মেয়ের সম্পর্ক নিয়ে সামান্য হলেও আপত্তি ছিল নীতুর মা রাজী সিংহের। কারণ নীতু ছিলেন সংসারের একমাত্র উপার্জকারী। ঋষির সঙ্গে নীতু কোথাও ডেটে গেলে, রাজি তাঁদের সঙ্গে পাঠিয়ে দিতেন নীতুর তুতো ভাইকে।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৯ ১০:২১
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
বান্ধবীদের সঙ্গে ব্রেক আপ-এর দুঃখ থেকে মারণরোগের বিরুদ্ধে লড়াই। জীবনের প্রতি পর্বে তাঁর পাশে থেকেছেন এক শিখ নারী। কৈশোর থেকে প্রৌঢ়ত্ব, ঋষি কপূরের ভরসার জায়গা তাঁর স্ত্রী, নীতু।
০২১৯
নীতু সিংহ ছোটবেলা থেকে অভিনয় করছেন। সংসারের দায়ে মাত্র পাঁচ বছর বয়সেই তাঁকে লাইট-সাউন্ড-ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতে হয়েছে। অন্য বাচ্চাদের মতো পড়াশোনা-খেলাধুলোর সূচির বদলে তাঁকে চলতে হয়েছে কঠোর শুটিং-শিফ্টের মধ্যে দিয়ে।
০৩১৯
তারুণ্যে পা দিতে না দিতেই নীতু বড় পর্দার নায়িকা। ঋষি কপূরের সঙ্গে তাঁর প্রথম দেখা ‘জহরিলা ইনসান’-এর সেটে। প্রথম দর্শনে প্রেমের কোনও ইঙ্গিতই ছিল না। বরং, ঋষি খুব উত্যক্ত করতেন নীতুকে।
০৪১৯
কিন্তু সিনেমায় যেমন হয়, বাস্তবেও তেমন হল। বিরক্ত করা ছেলেটিরই প্রেমে পড়লেন নীতু। এ দিকে ‘ববি’-র তারকা ঋষির তখন অনেক বান্ধবী। তাঁদের সঙ্গে প্রেম ভেঙে যাওয়ার দুঃখ তিনি শেয়ার করতেন নীতুর সঙ্গে।
০৫১৯
১৯৭৬ সালে কাশ্মীরে ঋষি-নীতু শুটিং করলেন ‘কভি কভি’ ছবির। তারপরই ‘বারুদ’ ছবির শুটিংয়ে ঋষি উড়ে গেলেন প্যারিস। সেখানে গিয়ে তাঁর সবসময় নীতুর কথা মনে হতে লাগল।
০৬১৯
শেষে আর না পেরে তিনি টেলিগ্রাম করে বসলেন নীতুকে। লিখলেন, ‘ইয়ে শিখনি বড়ি ইয়াদ আতি হ্যায়!’ তার পেয়ে নীতু তো আনন্দে আত্মহারা। এতদিনে মনের কথা প্রকাশ পেল তবে!
০৭১৯
কিন্তু মনের কথা সামনে এসেই বা কী হবে! তিনি নাকি শুধুই ডেট করবেন। নীতুকে জানালেন ঋষি। কমিটমেন্ট-আতঙ্কে বিয়ের ধারেকাছেই গেলেন না তিনি।
০৮১৯
এ কথা জানার পরেও নীতু তাঁকে ছেড়ে যাননি। তিনি এতটাই ভালবাসতেন ঋষিকে। টানা চার বছর চলল প্রেমপর্ব।
০৯১৯
শেষে কপূর পরিবারের তরফেই বাগদানের অনুষ্ঠান আয়োজিত হল। ১৯৭৯ সালে দিল্লিতে এক আত্মীয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে হঠাৎই আংটি বদল হল ঋষি-নীতুর।
১০১৯
কিন্তু এনগেজমেন্ট যে হবে, তার বিন্দুবিসর্গ জানতেন না ঋষি-নীতু। তাই তাঁদের কাছে দেওয়ার মতো আংটিও ছিল না। অন্যের কাছ থেকে আংটি নিয়ে ঋষি পরিয়ে দিয়েছিলেন নীতুর অনামিকায়।
১১১৯
মেয়ের সম্পর্ক নিয়ে সামান্য হলেও আপত্তি ছিল নীতুর মা রাজী সিংহের। কারণ নীতু ছিলেন সংসারের একমাত্র উপার্জকারী। ঋষির সঙ্গে নীতু কোথাও ডেটে গেলে, রাজি তাঁদের সঙ্গে পাঠিয়ে দিতেন নীতুর তুতো ভাইকে।
১২১৯
বিয়ের সিদ্ধান্তে নীতুর মনেও খচখচানি ছিল। তিনি শ্বশুরবাড়ি চলে গেলে মাকে কে দেখবে? প্রেয়সীর সমস্যার সমাধান করেন ঋষিই। তিনি রাজীকে প্রস্তাব দেন বিয়ের পরে তাঁদের সঙ্গে থাকার।
১৩১৯
১৯৮০ সালে সাতপাকে বাঁধা পড়েন ঋষি-নীতু। তখন ঋষির বয়স ২৮ বছর। নীতু ২২ বছরের। বিয়ের পরে অভিনয় করবেন না, আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন নীতু।
১৪১৯
কপূর পরিবারের বধূরা অভিনয় করেন না, এই রীতি অনেকদিন ধরেই প্রচলিত ছিল। কিন্তু নীতু জানিয়েছিলেন, অভিনয় ছাড়ার সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ তাঁর নিজের।
১৫১৯
তিনি জানিয়েছিলেন, পাঁচ বছর বয়স থেকে অভিনয় করছেন। ৭০টির বেশি ছবিতে কাজ করা হয়ে গিয়েছিল। বিয়ের পর তাই মন দিয়ে সংসার করতে চেয়েছিলেন।
১৬১৯
১৯৮০ সালে জন্ম ঋষি-নীতুর মেয়ে ঋদ্ধিমার। দু’বছর পরে জন্ম ছেলে রণবীরের। তবে প্রেমের মতো তাঁদের দাম্পত্য রূপকথার ছিল না।
১৭১৯
নব্বইয়ের দশকের শেষে শোনা গিয়েছিল, সুরাসক্ত ঋষির নির্যাতনে ঘর ছেড়েছেন নীতু। পরে অবশ্য সব রটনা চাপা পড়ে যায়। কপূর পরিবারে নীতুর সংসার এখনও অটুট।
১৮১৯
ঋষি নিজেই স্বীকার করেছেন, তাঁদের সফল ও দীর্ঘ দাম্পত্যের রহস্য নীতুর অ্যাডজাস্টমেন্ট। কারণ তাঁর মতো জীবনসঙ্গীর সঙ্গে ঘর করা কঠিন, নিজেই জানিয়েছেন ঋষি।
১৯১৯
প্রায় তিন দশক পরে নীতু আবার অভিনয় করেন ঋষির সঙ্গে। ‘লভ আজ কাল’, ‘দো দুনি চার’, ‘বেশরম’-এর মতো ছবিতে এই চিরসবুজ জুটি ফিরিয়ে আনেন নস্টালজিয়া। (ছবি:ফেসবুক)