Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Pallavi Dey

Pallavi Dey Death: পল্লবী মৃত্যুরহস্য: অভিনেত্রীর লিভ-ইন সঙ্গী সাগ্নিককে গ্রেফতার করল গরফা থানা

সোমবারই পল্লবীর বাবা নীলু দে পুলিশে অভিযোগ করেন, তাঁর মেয়েকে খুন করা হয়েছে। এফআইআরে তিনি সাগ্নিক-সহ কয়েক জনের নাম করেছিলেন।

গ্রেফতার পল্লবীর লিভ-ইন সঙ্গী সাগ্নিক।

গ্রেফতার পল্লবীর লিভ-ইন সঙ্গী সাগ্নিক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০২২ ১৮:০৫
Share: Save:

অভিনেত্রী পল্লবী দে মৃত্যু-মামলায় তাঁর লিভ-ইন সঙ্গী সাগ্নিক চক্রবর্তীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। সোমবারই পল্লবীর বাবা নীলু দে পুলিশে অভিযোগ করেন, তাঁর মেয়েকে খুন করা হয়েছে। অভিযোগপত্রে তিনি সাগ্নিক, তাঁর বান্ধবী ঐন্দ্রিলা সরকার-সহ কয়েক জনের নাম করেছিলেন। এর পর সাগ্নিককে প্রায় রাতভর জেরা করা হয়। সূত্রের খবর, গরফা থানায় জেরার সময় আগাগোড়া হাজির ছিলেন কলকাতা পুলিশের এক ডেপুটি কমিশনার। বস্তুত, তাঁর সামনেই সাগ্নিককে জিজ্ঞাসাবাদের প্রক্রিয়া চলে। এর পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সাগ্নিককে গ্রেফতার করা হল।

পল্লবীর বাবার দাবি ছিল, অন্য এক তরুণী ঐন্দ্রিলার সঙ্গে সম্পর্কে থাকতে চেয়েই মেয়েকে খুন করেছেন সাগ্নিক। পাশাপাশি তাঁরা জানিয়েছিলেন, পল্লবীর উপার্জিত অর্থও হস্তগত করার চেষ্টা করছিলেন সাগ্নিক। সোমবারের সেই অভিযোগের ভিত্তিতে খুন এবং সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার মামলা দায়ের হয় সাগ্নিকের বিরুদ্ধে।সোমবার গভীর রাত পর্যন্ত পল্লবীর লিভ-ইন সঙ্গীকে জেরাও করে পুলিশ। তারপরই গ্রেফতারি।

সূত্রের খবর, সোমবার গরফা থানায় সাগ্নিককে জেরা করার সময় নিজে হাজির ছিলেন কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার পদমর্যাদার আধিকারিক অতুল ভি। মূলত, তাঁর তত্ত্বাবধানেই পুলিশের বিভিন্ন প্রশ্নের সামনে পড়তে হয় সাগ্নিককে। চাওয়া হয় ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিশদ তথ্যও।

তদন্তে জানা গিয়েছে পল্লবী ও সাগ্নিক কিছু সম্পত্তি কিনেছিলেন। সোমবার গভীর রাতের জেরায় সেই সম্পর্কে সাগ্নিকের কাছে বিশদ তথ্য জানতে চাওয়া হয়। এ ছাড়া আরও একাধিক আর্থিক লেনদেন নিয়েও পুলিশের প্রশ্নের জবাব দিতে হয় সাগ্নিককে। নতুন কোনও সম্পত্তি কেনা নিয়ে তাঁদের মধ্যে বিবাদের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল কি না জানতে চেয়েছিল পুলিশ।

রবিবারই পল্লবীর গরফার ফ্ল্যাটে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। অভিনেত্রীর গলায় জড়ানো ছিল বিছানার চাদর। মেয়ে যে এই ভাবে আত্মহত্যা করতে পারেন, তা বিশ্বাস করতে চাননি পল্লবীর বাবা নীলু। তিনি রবিবারই জানিয়েছিলেন, পল্লবী এমন পদক্ষেপ করতে পারে না। ওঁকে নিশ্চয়ই কেউ খুন করেছে। যদিও রবিবার এ ব্যাপারে পুলিশের কাছে কোনও মামলা করেননি নীলু। বলেছিলেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দেখেই সিদ্ধান্ত নেবেন। সোমবার বিকেলে পল্লবীর ময়নাতদন্ত হওয়ার পরই স্ত্রী সঙ্গীতা দে এবং আইনজীবীকে সঙ্গে নিয়ে গরফা থানায় হাজির হন অভিনেত্রীর বাবা। সেখানেই পল্লবীর লিভ-ইন সঙ্গী সাগ্নিক, তাঁর এক বান্ধবী-সহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানান তিনি।

হাওড়ার রামরাজাতলায় জিআইপি কলোনি স্টেশন রোডে কাছাকাছিই বাড়ি ছিল সাগ্নিক আর পল্লবীর। ছেলেবেলা থেকেই দু’জন ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তার পর প্রেম। দু’জনের পরিবারও পরস্পরকে চেনে। যদিও মঙ্গলবার সাগ্নিকের প্রাক্তন প্রেমিকা সুকন্যা আনন্দবাজার অনলাইনকে জানান, পল্লবীর আগে সাগ্নিকের সঙ্গে সাত বছরের সম্পর্ক ছিল তাঁর। পল্লবীই তাঁদের মধ্যে চলে আসেন। যদিও পল্লবীর পরিবার বলেছিল, সাগ্নিকের পুরনো সম্পর্কের কথা প্রথমে জানতেনই না অভিনেত্রী।

পুলিশ সূত্রে খবর, সাগ্নিকও দাবি করেছেন, তাঁর আগের সম্পর্ক এবং পল্লবীর প্রাক্তন সম্পর্কের বিষয়ে তাঁরা পরস্পর অবহিত ছিলেন।

সম্পর্কের টানাপড়েন যে এই ঘটনার পিছনে অন্যতম কারণ হতে পারে, তা নিয়ে অভিযোগ করেছে পল্লবীর পরিবার। সঙ্গে অভিযোগ উঠছে সাগ্নিকের জীবনযাপন নিয়েও।

পল্লবীর বাবা যে অভিযোগ থানায় দায়ের করেছেন, তাতে লেখা হয়েছে, পল্লবীর থেকে অর্থ আত্মসাৎ করার জন্য প্ররোচনা দিতেন সাগ্নিক এবং তাঁর বান্ধবী। দু’জনের বিরুদ্ধেই পল্লবীকে খুন করার অভিযোগ আনা হয়েছে। বলা হয়েছে, সাগ্নিক প্রতিদিনই মদ্যপান করতেন। মত্ত অবস্থায় শারীরিক নিগ্রহ করতেন পল্লবীকে। পল্লবীর শরীরে সেই সব অত্যাচারের চিহ্ন দেখতে পেয়েছিলেন তাঁর সহকর্মীরা। সাগ্নিকের বান্ধবীর উপস্থিতি যখন থেকে জানতে পারেন পল্লবী, তখন থেকেই অশান্তি শুরু হয় বলেও উল্লেখ করা হয়েছে অভিযোগপত্রে। ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের অনুমান, এর পর সাগ্নিককে গ্রেফতার ছিল নেহাত সময়ের অপেক্ষা।

অন্য বিষয়গুলি:

Pallavi Dey Sagnik Chakraborty
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy