Advertisement
১৮ নভেম্বর ২০২৪

ষোলো বছর পর আউটডোরে একসঙ্গে

ষোলো বছর পর আবার একসঙ্গে ভিনরাজ্যে তাঁরা। পুরীতে ‘দৃষ্টিকোণ’-এর শ্যুটিংয়ে প্রসেনজিৎ ও ঋতুপর্ণাষোলো বছর পর আবার একসঙ্গে ভিনরাজ্যে তাঁরা। পুরীতে ‘দৃষ্টিকোণ’-এর শ্যুটিংয়ে প্রসেনজিৎ ও ঋতুপর্ণা

পুরীর মন্দিরের সামনে বিখ্যাত জুটি

পুরীর মন্দিরের সামনে বিখ্যাত জুটি

স্বর্ণাভ দেব
শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৭ ০০:০৩
Share: Save:

তাঁদের জুটিতে যেন কিছু পরিবর্তন ঘটেনি। এখনও আগের মতোই সেই স্বাভাবিক রিঅ্যাকশন, শটের পরে একে অপরের সঙ্গে সেই নিয়ে আলোচনা করছেন। কথা হচ্ছে টলিউডের রোম্যান্টিক জুটি প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়-ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর। অবশ্য ‘প্রাক্তন’-এর পরে ঋতুপর্ণা বলেছিলেন, ‘‘আমাদের মধ্যে বন্ধুত্বও নেই, শত্রুতাও নেই।’’ কোথাও যেন অভিমানের চোরাস্রোত বয়ে চলেছিল তখনও। তার পর বছরখানেকের বিরতি নিয়ে ফের একসঙ্গে কাজে ফিরলেন এই জুটি। চমকপ্রদ ঘটনা হল, ষোলো বছর পর একসঙ্গে সিনেমার আউটডোর করলেন তাঁরা। কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় পরিচালিত ‘দৃষ্টিকোণ’-এ শ্যুটিং করলেন পুরীতে। এর আগে ২০০১ সালে ‘জামাইবাবু জিন্দাবাদ’ ছবিতে ইয়ুমথাংয়ে শ্যুটিং করেছিলেন তাঁরা। এত দিন পর পশ্চিমবঙ্গের বাইরে শ্যুটিং করতে এসে সম্পর্কের শীতলতা কি পুরোপুরিই কাটিয়ে উঠলেন তাঁরা?

বন্ধুত্ব থেকে কেমিস্ট্রি

দু’জনকে একসঙ্গে দেখলে কে বলবে, এখন আর আগের অবস্থায় নেই তাঁরা! সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দু’জনেই পরিণত হয়েছেন। তবে থেকে গিয়েছে দু’জনের অভিনয়ের জাদু। হ্যাঁ জাদুই তো বটে, পুরীর মন্দিরের সামনে সাতসকালে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিকোয়েন্সের শটে একে অপরের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। সব কিছুই যেন থমকে গিয়েছে বিশেষ মুহূর্তটায়। রোম্যান্স চুঁইয়ে পড়ছে চোখের ইশারায়। পরক্ষণেই ঋতুপর্ণার মুখে এসে পড়ল কেশরাশি, প্রসেনজিৎও স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে তা সরিয়ে দিলেন। যেন বহু দিনের চেনা মানুষ। ঠিকই তো, প্রগাঢ় বন্ধুত্ব না থাকলে কি আর এই ম্যাজিক সম্ভব! স্বয়ং পরিচালকও ক্যামেরার পিছন থেকে চেঁচিয়ে বললেন ‘‘এক্সেলেন্ট।’’

আরও পড়ুন: ‘হাত পেতে টাকা নিচ্ছি, চরিত্রটা করতে পারছি তো?

দু’জনের কেমিস্ট্রি নিয়ে আত্মবিশ্বাসী প্রসেনজিৎ বললেন, ‘‘আমাদের জুটি নিয়ে তো একটা মিথ রয়েছে। সেটা বজায় রেখেই আমি এই জুটির উত্তরণও দেখতে চাই। যা বিস্মিত করবে আগামী প্রজন্মকেও। আসলে একটা সময়ে দূরত্ব তৈরি হলেও আমাদের পারস্পরিক বন্ধুত্ব রয়েই গিয়েছে। ঋতু সেটে এসে দাঁড়ালে কী হতে পারে আমি জানি, আবার ঋতুও জানে আমি কী করতে চলেছি!’’ কথাটা কতখানি সত্যি, তা প্রতিবেদক নিজেই চাক্ষুষ করেছেন খানিক আগে। ঋতুপর্ণাও একমত এই বিষয়ে। ‘‘কিছু কিছু বিষয় ম্যাজিক তৈরি করে। আমরা কত দিন কাজ করিনি, সেটা মনে রাখিনি। মনে রয়ে গিয়েছে, কাজের স্মৃতিই।’’ আর পরিচালকের মতে, ‘‘এদের কী ম্যাজিক রয়েছে জানি না। তবে সাঁতার কাটা বা সাইকেল চালানো যেমন কেউ ভুলতে পারে না, এদের বন্ধুত্বও তাই।’’

মেলালেন তিনি মেলালেন...

তাঁদের কেমিস্ট্রির মতোই দু’জনের বিরুদ্ধেই কটাক্ষ করেন কেউ কেউ। তা প্রসেনজিতের ম্যানারিজম নিয়েই হোক কিংবা ঋতুপর্ণার দেরিতে পৌঁছনোর ‘নিয়ম’ নিয়ে। কিন্তু সে সব অভিযোগ নস্যাৎ করে দু’জনকেই এক সুতোয় গেঁথেছেন তিনি। প্রসেনজিতের বিষয়ে কৌশিক বললেন, ‘‘মেনস্ট্রিম ছবিতে বুম্বাদার ম্যানারিজম নিয়ে অনেকে ঠাট্টা করে, কিন্তু রিয়্যাল প্রসেনজিৎ ম্যানারিজম সরিয়ে রেখে ন্যাচারাল অভিনয় করলেন।’’ আর ঋতুপর্ণা নাকি ইতিহাস সৃষ্টি করেছে, মত পরিচালকের। রাজারহাটে শ্যুটের সময়ে কাজ শুরুর আগেই নাকি নায়িকার আবির্ভাব ঘটেছিল। এ বিষয়ে কৌশিকের সহাস্য মন্তব্য, ‘‘ঋতুপর্ণার দুর্নাম যারা করে, তাদের বলি, গুছিয়ে কাজ করতে পারলে ঋতুপর্ণা দেরি করে না।’’ তবে আরও এক কমন ফ্যাক্টর হল, কৌশিকের সঙ্গে প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণা দু’জনেরই এটা প্রথম ছবি।

বাঙালির আবেগকে উস্কে দিতেই লোকেশন হিসেবে এসেছে পুরী। শ্যুটের ফাঁকে ফোটোগ্রাফারদের আবদারেই হোক কিংবা ছবির দৃশ্যে সমুদ্রতটে হাত ধরে রোম্যান্টিক দৃশ্য সৃজন, সমুদ্র যেন মিলিয়ে দিল দুই বন্ধুর আবেগ। গোধুলি বেলায় দু’জনের সুরও মিলে গেল এক ছন্দে। ‘‘আমরা এখন পরিণত। পুরনো দিনের মতো নাচ-গান করতে পারব না। আমাদের একসঙ্গে কাজের ক্ষেত্র প্রস্তুত করতে পারে ভাল স্ক্রিপ্ট,’’ বললেন ঋতুপর্ণা। পাশ থেকে সায় দিলেন প্রসেনজিৎও। এক অদৃশ্য বন্ধনে বাঁধা পড়লেন দু’জনে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy