কে ভি বিজয়েন্দ্র প্রসাদ, রাম কমল মুখোপাধ্যায়, সুজয় কুট্টি, শৈলেন্দ্র কুমার, সূর্য শর্মা (বাঁ দিক থেকে)
১৮৭২ সাল। ‘বন্দে মাতরম্’ শব্দ দু'টি প্রথম উচ্চারিত হয় ‘আনন্দমঠ’-এ। দুর্ভিক্ষপীড়িত বাংলায় সন্ন্যাসী বিদ্রোহকে কেন্দ্র করে ‘আনন্দমঠ’ উপন্যাসটি লিখেছিলেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। ১৭৭০ সালের সন্ন্যাসী-ফকির বিদ্রোহের সেই কাহিনি এ বার সেলুলয়েডে। বাংলা নয়, দক্ষিণ ভারতের বিখ্যাত চিত্রনাট্যকার এই কাহিনির চিত্ররূপ দিলেন তাঁর খেরোর খাতায়। তৈরি হবে ‘১৭৭০ এক সংগ্রাম’। সেই ঘটনার প্রেক্ষাপটে হিন্দি, তামিল এবং তেলুগু ভাষায় গল্প লিখলেন চিত্রনাট্যকার কে ভি বিজয়েন্দ্র প্রসাদ। তাঁর পরিচয় নিয়ে বিস্তারিত বললে, তিনি কেবল ‘আরআরআর’ খ্যাত এসএস রাজামৌলীর বাবা নন, একাধিক হিন্দি, তেলুগু, তামিল ছবির চিত্রনাট্যকার। ‘আরআরআর’, ‘বজরঙ্গি ভাইজান’, ‘রজানা’র মতো একাধিক ছবির গল্প ও সংলাপ লিখেছেন তিনি।
এ বার বাংলার জনপ্রিয় উপন্যাসের চিত্রনাট্য লিখলেন সেই বিজয়েন্দ্র। ছবির শ্যুটিং শুরু হবে খুব তাড়াতাড়ি। যদিও ছবির কাস্টিং নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন নির্মাতারা। ‘জি স্টুডিয়ো’র প্রাক্তন কর্ণধার সুজয় কুট্টি, শৈলেন্দ্র কুমার, সূর্য শর্মা এবং রামকমল মুখোপাধ্যায়ের প্রযোজনায় ছবির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।
১২৮ বছর হয়ে গিয়েছে বঙ্কিমচন্দ্র প্রয়াত। কিন্তু তাঁর কলমের প্রাসঙ্গিকতা যে এখনও তরতাজা, তা এ বার আরও স্পষ্ট। কেবল বঙ্কিমের মৃত্যুবার্ষিকী নয়, এই ছবির মাধ্যমে ‘বন্দে মাতরম্’ স্লোগানের ১৫০তম জন্মবার্ষিকীর উদ্যাপন করলেন রাম কমল, সুজয় কুট্টি।
রাজামৌলীর বাবা বিজয়েন্দ্রর কথায়, ‘‘সুজয় যখন আমাকে এই ছবিটির কথা বলে, কয়েক পা পিছিয়ে এসেছিলাম। আসলে বহু বছর আগে এই উপন্যাসটি পড়েছিলাম আমি। এখন সেই প্রেক্ষাপটে ছবি তৈরি হলে নতুন প্রজন্ম কতটা তার সঙ্গে মেলাতে পারবে, তা নিয়ে সন্দেহ হয়েছিল। কিন্তু রামকমল যে ভাবে সেই উপন্যাসটিকে আমার সামনে এনে ফেললেন, যে ভাবে ওঁর ভাবনার কথা বুঝিয়ে বললেন, তাতে আমি মুগ্ধ। ছবিটি নিয়ে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। জানি, ‘আনন্দমঠ’ উপন্যাসের মায়া চিত্রনাট্যে ফেলা খুবই কঠিন, কিন্তু চ্যালেঞ্জ নিতে ইচ্ছে করছে আমার।’’
রামকমল জানালেন, তাঁর স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। ভারতের অন্যতম সেরা প্রতিভাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘সন্ন্যাসীরা যে ভাবে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন, সেই গল্পটি সেলুলয়েডের মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে তুলে ধরা উচিত বলে মনে হয় আমার। আর তাই 'আনন্দমঠ'-কেই বেছে নেওয়া।’’
হায়দরাবাদ, পশ্চিমবঙ্গ এবং লন্ডনের বিভিন্ন জায়গায় শ্যুটিং হবে এই ছবি। আগামী অক্টোবর থেকে শ্যুটিং শুরু করার পরিকল্পনা হয়েছে। আপাতত চিত্রনাট্যের প্রথম খসড়া নিয়ে বৈঠকে বসেছেন নির্মাতারা। শ্যুটিং শুরু হওয়ার জন্য ১২০ দিনও যেন কম পড়ে যাচ্ছে তাঁদের কাছে। তার পর শ্যুটিং শুরু। যা শেষ হতে অন্তত দেড় বছরের ধাক্কা। আর তারও পরে শ্যুটিং পরবর্তী কারুকার্য। ২০২৪-এর আগে এই ছবি মুক্তি পাবে না বলেই ধারণা তাঁদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy