আরজি কর-কাণ্ডে মুখ খুললেন রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রাফিক : সনৎ সিংহ।
বৃহস্পতিবার কলকাতা শহর থেকে মফস্সল, সর্বত্র প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছিলেন সর্বস্তরের মহিলারা। টলিপাড়ার একটা বড় অংশ পথে নেমেছিলেন আরজি কর-কাণ্ডের মৃতা চিকিৎসকের ন্যায় বিচারের দাবিতে। তেমনই গত কয়েকদিন ধরেই সমাজমাধ্যমে খোঁজ পড়েছিল তৃণমূল কংগ্রেসে অভিনেত্রী-সাংসদদের। সেই তালিকায় ছিলেন সায়নী ঘোষ, রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়, জুন মাল্য, শতাব্দী রায়রা। কোথাও কোথাও পোস্টার পড়েছিল ‘লাপাতা লেডিস’ নামে। বিস্তর সমালোচনা হয়। রাজ্যে জুড়ে যখন এমন প্রতিবাদ চলছে তখনও কেন চুপ তৃণমূল কংগ্রেসের এই সাংসদেরা। অবশেষে নীরবতা ভেঙে প্রকাশ্যে এলেন হুগলির সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়।
স্বাধীনতা দিবসে প্রকাশ্যে এল রচনার একটি ভিডিয়ো। সেখানেই তিনি প্রশ্ন তোলেন সত্যিই কি নারীরা স্বাধীন? তাঁরা কি স্বাধীন ভাবে ঘুরতে পারছেন? ভিডিয়োয় সারা ভারতের মহিলাদের কথাই তুলে ধরলেন রচনা। তিনি বললেন, ‘‘সারা ভারতে মহিলারা কি স্বাধীন ভাবে ঘুরতে পারছে? উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ থেকে মণিপুর একটার পর একটা ঘটনা ঘটছে। আমরা মেয়েরা কবে স্বাধীন ভাবে ঘুরে বেড়াব। কলকাতা শহরে আরজি করের এই ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয়। ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। আমরা রাস্তায় নেমেছি। আওয়াজ তুলেছি। আমিও আপনাদের সঙ্গেই আছি।’’মহিলারা যে ভাবে পথে নেমেছেন তা ভারতবর্ষে আগে কোথাও কখনও হয়নি বলেই জানিয়েছেন রচনা। পাশাপাশি সব মহিলাদের কুর্নিশ জানিয়েছেন তিনি।
রচনা মৃতা চিকিৎসকের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বলেন, ‘‘যতক্ষণ না মৃতা চিকিৎসক সুবিচার পাচ্ছেন আপনারা আওয়াজ তুলবেন। ওঁর বাবা–মা যাতে সুবিচার পায়।, দোষী যাতে শাস্তি পায়। আমি আছি আপনাদের সঙ্গে।’’
কথা বলতে বলতে চোখে জল সাংসদের। তাঁর নিজের জীবনটা স্বাচ্ছন্দ্যের হলেও সমাজের একটা বড় অংশের মেয়েরা যে ভাবে যাতায়াত করেন সেই নিয়ে চিন্তিত তিনি। অশ্রুসজল চোখে তিনি বলেন, ‘‘রাতে কাজ সেরে আমি গাড়ি করে বাড়ি ফিরি। তবে বহু মেয়ে ট্রেনে ঝুলতে-ঝুলতে ফেরে, কেউ বাসে, আবার কেউ ফেরে আটোতে। অনেকে অনেক কষ্ট করেন। আমি একজন বোন, একজনের মেয়ে। পুরুষ আমাকে সম্মান করবে, পুরুষ বিপদ পড়লে সাহায্য করবে। কিন্তু পুরুষের জাত আমাকে ছিঁড়ে খাবে, আমি চিৎকার করব কেউ শুনবে না!’’
চোখের জল মুছতে মুছতেই ভারতের বিচারব্যবস্থা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের কঠিন একটা পদক্ষেপ করতে হবে। ভারতের বিচারব্যবস্থা এমন হতে হবে যাতে কোনও পুরুষ কোনও মেয়ের দিকে কুনজরে না তাকাতে পারে। যাদের নজর খারাপ তারা পাল্টায় না। এই অন্যায়ের প্রতিবাদ হওয়া উচিত। সকলে একজোট হয়ে থাকুন। আপনারা ভাববেন না আমরা শিল্পী, রাজনীতির মানুষ, আমাদের মন কাঁদে না তেমন নয়। আমরা আপনাদের সঙ্গেই আছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy