মুখ খুললেন ‘দুর্গাপুর জংশন’ ছবির প্রযোজক-পরিচালক অরিন্দম ভট্টাচার্য। সোমবার আনন্দবাজার ডট কমকে তিনি বলেন, “২০১৬ সাল থেকে বাংলা বিনোদন দুনিয়ার সঙ্গে যুক্ত। এখনও পর্যন্ত মোট পাঁচটি ছবি করেছি। কারও এক পয়সা বাকি রাখিনি। চাইলে হিসাব দেখাতে পারি। প্রয়োজনে গিল্ড বা অন্য সংগঠনের কাছে খোঁজ নিতে পারেন।” শনিবার রাত থেকে তাঁর বিরুদ্ধে বকেয়া না মেটানোর অভিযোগ জানিয়েছেন ছবির সহকারী পরিচালক মধুবন্তী মুখোপাধ্যায়। রবিবার সন্ধ্যায় সবিস্তার জানতে পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদ জানান তিনি। এ দিন মুখ খোলার পাশাপাশি আনুষ্ঠানিক বিবৃতিও দিয়েছেন পরিচালক।
বিবৃতিতে জানিয়েছেন, সমস্ত কলাকুশলী, অভিনেতা এবং স্টুডিয়োর অর্থ শোধের পরে সেন্সর বোর্ড থেকে ছাড়পত্র মেলে। ‘দুর্গাপুর জংশন’ সেই ছাড়পত্র পেয়েছে। ছবিটি সেন্সরশিপের সঙ্গেই দেখানো হচ্ছে। বকেয়া না মেটালে এই ছাড়পত্র পাওয়া সম্ভব নয়। তাঁর আরও দাবি, প্রোডাকশন ম্যানেজার, অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর্স গিল্ডের সরাসরি হস্তক্ষেপে বিষয়টি গত বছরেই মিটে গিয়েছে। যেখানে যতটুকু বাকি ছিল, সবই পরিশোধ করেছেন তিনি। ছবিমুক্তির এক দিন পর হঠাৎ বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক শুরু হওয়ায় অবাক অরিন্দম।
উল্লেখ্য, সহকারী পরিচালক মধুবন্তী এবং ছবির নায়িকা স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, এখনও ছবির একাধিক কলাকুশলী পারিশ্রমিকের পুরো অর্থ হাতে পাননি। আনন্দবাজার ডট কম সেই প্রসঙ্গে যোগাযোগ করেছিল ‘দুর্গাপুর জংশন’-এর পোশাক পরিকল্পক সুলগ্না চৌধুরী এবং চিত্রগ্রাহক প্রসেনজিৎ চৌধুরীর সঙ্গে। তাঁরা জানান, তাঁরা বকেয়া পেয়ে গিয়েছেন।
তার পরেও মধুবন্তীকে আলোচনায় বসার অনুরোধ জানিয়েছেন অরিন্দম। যদি সত্যিই সহকারী পরিচালকের কোনও পাওনা বাকি থাকে তা হলে বিষয়টি কথা বলে জেনে নেবেন। এ দিকে, বকেয়া না মেটানোর পাশাপাশি আরও একটি অভিযোগ অরিন্দমের মাথায়। তিনি ‘দুর্গাপুর জংশন’-এর পরিচালক হিসাবে নিজেকে দাবি করলেও আদতে ছবিটি নাকি মধুবন্তী এবং প্রসেনজিতের পরিশ্রমের ফসল! মধুবন্তী এবং স্বস্তিকা, দু’জনেই এই অভিযোগ করেছেন।
আরও পড়ুন:
অভিনেত্রীর মতে, সহকারী পরিচালক, চিত্রগ্রাহক ছাড়াও তিনি এবং ছবির নায়ক বিক্রম চট্টোপাধ্যায়ও চিত্রনাট্য, সংলাপ ইত্যাদি তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন। পরিচালক ঘুমিয়ে কাটিয়েছেন! সে প্রসঙ্গ তুলতেই হেসে ফেলেছেন অরিন্দম। প্রযোজক-পরিচালক রসিকতা করে বলেছেন, “পাঁচটি ছবি পরিচালনা করে একাধিক পুরস্কার, সম্মান পেয়েছি। সবটাই তা হলে টেকনিশিয়ান আর অভিনেতাদের জন্য। কারণ, আমি তো কিছুই পারি না! কিছুই করিনি!”
এ প্রসঙ্গে প্রযোজক-পরিচালককে সমর্থন জানিয়েছেন চিত্রগ্রাহক প্রসেনজিৎ। তাঁর কথায়, “অরিন্দমদার সঙ্গে এর আগেও কাজ করেছি। দাদা কাজের সময় যথেষ্ট স্বাধীনতা দেন। মতামত জানাতে পারি আমরা। আমাদের মতামত পছন্দ হলে সেটা গ্রহণ করেন। হয়তো তারই ভুল ব্যাখ্যা হচ্ছে।” এক দিন গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন অরিন্দম। সে দিন দলের সকলে তাঁকে বিশ্রাম নিতে বলেছিলেন। ওই এক দিন ছাড়া অরিন্দম আর কোনও দিন বিশ্রাম নেননি, এমনই দাবি প্রসেনজিতের।