Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
kangana ranaut

Thalaivii: আম্মাকে ধরাছোঁয়ার দুর্বল চেষ্টামাত্র

জে জয়ললিতার (কঙ্গনা রানাউত) চলচ্চিত্র জগতে পদার্পণ থেকে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রীর পদে আসীন হওয়া পর্যন্ত সময়কাল ধরা হয়েছে ছবিতে।

সায়নী ঘটক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৬:৪৫
Share: Save:

জীবনীনির্ভর ছবি। তাতে দর্শক খোঁজেন নেপথ্যকাহিনি, ‘বিহাইন্ড দ্য সিনস’। কোনও বর্ণময় ব্যক্তিত্বের অজানা দিকটি জানতে, ভাল-মন্দ সবটা মিলিয়ে তাঁকে ওলটপালট করে পর্দায় দেখতে চান তাঁরা। বহু মানুষের কাছে প্রায় ঈশ্বরের আসনে প্রতিষ্ঠিত কারও জীবনধর্মী ছবি প্রশস্তির বাহুল্যহীন ও সত্যনিষ্ঠ ভাবে তৈরি করা একপ্রকার চ্যালেঞ্জ বইকি। বিশেষ করে, তিনি যদি হন তামাম দক্ষিণ ভারতের ‘আম্মা’। তবে সেই চ্যালেঞ্জের ধারপাশ দিয়ে তো নয়ই, এ এল বিজয় পরিচালিত ‘থালাইভি’ যে পথে হেঁটেছে, তা জয়ললিতার জীবনের আংশিক পথ অতিক্রম করেছে মাত্র।

জে জয়ললিতার (কঙ্গনা রানাউত) চলচ্চিত্র জগতে পদার্পণ থেকে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রীর পদে আসীন হওয়া পর্যন্ত সময়কাল ধরা হয়েছে ছবিতে। দেখানো হয়েছে, পুরুষশাসিত বিনোদন ও রাজনীতির ময়দানে কী ভাবে ‘জয়া’ থেকে সকলের ‘জয়া আম্মা’ হয়ে উঠলেন তিনি। তবে যে মেয়েটি স্কুল ফাইনালে রাজ্যে প্রথম হয়, পাঁচ-ছ’টি ভাষা জানে, একাধিক নৃত্যশৈলীতে তালিমের পাশাপাশি মঞ্চাভিনয়ে নজরকাড়া সাফল্য পায় কাঁচা বয়সেই— তাঁর সিনেমায় আসার ব্যাখ্যাটি সংক্ষেপে সারা হয়েছে। এম জি রামচন্দ্রনের (অরবিন্দ স্বামী) সঙ্গে তাঁর ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে পড়া জীবনেই আলো ফেলা হয়েছে বরং। সেখানে যতটা না ব্যক্তি জয়ললিতা ধরা দেন, তার চেয়ে অনেক বেশি উঠে আসে তাঁর এমজিআর-ময় জীবন। সেই সঙ্গে এআইএডিএমকে দলের ‘চাণক্য’ আর এম বীরাপ্পনের সঙ্গে জয়ার ঠান্ডা লড়াই। এবং এর প্রায় সবটাই দর্শানো হয়েছে আবেগমথিত ভাবে, বিপ্লবের প্রতিমূর্তি কঙ্গনা রানাউতের উচ্চকিত অভিনয়ের হাত ধরে!

চোদ্দো বছরেরও বেশি সময় ব্যাপী যে মুখ্যমন্ত্রিত্ব জয়ললিতাকে প্রতিষ্ঠিত করেছে ভারতীয় রাজনীতিতে, সেটির অভাবে এই ছবি অসম্পূর্ণ ঠেকে। তাঁর সঙ্গে করুণানিধি সরকারের বিরোধিতার টানাপড়েনও শুধু ছুঁয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রত্যাশিত ভাবেই বাদ পড়েছে জয়ললিতা, তাঁর ডানহাত শশীকলা, পালিত পুত্র সুধাকরণের দুর্নীতির অধ্যায়।

ব্যক্তি জয়া কেমন ছিলেন? রাজনীতিক সত্তার বাইরের মানুষটি? ছবিতে তাঁর ব্যক্তিগত, চলচ্চিত্র এবং রাজনৈতিক জীবনের যতটুকু দেখানো হয়েছে, তার সবটাই ইন্টারনেটে উপলব্ধ। এমজিআরের সঙ্গে জুটি বেঁধে করা ছবি (বাদ পড়েছেন তাঁর অন্য নায়করা), দলীয় বিরোধ সত্ত্বেও নিজেকে এমজিআরের উত্তরসূরি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা, চোস্ত ইংরেজিতে বক্তৃতা করে ইন্দিরা গাঁধীর নেকনজরে আসা, বিধানসভায় লাঞ্ছিত হওয়া... তাঁর জীবনের বহুল চর্চিত ঘটনাগুলিই শুধু তুলে ধরা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে তিনি যে প্রশ্নহীন আনুগত্য দাবি করতেন দলীয় কর্মীদের কাছ থেকে, তার আভাসও দেওয়া হয়েছে শেষ দৃশ্যে। কিন্তু ‘সেফ জ়োন’-এর সীমা লঙ্ঘন করা হয়নি কোথাও।

থালাইভি
পরিচালক: এ এল বিজয়
অভিনয়: কঙ্গনা, অরবিন্দ, নাসের, রাজ, ভাগ্যশ্রী
৫/১০

এ ছবি যতটা কঙ্গনার, প্রায় ততটাই অরবিন্দের। এমজিআরকে তিনি প্রাণবন্ত করে তুলেছেন সহজ অভিনয়ে। যদিও এমজিআরের নামটি ছবিতে ‘এমজেআর’ বলা এবং লেখা-ও হয়েছে। অরবিন্দের ‘রোজা’র নায়িকা মধু এমজিআরের স্ত্রী, জানকীর ভূমিকায়। করুণানিধির ভূমিকায় নাসের, বীরাপ্পনের ভূমিকায় রাজ অর্জুন মানানসই। জয়ার মা সন্ধ্যার চরিত্রে ভাল লাগে ভাগ্যশ্রীকেও।

কঙ্গনা তাঁর সাম্প্রতিক কালের প্রতিটি ছবির মতো এখানেও বিদ্রোহে গর্জেছেন ছবি জুড়ে। নারীবাদের প্রতিষ্ঠায় চোনা ফেলেছে অতিনাটকীয়তা। জয়ললিতার শান্ত, বলিষ্ঠ ব্যক্তিত্বের নিরিখে কঙ্গনার অভিনয় কিছুটা উগ্র। তবে নাচের দৃশ্যগুলি তিনি ভালই উতরে দিয়েছেন। মেকআপ ও পোশাকের ডিটেলিং প্রশংসনীয়। জয়ধ্বনির আতিশয্যে আলাদা করে দাগ কাটে না আবহসঙ্গীত। সকলের সংলাপ হিন্দিতে ডাব করাও হয়নি, যা বিসদৃশ ঠেকে।

আম্মার উত্থান ও ক্যারিশমা পর্দায় ছড়িয়ে দিতে পারলেও এ ছবি সামগ্রিক ভাবে ধরতে পারেনি তাঁকে। বরং থালাইভির ম্যাজিক ছুঁয়ে দেখার একটা চেষ্টা হয়ে রয়ে গেল এ ছবি।

অন্য বিষয়গুলি:

kangana ranaut Thalaivii cinema
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy