্রত্যেকেই নিজের ক্ষমতা মতো সামলায়। এই নিয়ে কেউ কোনও ছবির প্রস্তাব দিলে অবশ্যই ভেবে দেখব।’’
আর মনের মতো গল্পের প্রস্তাব যদি সব সময় না আসে? নিজে কি পরিচালনা করার কথা কখনও ভাবেন ঋতাভরী? অভিনেত্রী একগাল হেসে বললেন, ‘‘আমার আসলে এত কিছু বলার আছে, অবশ্যই আমি ক্যামেরার পিছনে থেকে কাজ করতে চাইব। আমি চাই আবার ফিল্ম স্কুলে গিয়ে পরিচালনা নিয়ে পড়াশোনা করতে। আমি বেশ কিছু চিত্রনাট্য লেখারও চেষ্টা করছি সব সময়। তার মধ্যে একটা মায়ের (শতরূপা সান্যাল) খুব পছন্দ হয়েছে। সেটা নিয়ে মা ছবি বানাতে পারেন। সেটা হলে কাজটা অবশ্যই আমার জন্য খুব স্পেশ্যাল হবে।’’
‘ফাটাফাটি’ ছবিতে ঋতাভরী ছাড়াও অভিনয় করেছেন আবীর চট্টোপাধ্যায়, স্বস্তিকা দত্ত, সোমা চক্রবর্তী, সংঘশ্রী সিনহা, দেবশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়, অরিজিতা মুখোপাধ্যায়ের মতো অভিনেতা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy