এ বার মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন বাংলাদেশের জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রধান নাহিদ ইসলাম। শুধু তা-ই নয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতার দাবি, সে দেশের বর্তমান প্রশাসন অনেক ক্ষেত্রেই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দল বিএনপির পক্ষে কাজ করছে!
এর পরেই তাঁর তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য, ‘‘আমরা মনে করি এই পরিস্থিতিতে, এ ধরনের প্রশাসনের অধীনে জাতীয় সংসদের নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব নয়!’’ নাহিদের নেতৃত্বে এনসিপি প্রতিনিধিদল বুধবার ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং স্পেন, ফ্রান্স, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, ইতালি, সুইডেন, সুইৎজ়ারল্যান্ড, নরওয়ের রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে। তার পরেই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ওই মন্তব্য করেন তিনি।
ইউরোপের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে তাঁরা কী নিয়ে আলোচনা করলেন জানতে চাওয়া হলে নাহিদ বলেন, ‘‘সংস্কারের বিষয়ে আমরা যে প্রস্তাবনাগুলি সংস্কার কমিশনকে দিয়েছি, সেগুলির কথা বলেছি। আমরা বলেছি আমাদের তিনটি দাবির কথা—সংস্কার, বিচার ও গণপরিষদ নির্বাচন।’’ সেই সংস্কার যে ‘ন্যূনতম’ নয়, ‘মৌলিক’ হতে হবে, সে কথাও স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু নির্বাচনে এনসিপি যোগ দেবে কি না, সে বিষয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে।
আরও পড়ুন:
২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম মুখ ছিলেন নাহিদ। সেই আন্দোলনের জেরে গত বছরের ৫ অগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীপদ থেকে ইস্তফা দিয়ে বাংলাদেশ ছেড়েছিলেন। পতন হয় আওয়ামী লীগের সরকারের। ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় বাংলাদেশে নতুন অন্তর্বর্তী সরকার। সেই সরকারে উপদেষ্টা হিসাবে ছিলেন নাহিদও। পরে উপদেষ্টার পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে নতুন দলের শীর্ষপদে বসেন তিনি।
সম্প্রতি দেশের সেনা আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন বাংলাদেশের সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ় জ়ামান। তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। ওই বৈঠক নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির দুই শীর্ষনেতার মতপার্থক্য প্রকাশ্যে এসেছে। হাসনাত আবদুল্লা সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে জানিয়েছিলেন, আওয়ামী লীগের স্বচ্ছ ভাবমূর্তির কয়েক জন নেতাকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে ‘চাপ দিয়েছে’ সেনা। দলের আর এক মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম অবশ্য সেনার তরফে চাপ দেওয়া হয়েছে, এমন কিছু মানতে চাননি।