আর্মি অব দ্য ডেড
পরিচালক: জ়্যাক স্নাইডার
অভিনয়: ডেভ, এলা, ওমারি, আনা, হুমা
৬.৫/১০
প্রথম ফিচার হিসেবে জ়ম্বি ছবি বেছে নিয়েছিলেন পরিচালক জ়্যাক স্নাইডার। ‘ডন অব দ্য ডেড’-এর (২০০৪) সতেরো বছর পরে আবারও দর্শকের জন্য জ়্যাকের উপহার জ়ম্বি-ফেস্ট। তবে নেটফ্লিক্স ছবি ‘আর্মি অব দ্য ডেড’ শুধুই জ়ম্বি ছবি নয়। হাইস্ট-থ্রিলার, পোস্ট-অ্যাপোক্যালিপ্টিক জ়ঁরও মিশে রয়েছে এই ছবিতে। যদিও নজর কেড়েছে জ়ম্বি-জাঁকজমক। প্রায় আড়াই ঘণ্টার এই ছবিতে আবহ তৈরি করতে সময় নেওয়া হয়েছে। কিন্তু জ়ম্বি-মানুষের প্রাণপণ লড়াই শেষ অবধি দর্শকের আগ্রহ ধরে রাখবে। অ্যাকশন, রক্তপাত, মুণ্ডচ্ছেদ এবং দ্য ক্র্যানবেরিজ়ের চেনা ‘জ়ম্বি’ কভার স্নাইডার-সুলভ স্টাইলে বুঝিয়ে দিয়েছে, সময়ের কাঁটা এগোলেও এই ঘরানার ছবির আবেদন ম্লান হয় না।
জ়ম্বি অধ্যুষিত লাস ভেগাস শহর। ‘সিন সিটির’ ক্যাসিনো, পাব-এ ঘুরে বেড়ায় নরখাদকরা। এমন শহরকে জ়ম্বিমুক্ত করতে প্রশাসনও ব্যর্থ। চুক্তি হয়, নিউক্লিয়ার বিস্ফোরণে শহরটি ধ্বংস করা হবে। কিন্তু তার আগে এক জাপানি ব্যবসায়ী ওই শহরের এক ক্যাসিনো ভল্টে রাখা ২০০ মিলিয়ন ডলার উদ্ধারের দায়িত্ব দেয় মার্সিনারি স্কট ওয়ার্ডকে (ডেভ বাতিস্তা)। সে তৈরি করে তার বাহিনী। উজ্জ্বল ভবিষ্যতের প্রলোভনে মরণফাঁদে শামিল হয় সেনা ভ্যানডিরো (ওমারি হার্ডউইক) স্কটের বান্ধবী ও মেকানিক মারিয়া (আনা ডে লা রেগেরা), পাইলট পিটারস (টিগ নটারো), সেফক্র্যাকার ডিয়েটার (মাথিয়াস শয়েখুফা), শার্প-শুটার গুজ়ম্যান (রাউল কাস্তিলো)। দলে যোগ দেয় স্কটের মেয়ে কেটও (এলা প্রুনেল)। শহরের বাইরে এক কোয়রান্টিন ক্যাম্পে সে কাজ করে। তার বন্ধু, দুই সন্তানের মা গীতা (হুমা কুরেশি) ভেগাসে গিয়ে আর ফেরেনি। তার খোঁজেই কেটের যোগদান। মোটা অর্থের বিনিময়ে শহরের ভিতরে নিয়ে যায় লিলি ওরফে কিয়টে (নোহা আহনেজ়েদার)। কেটের অনুরোধে সে-ও দলের আর এক যোদ্ধা।
জ়ম্বি-ফেস্টের সঙ্গে হাইস্ট থ্রিলার মেশাতে গিয়ে তাল রাখতে পারেননি পরিচালক। হাইস্ট থ্রিলারের চমক ও বুনট এখানে নেই। বরং অ্যাকশনেই বাজিমাত করতে চেয়েছেন স্নাইডার। স্লো মোশনে কয়েকটি অ্যাকশন দৃশ্য মনে রাখার মতো। ছবির টাইটেল কার্ড দেখানোর সময়ে পরিচালকের দৃষ্টিভঙ্গিতে সূক্ষ্ম হিউমর কাজ করেছে। কিন্তু ছবি যত এগিয়েছে, হিউমর পরিণত হয়েছে ডার্ক হিউমরে, বিশ্বাসঘাতকতা এবং প্রবঞ্চনা ছবির আবহকে করে তুলেছে গাম্ভীর্যপূর্ণ।
জ়ম্বিদের রাজা-রানি, তাদের নিজস্ব সমাজের সঙ্গে ছবির বাড়তি আকর্ষণ জ়ম্বি টাইগার। সিজিআইয়ের কাজ কোথাও কোথাও খুব ভাল লেগেছে। কোথাও ততটা নজর কাড়েনি। অতি-মানবদের গল্পে মানবিক আবেগকেও ঠাঁই দিয়েছেন স্নাইডার। স্কট এবং কেটের সম্পর্কের টানাপড়েন, স্কট এবং মারিয়ার বন্ধুত্ব, ভ্যানডিরো ও ডিয়েটারের সম্পর্কের ওঠাপড়া... দেখতে মন্দ লাগে না। ভারতীয় অভিনেত্রী হুমা কুরেশির চরিত্রটি গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু সেটিকে বিকশিত হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়নি। ডেভ, এলা, ওমারি-সহ সব শিল্পী এই মহোৎসবে নিমিত্তমাত্র।
হলিউডের বেশির ভাগ সুপারহিরো বা ফ্যান্টাসি-মুভিতে ‘পোস্ট-অ্যাপোক্যালিপ্স’ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কিন্তু পরিচালক এখানে বিষয়টিকে ছুঁয়ে গিয়েছেন। ছবির একটি সংলাপ রয়েছে, ‘আমেরিকার বাইরে থাকা মানে গণতান্ত্রিক স্বাধীনতা আরও বেশি...’ ট্রাম্প-পরবর্তী সময়ে এই সংলাপ কি রাজনৈতিক ইঙ্গিতপূর্ণ? বিশদে যাননি পরিচালক। অতিমারি-অধ্যুষিত সময়ে গোটা পৃথিবী এখন অ্যাপোক্যালিপ্সের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে। জ়ম্বি আর মানুষের ফারাক কি খালি চোখে বোঝা যায়?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy