Onscreen villain Shakti Kapoor has had a rocking love life with his heroine dgtl
bollywood
বাড়ি থেকে পালিয়ে বিয়ে, কলঙ্কের অভিযোগও ফাটল ধরায়নি শক্তি-শিবাঙ্গীর দাম্পত্যে
প্রায় দু’বছর সবার অজান্তে এগোয় তাঁদের প্রেম। তারপর দু’জনেই বাড়িতে জানান। কিন্তু দুই তরফেই প্রবল আপত্তি। বাড়ির সম্মতি না পেয়ে ১৯৮২ সালে পালিয়ে গিয়ে শক্তি কপূরকে বিয়ে করেন শিবাঙ্গী।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২০ ১০:৩১
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৮
বাবা ছিলেন দর্জি। অসচ্ছল পরিবারের ছেলে থেকে বলিউডের তারকা। পর্দায় নায়ক নায়িকার প্রেমের পথে তিনি মূর্তিমান বাধা। কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে তিনি নিজেই দুরন্ত প্রেমিক। শক্তি কপূরের জীবন হার মানাবে পর্দার চিত্রনাট্যকেও। বর্ণময় জীবনে খ্যাতির পাশাপাশি এসেছে যৌন হেনস্থার মতো গুরুতর অভিযোগও।
০২১৮
শক্তি কপূরের জন্ম ১৯৫২ সালের ৩ সেপ্টেম্বর, দিল্লিতে। জন্মগত নাম ছিল সুনীল সিকন্দরলাল কপূর। রাজধানী কনট প্লেসে তাঁর বাবার দর্জির দোকান ছিল। অনটনের সংসার তাঁকে ছোট থেকেই করে তুলেছিল পোড় খাওয়া।
০৩১৮
ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া থেকে পাশ করা সুনীল সিকন্দরলালের অভিনেতা-জীবন শুরু ১৯৭৫-এ। প্রথম ছবি ছিল ‘দো জাসুস’। কিন্তু পরিচিত পেতে তাঁকে অপেক্ষা করতে হয় আরও কয়েক বছর।
০৪১৮
ছেলে সঞ্জয় দত্তকে লঞ্চ করার জন্য ‘রকি’ তৈরি করছিলেন সুনীল। সেই ছবিতে খলনায়কের চরিত্রে উপয়ুক্ত মুখ খুঁজছিলেন তিনি। সে সময় তাঁর চোখে পড়ে ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া থেকে পাশ করা সুনীল সিকন্দরলালকে। তাঁকেই খলনায়ক চরিত্রে মনোনীত করেন সুনীল দত্ত।
০৫১৮
কিন্তু নবাগতর নাম বদলে দেন সুনীল। তাঁর মনে হয়েছিল খলনায়কের জন্য ‘সুনীল’ নামটি ঠিক মানানসই নয়। এরপর তিনিই তাঁর নতুন নাম দেন, ‘শক্তি’। সেই নামেই পরিচিত হন হিন্দি ছবির আইকনিক খলনায়ক।
০৬১৮
আশির দশকের প্রথম অংশ শক্তির কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই সময় পরপর ‘কুরবানি’, ‘রকি’, ‘হিরো’ এবং ‘হিম্মতওয়ালা’ বক্স অফিসে সুপারহিট হয়। সব ছবিতেই খলনায়ক হিসেবে দুর্দান্ত অভিনয় করেন শক্তি কপূর।
০৭১৮
দীর্ঘ কেরিয়ারে সাতশোর বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন শক্তি কপূর। আশি ও নব্বইয়ের দশকে কাদের খানের সঙ্গে তাঁর জুটি ছিল খুবই জনপ্রিয়। কখনও খলনায়ক, কখনও কমেডির ছোঁয়ায় তাঁদের অভিনয় আলাদা মাত্রা যোগ করত চিত্রনাট্যে।
০৮১৮
নব্বইয়ের দশকে শক্তি কপূর নিজেকে সরিয়ে নেন বিদূষকের ভূমিকাতেই। ভিলেনের মতো কমেডিয়ান হিসেবেও সমান সফল তিনি। ‘রাজা বাবু’, ‘ইনসাফ’, ‘আন্দাজ আপনা আপনা’, ‘তোফা’, ‘চালবাজ’, ‘বোল রাধা বোল’ ছবিতে কমেডিয়ান হিসেবে তাঁর অভিনয় উজ্জ্বল।
০৯১৮
পরিচালক প্রিয়দর্শনের খুবই প্রিয় অভিনেতা শক্তি। ‘হাঙ্গামা’, ‘হালচাল’, ‘চুপ চুপ কে’, ‘মালামাল উইকলি’ ছবিতে শক্তির কাজ দাগ কেটেছ দর্শকমনে। হিন্দির পাশাপাশি বাংলা-সহ বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষার ছবিতেও কাজ করেছেন শক্তি। অংশ নিয়েছেন ‘বিগ বস’-এর মতো রিয়েলিটি শো-তেও।
১০১৮
১৯৮০ সালে মুক্তি পায় ‘কিসমত’। এই ছবিটি আক্ষরিক অর্থেই শক্তি কপূরের ভাগ্যে বড় ভূমিকা পালন করে। প্রথমে ছবিতে মিঠুন চক্রবর্তীর নায়িকা হওয়ার কথা ছিল পদ্মিনী কোলাপুরীর। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ছবি থেকে সরে আসেন তিনি। পরিবর্তে সুযোগ পান তাঁর দিদি শিবাঙ্গী কোলাপুরী।
১১১৮
ছবিতে অভিনয়ের পাশাপাশি নায়িকা শিবাঙ্গী মন জিতে নিলেন ছবির খলনায়ক শক্তি কপূরের। দু’জনেই তখন ইন্ডাস্ট্রিতে। সম্পর্ক গাঢ় হতে সময় লাগেনি। ছবিটি বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়লেও শক্তি-শিবাঙ্গী সম্পর্ক রয়ে গেল বরাবরের জন্য।
১২১৮
প্রায় দু’বছর সবার অজান্তে এগোয় তাঁদের প্রেম। তারপর দু’জনেই বাড়িতে জানান। কিন্তু দুই তরফেই প্রবল আপত্তি। বাড়ির সম্মতি না পেয়ে ১৯৮২ সালে পালিয়ে গিয়ে শক্তি কপূরকে বিয়ে করেন শিবাঙ্গী।
১৩১৮
এরপর বরফ তো গললই না। উপরন্তু আরও জমাট হল সমস্যা। শক্তি কপূরের পরিবার মেনে নিয়েছিল শিবাঙ্গীকে। কিন্তু তুলনামূলক ভাবে সম্পন্ন ও প্রতিষ্ঠিত কোলাপুরী পরিবার কিছুতেই শক্তিতে জামাই হিসেবে মেনে নেয়নি। শিবাঙ্গীর সঙ্গে সব সম্পর্ক শেষ করে দেয় তাঁর বাড়ির লোক।
১৪১৮
এই বিচ্ছেদ চলেছিল বেশ কয়েক বছর। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শক্তি কপূর প্রতিষ্ঠিত হন ইন্ডাস্ট্রিতে। শিবাঙ্গীও ততদিনে সিদ্ধান্ত আর শ্রদ্ধার মা। এ বার আর তাঁদের থেকে মুখ ঘুরিয়ে থাকতে পারেনি কোলাপুরী পরিবার। সেখানে নিজের হারানো জায়গা ফিরে পান বাড়ির বড় মেয়ে শিবাঙ্গী।
১৫১৮
শক্তি-শিবাঙ্গীর দাম্পত্যে আবার ঝড় ওঠে ২০০৫ সালে। ইন্ডিয়া টিভিতে একটি স্টিং অপারেশন দেখানো হয়। সেখানে তরুণী সাংবাদিক শক্তি কপূরের মুখোমুখি হন উঠতি নায়িকা সেজে। গোপনে রেকর্ড করা ভিডিয়োর ফুটেজে দেখা যায়, শক্তি কপূর তাঁকে অভিনয়ের সুযোগ দেওয়ার বদলে কুপ্রস্তাব দিচ্ছেন।
১৬১৮
বিতর্কের জেরে শক্তি কপূরকে নির্বাসিত ঘোষণা করে ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন প্রোডিউসার্স গিল্ড অব ইন্ডিয়া। তবে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এক সপ্তাহের মধ্যে শাস্তির কোপ থেকে মুক্তি পান শক্তি কপূর। সব অভিযোগ অস্বীকার করে শক্তির দাবি ছিল, তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। তিনি বলেন, ওই তরুণী-ই তাঁকে ব্ল্যাকমেল করেছেন।
১৭১৮
জীবনের এই কঠিন মুহূর্তে পরিবারকে পাশে পেয়েছিলেন শক্তি কপূর। তাঁর স্ত্রী শিবাঙ্গী সমর্থন করেছিলেন স্বামীর বক্তব্যকেই। দুই সন্তান শ্রদ্ধা ও সিদ্ধান্তও বাবার পাশ থেকে সরে যাননি।
১৮১৮
শক্তি-শিবাঙ্গীর দুই সন্তানই এখন ইন্ডাস্ট্রিতে পরিচিত নাম। ছেলে সিদ্ধান্ত অভিনয়ের পাশাপাশি বেশ কিছু ছবিতে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন। মেয়ে শ্রদ্ধা নতুন প্রজন্মের জনপ্রিয় নায়িকা। কলঙ্কের অভিযোগ ফাটল ধরাতে পারেনি শক্তি কপূরের ‘ফ্যামিলিম্যান’ ভাবমূর্তিতে। (ছবি: আর্কাইভ ও ফেসবুক)