বৈঠক শেষে কী সিদ্ধান্ত নিলেন পরিচালকেরা? গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে পরিচালকদের বৈঠক। ফেডারেশন বনাম পরিচালকদের দ্বন্দ্বে কোনও রফাসূত্র মিলল কি?
পরিচালক গৌতম ঘোষ বললেন, ‘‘একটা অচলাবস্থা চলছে। আমরা সেটা কাটিয়ে উঠতে চাই। আমরা যেন সবাই মিলেমিশে আমাদের ইন্ডাস্ট্রিকে আন্তর্জাতিক জায়গায় নিয়ে যাই, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেটাই চেয়েছেন। এই অচলাবস্থা থেকে বেরোতে গেলে সব পক্ষকে এগিয়ে আসতে হবে। টেকনিশিয়ানদের জন্য উদ্বিগ্ন। দু’পক্ষকেই ভাবতে হবে। কেন এই অচলাবস্থা? তা মেটাতে চাই। কোনও কলহ নয়, বরং পারস্পরিক সৌহার্দ। আমরা বিভাজনে বিশ্বাস করি না। আমাদের ছোট একটা ইন্ডাস্ট্রি। এখানে কোনও পক্ষ নেই। সবাই আমরা এক। ’’
ইন্দ্রনীল রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘পরিচালকদের সঙ্গে টেকনিশিয়ানদের যে কোনও সংঘাত আছে সেটা কিন্তু ভুল ধারণা। রাহুলের ঘটনাকে কেন্দ্র করে এটা হয়তো তৈরি হয়েছে। এই ধরনের নিয়মের বেড়াজালে ক্রমশ ঘিরে ফেলা হচ্ছে, কাজের পরিসর সঙ্কুচিত হচ্ছে। টালিগঞ্জে কাজের পরিমাণ কমে গিয়েছে। পাশাপাশি বিনিয়োগ কমেছে। আমাদের লড়াই টেকিনিশিয়ানদের বিরুদ্ধে নয়। রাজ্য সরকারের কাছে এই পরিস্থিতিতে হস্তক্ষেপ করার আবেদন জানাই।’’
শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় হাতজোড় করে অনুরোধ করলেন, ‘‘মঙ্গলবার থেকে এই অচলাবস্থা যাতে কেটে যায় এবং শুটিং শুরু হয়, সেটাই চাই। পরিচালকেরাও টেকিনিশিয়ান। আমরাও যেন কাজ করতে পারি।”
প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় প্রথমেই জানালেন, টলিপাড়ায় অন্যতম বড় অভিনেতা ও প্রযোজক দেব এ দিনের বৈঠকে আসতে না পারলেও ঘাটাল থেকে সারা ক্ষণ ভিডিয়ো কলে যোগাযোগ রেখেছেন। অভিনেতা বললেন, ‘‘আমরা একটি পরিবারের মতো। আমরা সারা জীবন টেকনিশিয়ানদের জন্য লড়াই করেছি। এটা মান-সম্মানের লড়াই। একটা পরিবারে অভাব-অভিযোগ থাকবে। তাই বলে পরিবার ভেঙে যায় না। আমরা চাই কাজটা চলুক।’’ তিনি আরও যোগ করলেন, ‘‘একটা ছবির পিছনে প্রচুর মাথা কাজ করে। তাঁদের সব পরিশ্রম বন্ধ হয়ে গেল। আমি এখনও বুঝতে পারছি না বিরোধীতা কোথায়। আমি একদিনে অনেকটা খেয়ে পেট খারাপ করব নাকি অল্প অল্প করে খাব সেটা ভাবতে হবে। আামাদের টেকনিশিয়ানদের দক্ষতা দেশের অন্য জায়গার তুলনায় অনেক ভাল। সুজিত সরকার, সুজয় ঘোষের মতো পরিচালকেরা পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ করেন কলকাতায়। অথচ আমরা নিজেদের অগ্রগতির দিকে নজর দিই না। একজন পরিচালক সেটে এলে আমরা উঠে দাঁড়াই। পরিচালকদের সম্মান দেওয়া আমাদের কাজ। পরিচালকের আসনটা খুব সম্মানের। আমরা সবাই আবেগতাড়িত তবে ঘটনাটা এক দিনের নয়। অনেক দিন ধরে এটা জমতে জমতে এই আকার ধারণ করেছে। প্রত্যেকের যোগ্য সম্মান চাই। আমরা এখানে সদার্থক আলোচনা করছি।’’
রাজ চক্রবর্তী শেষে বলেন, ‘‘আমিও সকলের কাছে হাতজোড় করে বলছি আপনারা ভাবুন, আমরা যাতে কাল থেকে কাজ শুরু করতে পারি। আমরা আশা করছি একটা সদর্থক কিছু বেরোবে। ’’
সোমবার রাত ৮টায় টেকনিশিয়ান স্টুডিয়োয় পরিচালকদের সাংবাদিক সম্মলেন। তার আগে বিকেল ৪টেয় ফেডারশনের বৈঠক। সেখানে চলবে ভোটাভুটির পর্ব। কারা কারা রাহুল মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজ করতে চান, কারা চান না— সেই নিয়ে নাকি বৈঠক। তবে সোমবার দিনভর স্টুডিয়োপাড়ায় দফায় দফায় বৈঠকে শেষমেশ কোনও রফাসূত্র মেলে কি না এবং স্টুডিয়োপাড়ার অচলাবস্থা কাটিয়ে ফের শুটিং শুরু হয় কি না, সেটাই দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy