Pallavi Dey Death Mystery: how Sagnik Chakraborty got valuable items dgtl
Pallavi Dey
Pallavi Dey death mystery: টেলিফোন সংস্থায় ১৮-১৯ হাজার টাকা বেতনের কাজ করে বিলাসবহুল গাড়ি, মোবাইল সাগ্নিকের!
সম্পর্কের টানাপড়েন যে এই ঘটনার পিছনে অন্যতম কারণ হতে পারে, তা নিয়ে অভিযোগ করেছে পল্লবীর পরিবার।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৭ মে ২০২২ ১৩:৪৭
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২৮
পল্লবী দে-র অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর তাঁর পরিবার অভিনেত্রীর লিভ-ইন সঙ্গী সাগ্নিক চক্রবর্তী-সহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। পল্লবীর পরিবারের অভিযোগ, অভিনেত্রীকে খুন করা হয়েছে।
০২২৮
রবিবার সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে গরফার ফ্ল্যাটে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয় পল্লবীর দেহ। তাঁর গলায় জড়ানো ছিল বিছানার চাদর। মেয়ে যে এই ভাবে আত্মহত্যা করতে পারেন, তা বিশ্বাসই করতে পারছেন না পল্লবীর বাবা নীলু। তাঁর দাবি, পল্লবী যে এমন পদক্ষেপ করতে পারেন ঘুণাক্ষরেও টের পাননি পরিবারের কেউই। এর পরই সোমবার বিকেলে পল্লবীর লিভ-ইন সঙ্গী সাগ্নিক, তাঁর এক বান্ধবী-সহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে গরফা থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়।
০৩২৮
পুলিশ সূত্রে খবর, সোমবার গভীর রাত পর্যন্ত সাগ্নিককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। সেখানে ছিলেন কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার।
০৪২৮
হাওড়ার রামরাজাতলায় জিআইপি কলোনি স্টেশন রোডে দু’জনের বাড়ি কাছাকাছি। ছেলেবেলা থেকেই পল্লবী-সাগ্নিক ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তার পর প্রেম। দু’জনের পরিবারও পরস্পরকে চেনে।
০৫২৮
পুলিশ সূত্রে খবর, সাগ্নিক দাবি করেছেন, তাঁর আগের সম্পর্ক এবং পল্লবীর প্রাক্তন সম্পর্কে তাঁরা পরস্পর অবহিত ছিলেন।
০৬২৮
সম্পর্কের টানাপড়েন যে এই ঘটনার পিছনে অন্যতম কারণ হতে পারে, তা নিয়ে অভিযোগ করেছে পল্লবীর পরিবার। সঙ্গে অভিযোগ উঠছে সাগ্নিকের জীবনচর্যা নিয়েও।
০৭২৮
পল্লবীর বাবা নীলু দে এফআইআরে অভিযোগ করেন, এক দিকে পল্লবীর কাছ থেকে টাকা নিচ্ছিলেন সাগ্নিক, পাশাপাশিই সম্পর্ক রাখছিলেন অন্য আর এক বান্ধবীর সঙ্গে।
০৮২৮
মৃত অভিনেত্রীর বাবা সোমবার থানায় তাঁর অভিযোগে জানিয়েছেন, ওই বান্ধবী প্রায়ই পল্লবীর অনুপস্থিতিতে হাজির হতেন তাঁর গরফার বাড়িতে। আর পল্লবীর থেকে টাকা নিয়ে বাড়ি-গাড়ি কেনা সাগ্নিক অভিনেত্রীর অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে উপভোগ করতেন অন্য বান্ধবীর সঙ্গ।
০৯২৮
অভিযোগপত্রে লেখা হয়েছে, পল্লবীর থেকে অর্থ আত্মসাৎ করার জন্য প্ররোচনা দিতেন সাগ্নিক এবং তাঁর বান্ধবী। দু’জনের বিরুদ্ধেই পল্লবীকে খুন করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
১০২৮
বলা হয়েছে, সাগ্নিক প্রতিদিনই মদ্যপান করতেন। মত্ত অবস্থায় শারীরিক নিগ্রহ করতেন পল্লবীকে। পল্লবীর শরীরে সেই সব অত্যাচারের চিহ্ন দেখতে পেয়েছিলেন তাঁর সহকর্মীরা। সাগ্নিকের বান্ধবীর উপস্থিতি যখন থেকে জানতে পারেন পল্লবী, তখন থেকেই অশান্তি শুরু হয় বলেও উল্লেখ করা হয়েছে অভিযোগপত্রে।
১১২৮
পুলিশ সূত্রে খবর, সম্প্রতি পল্লবী ও সাগ্নিক যৌথভাবে কিছু সম্পত্তি কিনেছিলেন। সেই সব আর্থিক লেনদেনের বিষয়েও সাগ্নিককে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা।
১২২৮
পরিবারের অভিযোগ, এ ছাড়াও আরও একাধিক আর্থিক লেনদেন নিয়েও পুলিশ প্রশ্ন করে সাগ্নিককে।
১৩২৮
পল্লবীর সহ-অভিনেতা সায়ক চক্রবর্তী প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘পল্লবীর জন্মদিনে বড় করে পার্টির আয়োজন করা থেকে শুরু করে দামি দামি উপহার দেওয়া, এ সবই সাগ্নিক করত। কিন্তু আমরা কেউ কোনও দিন জানতে পারিনি সাগ্নিকের পেশা সম্পর্কে।’’
১৪২৮
সায়কের প্রশ্ন, ‘‘এত টাকা ও কোথায় পেত? গত বার জন্মদিনে পল্লবীকে হিরের আংটি উপহার দিয়েছিল। এ বারের জন্মদিনে ‘আইফোন ১৩ প্রো’-এর মতো দামি ফোন দিয়েছিল। দু’জনে মাঝে মধ্যেই কলকাতার দামি দামি হোটেলে গিয়ে থাকত, ঘুরত।’’
১৫২৮
সায়কের দাবি, ‘‘সাগ্নিক এত টাকা কোথা থেকে পেল? নাকি সবই পল্লবীর থেকে নিত সাগ্নিক? মনে হয় সবটা তদন্ত হওয়া দরকার।’’
১৬২৮
সাগ্নিক একটি টেলিকম সংস্থায় চাকরি করেন। অভিনয়ের জগতের বাইরের লোক তিনি।
১৭২৮
পল্লবীর ইনস্টাগ্রাম এবং ফেসবুক প্রোফাইল বলছে, তাঁরা বেশ হুল্লোড় করতে পছন্দ করতেন। শহরে থেকেও মাঝেমধ্যেই হোটেলে থাকা, দামি গাড়িতে ভ্রমণ, নিয়মিত পার্টি—সবই তাঁরা এক সঙ্গেই করতেন।
১৮২৮
পল্লবীর বাবার দাবি, সাগ্নিককে ২২ লক্ষ টাকা দিয়ে অডি গাড়ি কিনে দেন তাঁর কন্যা। শুধু তা-ই নয়, লক্ষাধিক টাকা দিয়ে ফোন এবং ল্যাপটপও উপহার হিসাবে দিয়েছিলেন পল্লবী।
১৯২৮
পুলিশ সূত্রে খবর, সাগ্নিককে জেরা করার পাশাপাশি তল্লাশি চালানো হয়েছে গরফার সেই ফ্ল্যাটে। সঙ্গে পল্লবীর মোবাইলও পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। তাতে বেশ কিছু তথ্য এসেছে পুলিশের হাতে।
২০২৮
পুলিশ সূত্রে খবর, পল্লবী আর সাগ্নিকের ভাড়ার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছে হুক্কা-সহ নেশার সামগ্রী।
২১২৮
মাসখানেক আগে থেকেই গরফার ফ্ল্যাটে বিবাহিত পরিচয়ে থাকতে শুরু করেছিলেন তাঁরা। সঙ্গে তদন্তে জানা গিয়েছে, মৃত্যুর আগে পল্লবী শেষ ফোন করেছিলেন বাড়ির পরিচারিকাকে।
২২২৮
দাবি-পাল্টা দাবি চলছে। সাগ্নিকের বান্ধবী ঐন্দ্রিলা মুখোপাধ্যায় যেমন দাবি করেছেন, তিনি কোনও দিন গরফার ফ্ল্যাটে যাননি। সাগ্নিকের সঙ্গে তাঁর পরিচয়ও পল্লবীর সূত্র ধরে।
২৩২৮
পুলিশ সূত্রে খবর, পল্লবীর প্রাথমিক ময়নাতদন্ত রিপোর্টে ইঙ্গিত যে, সেটি সম্ভবত আত্মহত্যাই। তবে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত নিশ্চিত ভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না।
২৪২৮
কিন্তু পুলিশি জেরায় যা উঠে আসছে, তা হল সম্পর্কের টানাপড়েন সম্ভবত ছিলই। এ ছাড়া আর্থিক চাপ, হতাশা ছিল কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেই সঙ্গে পল্লবীর পরিবারের দাবি মতো খুন কি না, তা-ও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
২৫২৮
পুলিশ সূত্রে খবর, সাগ্নিক মাসে ১৮-১৯ হাজার টাকার চাকরি করতেন। বহুমূল্য একটি ফ্ল্যাট তাঁরা বুক করেন। পল্লবীর পরিবারের দাবি, সে টাকার সিংহভাগই দেন পল্লবী। আরও দাবি, দু’জনের ১৫ লক্ষ টাকার ফিক্সড ডিপোজিট ছিল।
২৬২৮
সাগ্নিক আগে বিবাহিত ছিলেন বলেও দাবি করেছেন পল্লবীর পরিবার। যে সম্পর্ক থেকেও জটিলতা তৈরি হয়ে থাকতে পারে বলেই পরিবারের দাবি।
২৭২৮
তদন্ত শেষ হলে সত্য প্রকাশ পাবে ঠিকই। কিন্তু কারণ যা-ই হোক, বাবা-মা ফিরে পাবেন না তাঁদের কন্যাকে।
২৮২৮
পল্লবীর বন্ধুরাও তাঁকে যে চোখে হারাচ্ছেন, তা তাঁদের বিভিন্ন সাক্ষাৎকার থেকেই স্পষ্ট।