সে কোন আমলের কথা। তখন পরিবারের সব থেকে ছোট্ট ছেলেটির দুষ্টুমিভরা হাসি দেখেই প্রেমে পড়ে যেত কলেজে পা দেওয়া মেয়েটি। তাঁর ‘আমি-একদম-নাচতে-পারি-না’ মার্কা নাচের সঙ্গে এস পি বালসুব্রহ্মণ্যমের গানের যুগলবন্দি— উফ্ আর কী চাই!
‘প্রেম’ থেকে তিনি যখন ‘ভাই’ হলেন, তখনও কিন্তু আমাদের ভালবাসায় কিছু খামতি পড়েনি। ‘সাজন’ থেকে ‘দবং’ হয়েছেন। নায়িকা ছেড়ে সুপারবাইক ধরেছেন। নতুন প্রজন্ম তাঁকে সেই অবতারেই মাথায় তুলে নাচছে। ইদের আগের দিন, প্রথম দিন প্রথম শোয়ে হলে ঢুকেই প্রথমে একটা বড়সড় ধাক্কা খেতে হল। অর্ধেকের বেশি সিট ফাঁকা! চার বছর আগের আর এক ইদ রিলিজ়ের কথা মনে পড়ে গেল। সে বার তো এই মাল্টিপ্লেক্সেই দর্শকের চিৎকারে ‘কিক’-এর প্রথম আধ ঘণ্টা কিছু শোনাই যায়নি। তা হলে কি নায়কের ফ্যানডমে ভাগ বসিয়েছে হকিকতের ‘খলনায়কগিরি’? সত্যিই তো, হরিণ মারা, মানুষ চাপা দেওয়া, আরও কত শত অভিযোগ।
হয়তো ভাবছেন, ছবিটার বিষয়ে এখনও তো কিছু বলা হল না। সত্যি বলতে কী, বলার বিশেষ কিছু নেই। ‘রেস’-এর গরু যে শুধু গাছে নয়, দামি দামি গাড়ি আর হেলিকপ্টারে চড়ে, সে আমরা আগের দুটো কিস্তি দেখেই বুঝে গিয়েছি। তবু পরিচালকভাই আব্বাস-মস্তানের হাতে যখন ‘রেস’ ছিল, তখন তার মূল মন্ত্র ছিল চমক আর প্লটের দ্রুত মোড়বদল। তৃতীয় কিস্তিতে চমক নেই বলব না, তবে সব ক’টাই ঠাসাঠাসি করে ছবির দ্বিতীয়ার্ধে। ফলে দর্শকের খেই হারিয়ে যেতে বাধ্য। তার উপরে কয়েক মিনিট অন্তর নাচ-গান। পরিচালক কোরিওগ্রাফার বলেই কি এই অত্যাচার? গানগুলোও বিশেষ দাগ কাটে না।
দুরন্ত লোকেশন, দুর্দান্ত গাড়ি, চোখজুড়ানো নায়িকা এ ছবিতেও রয়েছে। তবে পোর্শে, জাগুয়ার, ল্যামবরঘিনিতে যত না চড়া হয়েছে, তার চেয়ে বেশি বোমা আর মিসাইল মেরে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে সুপারকারগুলোকে। ‘রেস টু’র জ্যাকলিন ফার্নান্ডেজ় রয়েছেন এ ছবিতেও। সলমনের সঙ্গে তাঁর অনস্ক্রিন রসায়ন যে বেশ ভাল, সে আমরা আগেই দেখেছি। সলমনের ‘জয় হো’র নায়িকা ডেইজ়ি শাহ এ ছবিতে তাঁর বোন। ছবির এক দৃশ্যে স্বল্পবসনা জ্যাকলিন ও ডেইজ়ির চুলোচুলি হিন্দি ছবিতে নতুন। ববি দেওলের ‘কামব্যাক’ বলা হচ্ছিল এই ছবিকে। এ ছবির পরে তাঁর সিনেমা-ভাগ্য আদৌ চমকাবে কি না, সে বিষয়ে সন্দেহ আছে। তবে অ্যাকশন দৃশ্যগুলো দেখে স্পষ্ট, তিনি খুবই খেটে নিজেকে তৈরি করেছেন। আগের দুটো ছবির ‘আরডি’ অনিল কপূর এ ছবিতে অস্ত্র ব্যবসায়ী শামসের। পাকা দাড়ি, রোদচশমা আর কায়দাবাজিতে তিনি ছবির অনেকটাই ধরে রেখেছেন। তবে প্রথম দুটো ছবির নায়ক সেফ আলি খানকে বড্ড মিস করলাম এ বার।
রেস থ্রি পরিচালনা: রেমো ডিসুজ়া অভিনয়: সলমন, অনিল, ববি, জ্যাকলিন, ডেইজ়ি, শাকিব ৫/১০
আর বাকি রইলেন— তিনি।
একটু বিলম্বিত ‘এন্ট্রি’ হলেও এ ছবি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সলমনের। ক্রিস্টোফার নোলানের মতো পরিচালকের সঙ্গে একাধিক ছবিতে কাজ করা হলিউডের অ্যাকশন ডিরেক্টর টম স্ট্রুথার্স সলমনকে প্রতিটি অ্যাকশন দৃশ্যে নিংড়ে নিয়েছেন। স্ট্যালোন-শোয়ার্ৎজ়েনেগার নিয়ে হলিউড খুশি থাকুক, হমারে পাস ভাই হ্যায়!
ভাই-ভক্তদের জন্য স্পয়লার অ্যালার্ট। হ্যাঁ, শার্ট খুলবেন সলমন। তবে ছবির আড়াই ঘণ্টা পার করে।তাতে কী-ই বা এল গেল। সবুরের ফল সব সময়েই মিষ্টি হয়!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy