রিমেকের বাজারে দক্ষিণ কোরিয়ার ছবির আলাদা কদর আছে। বিশেষত ভারতীয় নির্মাতাদের কাছে। যেমন দক্ষিণ কোরিয়ার ছবি ‘আ ডার্টি কার্নিভাল’কে দেশজ ছাঁচে ফেলে বেশ জমাটি তামিল অ্যাকশন-ড্রামা ‘জিগরঠান্ডা’ তৈরি হয়েছিল। সেটিই আবার তেলুগু, কন্নড় ভাষায় পরিবেশিত হয়েছে। বাকি রয়ে গিয়েছিল হিন্দি রিমেক। ‘বচ্চন পাণ্ডে’তে সে খামতিও পূরণ করে ফেললেন ফারহাদ সামজি। ছবির প্রধান চরিত্রে নিলেন অক্ষয়কুমার নামক হিটমেশিনকে। এখন রিমেকের তস্য রিমেকের প্রয়োজনীয়তা কতটা ছিল তা নির্মাতারাই জানেন। তবে ছবি ঘিরে দর্শকের আগ্রহ নিয়ে সন্দেহ আছে!
আগের ছবিগুলির চেয়ে ‘বচ্চন পাণ্ডে’ খানিক আলাদা। অন্য ছবিগুলোয় দু’টি প্রধান চরিত্রই পুরুষ ছিল। এখানে একটি পুরুষ চরিত্র বদলে নারী করা হয়েছে। সেই চরিত্রে কৃতী শ্যানন। কারণ অক্ষয়কে যে লার্জার দ্যান লাইফ ছাঁচে পরিচালক ঢেলেছেন, সেখানে দ্বিতীয় পুরুষ অভিনেতা নেহাতই কোণঠাসা হয়ে যেতেন। তার চেয়ে মহিলা চরিত্র হলে বরং গল্পের খানিক স্বাদ বদলাবে।
মায়রা (কৃতী) পরিচালক হতে চায়। প্রযোজক তাকে কোনও গ্যাংস্টারের উপরে ছবি বানাতে বলে। বচ্চন পাণ্ডের (অক্ষয়) খোঁজ পায় মায়রা। উত্তরপ্রদেশের এক কাল্পনিক জায়গা বাগওয়ার ডন বচ্চন। পুলিশ পেটানো, সাংবাদিককে পুড়িয়ে দেওয়া, বিরোধী গ্যাংস্টারকে নিকেশ করা... এ সবই তার কারবার। বচ্চনের ডন হয়ে ওঠার গল্প জানতে হাজির হয় মায়রা। সঙ্গী হয় তার বন্ধু বিশু (আরশাদ ওয়ারসি)। আড়াই ঘণ্টার ছবিতে বন্ধুত্ব, প্রেম, বিশ্বাসঘাতকতা সব মিলিয়েছেন পরিচালক। কমেডি, অ্যাকশন, গান... বিনোদনের যাবতীয় চাহিদা পূরণ করেছেন পরিচালক। তা সত্ত্বেও ছবিতে এমন একটা দৃশ্য নেই, যার রেশ রয়ে যাবে দর্শকের মনে।
বচ্চন পাণ্ডে
পরিচালক: ফারহাদ সামজি
অভিনয়: অক্ষয়, কৃতী, আরশাদ, জ্যাকলিন,পঙ্কজ, সঞ্জয়
৫/১০
কেন এই ছবির জন্য নির্মাতারা অক্ষয়কে বাছলেন, সেটা বচ্চন পাণ্ডের চরিত্রের নির্মাণ বুঝিয়ে দেয়। একটা জান্তব অবয়ব দেওয়া হয়েছে চরিত্রটাকে। সেটা সামলাতে পারা সোজা নয়। কিন্তু অক্ষয় এমন একজন অভিনেতা, যিনি যে কোনও চরিত্রের খোলসে অনায়াসে ঢুকে পড়তে পারেন। উল্টো দিকে কৃতীও নিজের জায়গায় সাবলীল অভিনয় করে গিয়েছেন। বচ্চনের প্রেমিকা সোফির চরিত্রে রয়েছেন জ্যাকলিন ফার্নান্ডেজ়। ছবির প্রচারে জ্যাকলিন যতটা সময় দিয়েছেন, স্ক্রিনে তার সিকিভাগও নেই তিনি। সেটা একদিকে মন্দ হয়নি।
এই ছবিতে একঝাঁক জোরালো অভিনেতাকে নেওয়া হয়েছে এবং তাঁদের স্রেফ বসিয়ে রাখা হয়েছে। সঞ্জয় মিশ্র, পঙ্কজ ত্রিপাঠী, মোহন আগাসে, সীমা বিশ্বাসের মতো অভিনেতাদের কিছুই করার ছিল না ছবিতে। আরশাদ ওয়ারসি সেই গতানুগতিক সাইডকিকের চরিত্রে!
ছবির সবচেয়ে বড় দুর্বলতা এর কাহিনি, যেখানে নতুন কিছু নেই। নির্মাতারা কি ভুলে গিয়েছেন এটা ২০২২ সাল? ওটিটিতে বুঁদ প্রজন্মকে তুষ্ট করা এখন সহজ নয়। হিন্দি বলয়ের দর্শকও সাবটাইটেলে দক্ষিণী ছবি দেখে নেন। সেখানে দাঁড়িয়ে গল্পে খানিক মোচড় এনে, খানিক রং চড়িয়ে বক্স অফিস জেতার ফাটকা সব সময়ে কাজে না-ও আসতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy