ডিসি কমিকসের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং প্রগাঢ় চরিত্র ব্যাটম্যান। সুপারম্যানের কথা মাথায় রেখেও এটা বলা যায়। নইলে ভক্তদের চাপে মুখ্যচরিত্রের মুখ বদল করার মতো ঘটনা ঘটে! টিম বার্টন, ক্রিস্টোফার নোলান বা জ়্যাক স্নাইডারের ব্যাটম্যানের সঙ্গে ম্যাট রিভসের ‘দ্য ব্যাটম্যান’-এর তুলনা অনাবশ্যক। প্রত্যেক পরিচালকই নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী ব্রুস ওয়েনকে গড়েপিটে নিয়েছেন। রিভস সবচেয়ে বড় জুয়া খেলেছিলেন রবার্ট প্যাটিনসনকে ব্যাটম্যানের চরিত্রে নির্বাচন করে। সেই বাজি তিনি জিতে গিয়েছেন। এখানে ব্যাটম্যান সুপারহিরো নয়, অন্ধকার-বিষাদ-সত্যনিষ্ঠতা তার বর্ম।
‘দ্য ব্যাটম্যান’-এর ভিলেন রিডলার (পল ড্যানো)। নামেই লুকিয়ে চরিত্রের স্টাইল। রিডলার একের পর এক ধাঁধা ছুড়ে দেয় ব্যাটম্যানের দিকে। সেই ধাঁধা অনুসরণ করে এক অন্ধকার থেকে আর এক অন্ধকারে পাড়ি দেয় ব্যাটম্যান। গথম সিটির মেয়র ডন মিচেল খুন হয়। অপরাধী তাতেই ক্ষান্ত দেয় না। একটা করে খুন হয়, আর খুনি একটা ধাঁধা ছেড়ে যায় ব্যাটম্যানের উদ্দেশে। রিডলার বোঝানোর চেষ্টা করে, সে গথম সিটিকে অপরাধমুক্ত করতে চায়। শহরটাকে যারা ভিতর থেকে ফোঁপরা করে দিয়েছে, তাদের সে নিকেশ করবে। তা হলে কি ব্যাটম্যান আর রিডলার একই লক্ষ্য নিয়ে দুই মেরুতে দাঁড়িয়ে?
দ্য ব্যাটম্যান
পরিচালক: ম্যাট রিভস
অভিনয়: রবার্ট প্যাটিনসন, জ়োয়ি ক্র্যাভিটজ়, জেফ্রি রাইট,
পল ড্যানো
৬.৫/১০
ব্রুস ওয়েনের ছোটবেলা, তার বাবা-মায়ের মৃত্যুর অংশ এখানেও আছে। তাদের আততায়ীর নাম-রহস্য খোলসা করতেও গিয়েও করেননি পরিচালক। এই ছবিতে ব্যাটম্যানের একাধিক ভিলেন চরিত্রকে নিয়ে আসা হয়েছে। পেঙ্গুইন, ফ্যালকন এবং রিডলার। রিভস মূলত রিডলারের উপরেই ফোকাস করেছেন। তবে ফ্যালকন কী ভাবে গথম সিটিকে নিয়ন্ত্রণ করত, সেই সব অংশও উঠে এসেছে। অ্যান্টাগনিস্টদের মধ্যে জোকার সবচেয়ে বেশি চর্চিত। কিন্তু পেঙ্গুইন এমন এক ভিলেন, যে ব্যাটম্যানকে ঘোল খাইয়ে ছেড়ে দিয়েছিল। এ ছবিতে পেঙ্গুইন উপেক্ষিত। ব্যাটম্যানের সঙ্গে একটা চেজ়িংয়ের দৃশ্য বাদ দিলে নেহাতই মামুলি মাফিয়া হিসেবে দেখানো হয়েছে তাকে। তবে মেকআপের জন্য কলিন ফ্যারেলকে চেনা দায়!
গথমের পুলিশ অফিসার জেমস গর্ডন (জেফ্রি রাইট), ব্রুসের পিতৃস্থানীয় অ্যালফ্রেড পেনিওয়ার্থের (অ্যান্ডি সারকিস) মতো চেনাজানা চরিত্ররা আছে স্বমহিমায়। জন তুরতুরো তাঁর অ্যাটিটিউড দিয়ে ফ্যালকনকে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলেছেন। অনেক দিন পরে ক্যাটউওম্যানের (জ়োয়ি ক্র্যাভিটস) দর্শন মিলল পর্দায়। জ়োয়ি সেই চরিত্রে সফল। ব্রুস-সেলিনার ছোট ছোট মুহূর্তগুলো ছাপ ফেলে যায়। বিশেষ করে শেষ অংশটা, অনেকটা রাস্তা একসঙ্গে আসার পরে, দু’জনের পথ যখন আলাদা হয়ে যাচ্ছে। কাহিনির সঙ্গে সাযুজ্য রেখে সুন্দর সমাপতন।
ছবিতে একাধিক ভিলেন চরিত্র থাকায় গল্প জমে উঠছে। গথম সিটিতে চলতে থাকা অপরাধ, আসন্ন নির্বাচন এবং ব্যাটম্যানের চরিত্রায়ন... ছবির নির্মাণ পোক্ত করেছে। রিভসের এই ছবি নোয়া ঘরানার আদর্শ উদাহরণ। মাইকেল কিটন, ক্রিশ্চিয়ান বেল, বেন অ্যাফ্লেক নিঃসন্দেহে প্যাটিনসনের চেয়ে দড় অভিনেতা। কিন্তু চরিত্রের লুক ও মেজাজের সঙ্গে প্যাটিনসন ভীষণ ভাবে মানানসই হয়ে উঠেছেন। ছোটবেলায় বাবা-মাকে হারানো, সেই অন্ধকার বয়ে বেড়ানো... বিষাদগ্রস্ত ব্রুসের সঙ্গে দর্শক কানেক্ট করতে পারেন। রিডলার গোটা ছবি জুড়ে থাকলেও একেবারে শেষের দিকে গিয়ে পল ড্যানোকে চাক্ষুষ করেছেন দর্শক। তাতেই স্কোর করেছেন তিনি। জোকার বা রিডলারের মতো চরিত্ররা সমাজের সর্বহারাদের প্রতিনিধিত্ব করে। যাদের হারানোর কিছু নেই, সর্বনাশের খেলায় তারা ডরায় না। সেই কারণে ডিসি-র ভিলেন চরিত্ররা দর্শকের এত প্রিয়।
ছবির শেষে আগামীর ইঙ্গিত রয়েছে। আরখাম হাসপাতালে রিডলারের পাশের সেলের বাসিন্দা তাকে বলে ‘ওয়ান ডে ইউ আর অন টপ। দ্য নেক্সট, ইউ আর আ ক্লাউন।’ বাকিটা বুঝে নিতে দর্শকের অসুবিধে হয় না!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy