তাপসী পান্নু অভিনীত নতুন হরর থ্রিলার ‘ব্লার’-এর শুরুটা বেশ জমাটি। ছবি: সংগৃহীত।
বর্ষাকাল। আলো-আঁধারিতে ঢাকা পাহাড়ের ছোট্ট শহর। একটা ‘আত্মহত্যা’। ব্যস, জমাটি থ্রিলারের পটভূমি প্রস্তুত করতে আর কী চাই! তাই তাপসী পান্নু অভিনীত হরর থ্রিলার ‘ব্লার’-এর শুরুটা বেশ জমাটি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ছবিটি কি দর্শককে আসনে বসিয়ে রাখতে পারল? ২০১০ সালের স্প্যানিশ থ্রিলার ‘জুলিয়া’জ আইজ’- এর হিন্দি রূপান্তরণ ‘ব্লার’। ওটিটিতে মুক্তি পাওয়া ছবিটির পরিচালক অজয় বহেল।
এক রাতে দুঃস্বপ্নে গায়ত্রী দেখে, তার যমজ বোন গৌতমী বিপদে পড়ছে (উভয় চরিত্রেই রয়েছেন তাপসী)। স্বামী নীল (গুলশন দেভাইয়া)-কে নিয়ে বোনের বাড়িতে হাজির হয় সে। আশঙ্কা সত্যি হয়। জানা যায়, গৌতমী আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু গায়ত্রীর মনে অন্য প্রশ্ন উঁকি মারে। এটা কি আদতে আত্মহত্যা, না কি খুন? এই প্রশ্নকে সামনে রেখেই এগোতে থাকে ছবির গল্প।
এই ছবি তাপসীর সামনে একাধিক চ্যালেঞ্জ হাজির করেছে। ছবিটি তিনি প্রযোজনা করেছেন। ছবির সিংহভাগ জুড়েই তিনি। অন্য দিকে দ্বৈত চরিত্র। শুধু তাই নয়, দুই বোনের দৃষ্টিশক্তির সমস্যা রয়েছে। কাহিনি অনুসারে ধীরে ধীরে তাদের দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হয়ে আসে। চোখে ব্যান্ডেজ বেঁধে এ রকম চরিত্রে অভিনয় করা সহজ নয়। তবে বলতেই হয়, ক্ষীণ দৃষ্টিশক্তি সম্পন্ন চরিত্রকে পর্দায় বাস্তবসম্মত ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন অভিনেত্রী। কিন্তু অন্যত্র তাঁর অভিনয় ছকে বাঁধা। গুলশনের বিশেষ কিছু করার ছিল না। ছোট ছোট চরিত্রে বাকিরা যথাযথ।
ছবির চিত্রনাট্যেও বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে। দুই বোনের অতীত কী রকম ছিল? গায়ত্রীর স্বামী কী করে? দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হতে থাকা এক জন মহিলা গাড়ি চালায় কী করে? এ রকম একাধিক প্রশ্ন ঘুরপাক খায়। ফলে চরিত্রগুলো যেন খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসতে পারে না। তার সঙ্গেই ছবির ক্লাইম্যাক্স জানার পর বাকিটা অনুমান করা খুবই সহজ হয়ে যায়, যা আশি বা নব্বই দশকের বলিউডের সস্তা থ্রিলারে হামেশাই দেখা যেত। তাই ঝাপসা পথে ছবির গতি খুব একটা সাবলীল হয় না।
মন্দের ভাল, সুধীর কে চৌধুরীর ক্যামেরা। সাম্প্রতিক ‘দৃশ্যম ২’-এর ক্যামেরাও তিনিই সামলেছিলেন। এই ছবিতেও তিনি হতাশ করেননি। তবে ছবির সম্পাদনায় গোলমাল রয়েছে। চরিত্ররা কোন বাড়ি থেকে কোন বাড়িতে ছুটোছুটি করছে, তা ধাঁধা সৃষ্টি করে। শেষের দিকের দৃশ্যগুলিতে কাঁচি না চালানোর জন্য ধৈর্যচ্যুতি ঘটতে পারে। তাই সফল ছবির রিমেক হওয়া সত্ত্বেও ছবিটা ঝাপসাই থেকে যায়। আরও ঝাপসা লাগে খুনির ‘মোটিফ’। তারও যে একটা নিজস্ব অতীত রয়েছে, সেই ইঙ্গিত দিয়ে বেমালুম অন্য দিকে ছুটে যায় চিত্রনাট্য।
‘দোবারা’র পর ‘ব্লার’— পর পর রিমেক। তার উপর ‘সাবাশ মিথু’। প্রেক্ষাগৃহ, ওটিটি সব মিলিয়ে এই বছর তাপসীর ৬টি ছবি মুক্তি পেল। কিন্তু দুঃখের বিষয়, কোনওটিই সেই ভাবে দর্শকদের মনে জায়গা করে নিতে পারেনি। তাপসী কি বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত? হয়তো অভিনেত্রীর আগামী ছবি প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy