Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
bollywood. lalita pawar

অভিনেতার চড়ে চিরস্থায়ী ক্ষত চোখে, রামায়ণের ‘মন্থরা’ ললিতা ছিলেন নির্বাক যুগের বিখ্যাত নায়িকা

তিন মাস ধরে ললিতার চোখের চিকিৎসা হয়। দৃষ্টিশক্তি বেঁচে যায়। কিন্তু চোখের ক্ষত থেকে যায় বাকি জীবনের সঙ্গী হয়ে। এর পর আর মূল নায়িকার চরিত্রে তিনি সুযোগ পাননি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২০ ১০:১৯
Share: Save:
০১ ১৫
মাত্র ন’বছর বয়সে শুরু অভিনয়। সেই অভিনয় করতে গিয়েই হারাতে বসেছিলেন দৃষ্টিশক্তি। ধনী বস্ত্র ব্যবসায়ীর মেয়ে হওয়ায় বিপুল খরচ করে চিকিৎসায় সেই খেসারত দিতে হয়নি। কিন্তু বাঁ চোখে ত্রুটি রয়েই গিয়েছিল। সেইসঙ্গে হিন্দি সিনেমার নায়িকার ভূমিকায় আর ফিরতেই পারলেন না ললিতা পওয়ার।

মাত্র ন’বছর বয়সে শুরু অভিনয়। সেই অভিনয় করতে গিয়েই হারাতে বসেছিলেন দৃষ্টিশক্তি। ধনী বস্ত্র ব্যবসায়ীর মেয়ে হওয়ায় বিপুল খরচ করে চিকিৎসায় সেই খেসারত দিতে হয়নি। কিন্তু বাঁ চোখে ত্রুটি রয়েই গিয়েছিল। সেইসঙ্গে হিন্দি সিনেমার নায়িকার ভূমিকায় আর ফিরতেই পারলেন না ললিতা পওয়ার।

০২ ১৫
নাসিকের এক রক্ষণশীল পরিবারে ললিতার জন্ম ১৯১৬ সালের ১৮ এপ্রিল। তাঁর বাবা লক্ষ্মণ রাও শগুনের বিশাল রেশম ও সুতির কাপড়ের ব্যবসা ছিল। ললিতার প্রথম অভিনয় ১৯২৮ সালে, ‘রাজা হরিশচন্দ্র’ ছবিতে।

নাসিকের এক রক্ষণশীল পরিবারে ললিতার জন্ম ১৯১৬ সালের ১৮ এপ্রিল। তাঁর বাবা লক্ষ্মণ রাও শগুনের বিশাল রেশম ও সুতির কাপড়ের ব্যবসা ছিল। ললিতার প্রথম অভিনয় ১৯২৮ সালে, ‘রাজা হরিশচন্দ্র’ ছবিতে।

০৩ ১৫
বাড়িতে তাঁর নাম রাখা হয়েছিল ‘অম্বা’। পরে সিনেমায় যোগ দেওয়ার পরে তাঁর নতুন নাম হয় ‘ললিতা’। সেই পরিচয়-ই তিনি ব্যবহার করেছিলেন জীবনভর।

বাড়িতে তাঁর নাম রাখা হয়েছিল ‘অম্বা’। পরে সিনেমায় যোগ দেওয়ার পরে তাঁর নতুন নাম হয় ‘ললিতা’। সেই পরিচয়-ই তিনি ব্যবহার করেছিলেন জীবনভর।

০৪ ১৫
শিশুশিল্পী হয়েই ললিতা থেমে থাকেননি। হারিয়েও যাননি ইন্ডাস্ট্রি থেকে। চল্লিশের দশকে নির্বাক চলচ্চিত্রের যুগে তিনি ছিলেন অন্যতম নায়িকা। বলিউডে তাঁর কেরিয়ার ছিল সত্তর বসন্ত জুড়ে বিস্তৃত।

শিশুশিল্পী হয়েই ললিতা থেমে থাকেননি। হারিয়েও যাননি ইন্ডাস্ট্রি থেকে। চল্লিশের দশকে নির্বাক চলচ্চিত্রের যুগে তিনি ছিলেন অন্যতম নায়িকা। বলিউডে তাঁর কেরিয়ার ছিল সত্তর বসন্ত জুড়ে বিস্তৃত।

০৫ ১৫
কিন্তু সব বসন্ত মধুর ছিল না। হঠাৎই সুর কাটে রঙিন যাত্রাপথে। ১৯৪২ সালে শুটিং চলছিল ‘জঙ্গ-এ-আজাদি’ ছবির। নায়িকা ললিতার বিপরীতে নায়ক ছিলেন ভগবান দাদা। একটি দৃশ্যে ললিতাকে চড় মারবেন ভগবান দাদা, এ রকম সিকোয়েন্স ছিল।

কিন্তু সব বসন্ত মধুর ছিল না। হঠাৎই সুর কাটে রঙিন যাত্রাপথে। ১৯৪২ সালে শুটিং চলছিল ‘জঙ্গ-এ-আজাদি’ ছবির। নায়িকা ললিতার বিপরীতে নায়ক ছিলেন ভগবান দাদা। একটি দৃশ্যে ললিতাকে চড় মারবেন ভগবান দাদা, এ রকম সিকোয়েন্স ছিল।

০৬ ১৫
কিন্তু বুঝতে না পেরে প্রয়োজনের তুলনায় জোরেই আঘাত করে বসেন ভগবান দাদা। তাঁর চড় আচমকাই সপাটে এসে পড়ে ললিতার গালে। তাঁর মুখের একটি দিক প্রায় অসাড় হয়ে পড়েছিল। পাশাপাশি আঘাত লাগে তাঁর বাঁ চোখেও।

কিন্তু বুঝতে না পেরে প্রয়োজনের তুলনায় জোরেই আঘাত করে বসেন ভগবান দাদা। তাঁর চড় আচমকাই সপাটে এসে পড়ে ললিতার গালে। তাঁর মুখের একটি দিক প্রায় অসাড় হয়ে পড়েছিল। পাশাপাশি আঘাত লাগে তাঁর বাঁ চোখেও।

০৭ ১৫
তিন মাস ধরে ললিতার চোখের চিকিৎসা হয়। দৃষ্টিশক্তি বেঁচে যায়। কিন্তু চোখের ক্ষত থেকে যায় বাকি জীবনের সঙ্গী হয়ে। এর পর আর মূল নায়িকার চরিত্রে তিনি সুযোগ পাননি। ললিতার জন্য নির্ধারিত হয়ে গেল খলনায়িকার ভূমিকা।

তিন মাস ধরে ললিতার চোখের চিকিৎসা হয়। দৃষ্টিশক্তি বেঁচে যায়। কিন্তু চোখের ক্ষত থেকে যায় বাকি জীবনের সঙ্গী হয়ে। এর পর আর মূল নায়িকার চরিত্রে তিনি সুযোগ পাননি। ললিতার জন্য নির্ধারিত হয়ে গেল খলনায়িকার ভূমিকা।

০৮ ১৫
নির্বাক যুগের নায়িকা ললিতা ক্রমে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হয়ে গেলেন চিত্রনাট্যের দজ্জাল শাশুড়ি। তাঁর একপেশে ভাবমূর্তি ভেঙেছিলেন পরিচালক হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায়। তাঁর ছবিতে ললিতাকে পাওয়া গিয়েছে মমতাময়ী রূপে।

নির্বাক যুগের নায়িকা ললিতা ক্রমে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হয়ে গেলেন চিত্রনাট্যের দজ্জাল শাশুড়ি। তাঁর একপেশে ভাবমূর্তি ভেঙেছিলেন পরিচালক হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায়। তাঁর ছবিতে ললিতাকে পাওয়া গিয়েছে মমতাময়ী রূপে।

০৯ ১৫
হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনায় ‘আনাড়ি’, ‘আনন্দ’ এবং ‘মেমদিদি’ ছবিতে ললিতাকে পাওয়া গিয়েছিল অচেনা রূপে। কাজ করেছেন সমসাময়িক প্রথম সারির সব পরিচালকদের সঙ্গে।

হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনায় ‘আনাড়ি’, ‘আনন্দ’ এবং ‘মেমদিদি’ ছবিতে ললিতাকে পাওয়া গিয়েছিল অচেনা রূপে। কাজ করেছেন সমসাময়িক প্রথম সারির সব পরিচালকদের সঙ্গে।

১০ ১৫
তাঁর ফিল্মোগ্রাফিতে উল্লেখযোগ্য হল ‘শ্রী ৪২০’, ‘সুজাতা’, ‘হাম দোনো’, ‘সেহরা’, ‘প্রফেসর’, ‘ফুল অউর পাত্থর’, ‘মেরি ভাবি’, ‘তপস্যা’, ‘মঞ্জিল’, ‘ঘর সংসার’, ‘বহুরানি’, ‘পুষ্পাঞ্জলি’, ‘উত্তর দক্ষিণ’-এর মতো ছবি।

তাঁর ফিল্মোগ্রাফিতে উল্লেখযোগ্য হল ‘শ্রী ৪২০’, ‘সুজাতা’, ‘হাম দোনো’, ‘সেহরা’, ‘প্রফেসর’, ‘ফুল অউর পাত্থর’, ‘মেরি ভাবি’, ‘তপস্যা’, ‘মঞ্জিল’, ‘ঘর সংসার’, ‘বহুরানি’, ‘পুষ্পাঞ্জলি’, ‘উত্তর দক্ষিণ’-এর মতো ছবি।

১১ ১৫
১৯৬১ সালে মুক্তি পেয়েছিল ‘সম্পূর্ণ রামায়ণ’। এই ছবিতে ললিতা ছিলেন মন্থরার ভূমিকায়। বক্স অফিসে চূড়ান্ত সফল হয়েছিল এই ছবি। পরে আশির দশকের শেষে দূরদর্শনে আসে রামানন্দ সাগরের ‘রামায়ণ’। তখন মন্থরার চরিত্রে ললিতাই ছিলেন একমাত্র পছন্দ।

১৯৬১ সালে মুক্তি পেয়েছিল ‘সম্পূর্ণ রামায়ণ’। এই ছবিতে ললিতা ছিলেন মন্থরার ভূমিকায়। বক্স অফিসে চূড়ান্ত সফল হয়েছিল এই ছবি। পরে আশির দশকের শেষে দূরদর্শনে আসে রামানন্দ সাগরের ‘রামায়ণ’। তখন মন্থরার চরিত্রে ললিতাই ছিলেন একমাত্র পছন্দ।

১২ ১৫
তবে শুধু অভিনয়-ই নয়। ললিতা প্রযোজনাও করেছেন। ১৯৩১ সালে মুক্তি পাওয়া নির্বাক ছবি ‘কৈলাস’-এর সহ প্রযোজক ছিলেন তিনি। পরে ভারতীয় ছবির ‘টকি’ যুগে উত্তরণেও তাঁকে প্রযোজক হিসেবে পাওয়া গিয়েছে। ১৯৩৮ সালে মুক্তি পেয়েছিল তাঁর প্রযোজনায় ‘দুনিয়া ক্যায়া হ্যায়’।

তবে শুধু অভিনয়-ই নয়। ললিতা প্রযোজনাও করেছেন। ১৯৩১ সালে মুক্তি পাওয়া নির্বাক ছবি ‘কৈলাস’-এর সহ প্রযোজক ছিলেন তিনি। পরে ভারতীয় ছবির ‘টকি’ যুগে উত্তরণেও তাঁকে প্রযোজক হিসেবে পাওয়া গিয়েছে। ১৯৩৮ সালে মুক্তি পেয়েছিল তাঁর প্রযোজনায় ‘দুনিয়া ক্যায়া হ্যায়’।

১৩ ১৫
ললিতার প্রথম স্বামী ছিলেন গণপতরাও পওয়ার। কিন্তু তিনি ললিতার ছোট বোনের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। স্বামীর এই আচরণে ক্ষুব্ধ ললিতা বিয়ে ভেঙে বেরিয়ে আসেন। দ্বিতীয় বার বিয়ে করেন প্রযোজক রাজপ্রকাশ গুপ্তকে।

ললিতার প্রথম স্বামী ছিলেন গণপতরাও পওয়ার। কিন্তু তিনি ললিতার ছোট বোনের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। স্বামীর এই আচরণে ক্ষুব্ধ ললিতা বিয়ে ভেঙে বেরিয়ে আসেন। দ্বিতীয় বার বিয়ে করেন প্রযোজক রাজপ্রকাশ গুপ্তকে।

১৪ ১৫
সত্তর বছরের কেরিয়ারে সাতশোর বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন ললিতা। তাঁর শেষ ছবি ‘উত্তর দক্ষিণ’ মুক্তি পেয়েছিল ১৯৮৭ সালে। এর পর আর ছবিতে অভিনয় করেননি তিনি। তাঁকে দেখা গিয়েছে শুধু ছোটপর্দায়, মন্থরার ভূমিকায়।

সত্তর বছরের কেরিয়ারে সাতশোর বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন ললিতা। তাঁর শেষ ছবি ‘উত্তর দক্ষিণ’ মুক্তি পেয়েছিল ১৯৮৭ সালে। এর পর আর ছবিতে অভিনয় করেননি তিনি। তাঁকে দেখা গিয়েছে শুধু ছোটপর্দায়, মন্থরার ভূমিকায়।

১৫ ১৫
১৯৯৮ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি কার্যত সবার অগোচরেই জীবনের রঙ্গমঞ্চ ছেড়ে চলে যান অশীতিপর ললিতা পওয়ার।
(ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া)

১৯৯৮ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি কার্যত সবার অগোচরেই জীবনের রঙ্গমঞ্চ ছেড়ে চলে যান অশীতিপর ললিতা পওয়ার। (ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy