সিরিজ দেখতে বসলেই টের পাওয়া যায় শরৎচন্দ্রের ‘চরিত্রহীন’ এই ‘চরিত্রহীন’-এর প্রেরণা তথা প্রাণভোমরা।
সিজন ওয়ান দেখেই মনে একটা প্রশ্ন উদয় হয়েছিল— ইহারা কারা? কলকেতা শহরের বুকে বেশ কিছু স্ত্রী-পুরুষ সারাদিন এবং সারারাত ব্যেপে যে সব কাণ্ড ঘটিয়ে চলেছে, তা সত্য-ত্রেতা-দ্বাপরেও কেউ ভাবতে পারেনি। সিজন ওয়ান দেখে যদি কেউ সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন যে, কলকাতা নামে শহরটি এক অনাবিল যৌনঘাঁটি, এখানে দিবস-রজনী ব্যাপিয়া যৌনতার লেলিহান শিখা দাউ দাউ এবং হাউ হাউ করিয়া জ্বলিতেছে, তাও তিনি আংশিক সত্যে উপনীত হয়েছেন বলা যায়। কারণ, পিকচার অনেকটাই বাকি ছিল। সিজন টু তিনি দেখেন নাই। নাঃ। গাছে না উঠতেই এক কাঁদির ব্যবস্থা পাকা করে পাঠকের রসভঙ্গ ঘটাতে চাই না। সিজন টু-তে যাওয়ার আগে সিজন ওয়ান সম্পর্কে কয়েকটি কথা না বলা বেদম অন্যায় হবে।
সিরিজ দেখতে বসলেই টের পাওয়া যায় শরৎচন্দ্রের ‘চরিত্রহীন’ এই ‘চরিত্রহীন’-এর প্রেরণা তথা প্রাণভোমরা। সে হতেই পারেন। শরৎবাবুর কালজয়িত্ব সাম্প্রতিক সময়ে নানা ভাবে প্রমাণিত। তা সে ‘পরিণীতা’-ই হোক অথবা ‘দেবদাস’— ন্যাশনাল লেভেলে শরৎবাবুর মাঞ্জাই আলাদা! কেবল পিরিয়ড পিস নয়, তাঁর রচনাকে কন্টেম্পোরাইজ করে জব্বর ও মোক্ষম টুইস্ট প্রদান করে এইসান সব চেহারা প্রদান করা হয়েছে যে, তুঙ্গ বোহেমিয়ান লেখকের বিদেহী আত্মা পর্যন্ত ব্রহ্মহেঁচকি তুলছেন বলে জানাচ্ছেন প্ল্যানচেটবাজ বেশ কিছু বং। হোয়াট বেঙ্গল থিংকস টুডে-র মিথটি আজ আর তেমন সক্রিয় নয়। তাই ন্যাশনাল লেভেলের পিছে পিছেই আগুয়ান হয় বং-ভাবনা। ফলে বাংলায় শরৎচন্দ্রের কন্টেম্পোরাইজেশন একটু লেট করেই।
বেটার লেট দ্যান নেভার। পরিচালক দেবালয় ভট্টাচার্য এই সত্য জানেন। তাই তাঁর ‘চরিত্রহীন’ শরৎ-রিভ্যাম্পশন দৌড়ে লেটে রান করেও ক্যান্টার। শরৎবাবু যে সময়ে ‘চরিত্রহীন’ লিখেছিলেন, সেই সময়টা ছিল হেভি গোলমেলে। বাঙালির নৈতিকতা ডান দিকে না বাঁ দিকে কাত মারবে, সেটা নিয়েই হিম ও শিম খেতেন বঙ্গজ শিক্ষিত মধ্যবিত্তের দল। ১৯ শতকে যে সব সেক্সুয়াল প্রমিসকিউটি মাইকেল থেকে হুতোমের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছিল, বিংশ শতকে সেগুলোর নেচার বদলায়। বাবুয়ানির লোচ্চা-বেলেল্লা ফুর্তির দিন বিগত হয়। শিক্ষিত মধ্যবিত্তের গেরস্তালির টিমিটিমে প্রদীপের নীচেই জমা হতে থাকে নিকষ আঁধার। প্রমিসকিউটি ক্রমে বারবাড়ি থেকে অন্দরমহলে প্রবেশ করে। (উনিশ শতকেও অন্দরের অন্ধকার ছিল। কিন্তু বারবাড়ির জৌলুস তাকে তেমন প্রমিনেন্ট করেনি) শরৎচন্দ্র তাঁর উপন্যাসে সেই অন্তর্মুখী যাত্রাকেই লিখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু একবিংশেও কি সেই যৌন নৈতিকতা বহাল রয়েছে একই মহিমায়? এইখানেই থমকাতে হয়।
চমক তুঙ্গে ওঠে সাবিত্রীর সঙ্গে কিরণময়ীর লেসবো সম্পর্ক স্থাপনে।
মিলেনিয়াল প্রজন্ম এবং তাদের যৌন নৈতিকতাকে যদি শরৎচন্দ্রীয় খাপে ফেলতে হয়, তবে দেকলে শুধু হবে না মামু, রীতিমতো খর্চা আচে। সেই খর্চাটাই দেবালয়বাবু করেছেন তাঁর এই দুই সিজন ব্যাপী ‘চরিত্রহীন’-এ। এই খর্চা বহুবিধ। কেবল পয়সা নয়। রীতিমতো রিসার্চ। জানা নেই এই ওয়েব সিরিজের পিছনের গবেষণা খাতে কত টাকা খসেছে! তবে সেই গবেষণা যে রীতিমতো বিশদ, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। এই ওয়েব সিরিজে উপেন, সতীশ, কিরণময়ী সাবিত্রীরা সকলেই উপস্থিত, তবে একেবারে মিলেনিয়াল কেতায়। এরা প্রত্যেকেই কম ও বেশি পরিমাণে নেশাড়ু আর বেশি ও বেশি পরিমাণে যৌনবাজ। এদের কাণ্ড ও কারখানা দেখলে মনে হতেই পারে, সিগমুন্ড ফ্রয়েড সাহেব এদের দেখেই হয়তো তাঁর প্রখ্যাত যৌন অবদমনের তত্ত্ব নামিয়েছিলেন এবং এরাই পরে মিশেল ফুকো সাহেবকে ‘হিস্ট্রি অব সেক্সুয়ালিটি’ লিখতে প্রেরণা দেয়। কী নেই এই ওয়েব সিরিজে! নিজকীয়া, পরকীয়া, সমকাম, ধর্ষকাম, মর্ষকাম, দর্শকাম, প্রদর্শকাম, মর্ত্তুকাম, ঘিচঘিচে কাম, ঘ্যানঘ্যানে কাম, শ্রাবণের অঝোর ধারার মতো কাম, ভাদ্রের ন্যাকা কাসুন্দি বৃষ্টির মতো ছ্যাড়ছ্যাড়ে কাম— সব মিলিয়ে একটা জগঝম্প ব্যাপার। সিজন ওয়ান দেখতে বসেই একটা প্রশ্ন মাথার ভিতরে ঘুরতে শুরু করে— এই সব লোকজন করেটা কী। মানে, পেট পালনেকে লিয়ে ইয়ে লোক কেয়া করতা হ্যায়। মহিলা-পুরুষ নির্বিশেষে এদের কারোর অন্য কোনও কাজ নেই দেদার মদ, সিগারেট, গাঁজা খাওয়া আর নিরন্তর যৌনবিহার ছাড়া। কে যে কার সঙ্গে কখন কী ভাবে শুয়ে পড়ল, সেই হিসেব রাখতে গেলে আপনি ক্লান্ত হয়ে যাবেন। প্রায় প্রতিটি পুরুষই এখানে ‘বিকৃতকাম’। (‘পারভার্ট’ শব্দটা যখন তখন উচ্চারিত হয়েছে, যার তার মুখে।) নারীরাও ‘বিকৃতি’র দৌড়ে পিছিয়ে নেই। আগেই বলেছি, ধর্ষ-দর্শ-প্রদর্শ-মর্ষ কামনার এক উলাল্লা ককটেল এই সিরিজের গোড়া থেকেই প্রবাহিত হয়। তবে চমক তুঙ্গে ওঠে সাবিত্রীর সঙ্গে কিরণময়ীর লেসবো সম্পর্ক স্থাপনে। কিন্তু, মরি হায়! সপ্তকাণ্ড রাময়ণ পড়ে সীতা কার বাবা। পরিচালক সেই আর্লি টুয়েন্টিয়েথ সেঞ্চুরির ক্লিশেতেই গোঁত্তা খেলেন। লেসবিয়ানিজমকে বিষম-যৌনতার বিকল্প হিসেবে দেখিয়ে বসলেন! সম্ভবত এই সিরিজ এলজিবিটি অ্যাকটিভিস্টরা দেখেননি! নইলে কপালে দুক্কু ছিল।!
কিরণময়ীর পঙ্গু স্বামী সিসিটিভি ক্যামেরায় স্ত্রীর পরকীয়া দেখে।
সারাদিন ধরে খালি যৌন ধান্ধায় ঘুরে বেড়ায় কিছু নাগরিক। বেড়াতেই পারে। সেই অধিকার তাদের রয়েছে। কিন্তু তাই বলে আর কারোর কোনো কাজ নেই! কিরণময়ীর পঙ্গু স্বামী সিসিটিভি ক্যামেরায় স্ত্রীর পরকীয়া দেখে, তাও আবার মেয়েদের পরচুলা পরে। স্ত্রী ঘনিষ্ঠ হলে বেদম পেটায় আর দাবি করে তাতেই নাকি অর্গ্যাজম জমজমাট। উপেন বেশির ভাগ সময়েই আদুল গায়ে বসে মাল খায় আর ল্যাদ খায়। নিজের বউয়ের ভিতরে কিরণময়ীকে খোঁজে। সতীশ সারাদিন মাল আর গাঁজা খায় আর সাবিত্রীকে বিরক্ত করে। কিন্তু কিরণময়ীকে এক বার দেখেই সে টাল্লু খায় আর যৌন ধান্ধা চরিতার্থকরণে ঝাঁপিয়ে পড়ে। কিরণময়ী স্বামীর কিটমিটে ‘বিকৃতি’-র শোধ তুলতে যার তার সঙ্গে শুয়ে পড়ে। তিনটে এপিসোড পার হতে না হতেই সিরিজ এক অনবদ্য যৌন-ভূশণ্ডির মাঠে পরিণতি পায়। ওয়েব সাইটে জ্যঁর হিসেবে উল্লিখিত ‘থ্রিলার’ শব্দটির মহিমা বোধিচৈতন্যে ছোবল দিয়ে ওঠে। অন্য কোথাও থ্রিল না থাকলেও দর্শকের মগজ যে এ হেন ভূশণ্ডির মাঠ দেখে তপ তপ করবেই, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
সিজন টু-তে তাহারা ফিরিয়া আসিল এবং আরও সাঙ্ঘাতিক সব গূঢ়ৈষা লইয়া।
সিজন ওয়ান শেষ হয়েছিল ‘পাপের বেতন মৃত্যু’-এই প্রবাদকে মনে রেখে। দিবাকরের হাতে কিরণময়ীর স্বামী হারান (এখানে হ্যারিয়েস)-এর নিধন আর উপেনের স্ত্রীর আত্মহত্যা আর সতীশের যাবতীয় নারীঘটিত ধানাই-পানাই ছেড়ে প্রেমিকার কাছে প্রত্যাবর্তন আর সাবিত্রীর শিশুকন্যাকে নিয়ে অন্য কোথাও চলে যাওয়া দিয়ে। ও হ্যাঁ। শেষে একটা টুইস্ট মতো ছিল। সেটাই এই ‘থ্রিলার’-এর ‘হুডানইট’ কি না কে জানে! তবে সব দেখে শুনে মনে হয়েছেল, সম্মুখে শান্তি পারাবার। ইহাদিগ যে যার লিবিডো-টিবিডো লইয়া স্তিমিত হইল। কিন্তু না। সিজন টু-তে তাহারা ফিরিয়া আসিল এবং আরও সাঙ্ঘাতিক সব গূঢ়ৈষা লইয়া।
সিজন টু-তে কিরণময়ী একটা মানসিক চিকিৎসালয়ের সেবিকা। সাবিত্রীর মেয়ে সেখানেই ড্রাগ-টাগ খেয়ে মনোরোগী হিসেবে চিকিৎসিত হচ্ছে। হোমের ডাক্তারের বাড়িতে কোমাগ্রস্ত হয়ে পড়ে রয়েছে তার শালা সতীশ। ডাক্তারের আবার প্রবল কাম। তার লিবিডোর ঠেলা বুঝতেই কেটে যায় বেশ কয়েক এপিসোড। তার মধ্যেই অনাবিল চলতে থাকে বাকিদের কামসন্দর্ভ। এ ওর সঙ্গে ও তার সঙ্গে কেবলই শুয়ে পড়ে। স্বেছায়, অনিচ্ছায়, ঠিক করে, ভুল করে শুধুই শোয়া-শুয়ি। আর এ সবের ফাঁকে ফাঁকে ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে রবীন্দ্রসঙ্গীত, লোকগান। সিজন ওয়ানে যে গতিজাড্যহীনতা ছিল, সিজন টু সে তুলনায় স্টেরয়েড প্রাপ্ত। বিদ্যুৎগতিতে ডাক্তার যাকে পারে তাকে টেনে নিয়ে যায়। এমনকি কোমা থেকে উঠে সতীশও ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রথম রিপুর সঙ্গে ছোঁয়া চোর চোর খেলতে। ও দিকে ডাক্তারও অবসর সময়ে ‘ডাঃ জেকিল অ্যান্ড মিঃ হাইড’ বইয়ের মলাটে হাত বুলোয় (ব্যাকগ্রাউন্ডে তখন ‘দিল দুশমন’ বলে একটা গান ক্রমাগত বাজতে থাকে। খুব সিগনিফিক্যান্ট ব্যাপারটা। দিলই যে দুশমন, সেটা প্রথম সিজনেই বোঝা উচিত ছিল।) পাশাপাশি চলতে থাকে অ্যাসাইলামের গুন্ডিয়াচক্রের কাঁচা ভিলেইনি। এত রঙ্গ প্রথম সিজনে ছিল না। সব মিলিয়ে সিজন টু একেবারে ঝক্কাস।
মশলার অতিমাত্রায় প্রয়োগে যে দর্শকের নাভিশ্বাস উঠতে পারে, তা কি তাঁরা এক বারের জন্যও ভাবেন?
‘চরিত্রহীন’-এর এই পরিণতি শরৎবাবু তো দূর অস্ত, পাশ্চাত্যের বিতর্কিত সাহিত্যিক এমিল জোলা বা মার্কি দ্য সাদ পর্যন্ত কল্পনা করতে পারবেন না। অনর্গল শয্যাদৃশ্যের পিছনে ননস্টপ রবীন্দ্রসঙ্গীত। রবিঠাকুরের ফিজিক্যালিটি যে শুধু বৌঠান-কেচ্ছায় প্রমাণিত হচ্ছে না, তা পরিচালক জেনেছেন। আর তাই শরৎবাবুকে শিখণ্ডী খাড়া করে কলকেতা শহর আর সমসময়কে সাক্ষী রেখে তিনি গীতবিতানে অ্যাডাল্ট ছাপ লাগাতে বদ্ধপরিকর— এটা কারোর মাথায় এলে তাঁকে দোষ দেওয়া যাবে না। রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে এই পাঙ্গার কারণটা ঠিক কী, তা জানার আগ্রহ রইল।
যাই হোক। এক সময়ে সিজন টু-ও শেষ হয়। যাবতীয় পাপ-তাপের অন্ত ঘটে মৃত্যু, অনুশোচনা আর নতুন করে চাগিয়ে ওঠা প্রেমে সঙ্গে ফাউ শঙ্খ ঘোষের কবিতা। কুশীলবদের লিবিডো তুর্কি নাচনে ইতি টেনে যেন তালতলায় বিশ্রাম নিতে বসে। উফ্!! কিন্তু এই বিপুল কর্মকাণ্ড থেকে কী উঠে এল, হলাহল না অমৃত, তা ভাবার অবকাশ থেকে যায় বইকি।
কেউ যদি এই পর্যন্ত পড়ে সিদ্ধান্ত নিতে বসেন, এই বিপুল যৌন সন্দর্ভে কি বাঙালির পর্দা ‘সাবালক’ হল? তো এই মুসাবিদার অন্তিম ভাগে সেই প্রশ্নের উত্তর খোঁজা যেতে পারে। বাজারে এমন কথা প্রচলিত রয়েছে বলে জানা যায় যে, ওয়েব প্ল্যাটফর্ম সেন্সরবাজির ঝামেলা থেকে মুক্ত। বিষয়টা বিতর্কিত। তবে কোনও কেন্দ্রীয় সেন্সর-শক্তি যে একে নিয়ন্ত্রণ করে না, তা বোঝা যায়। আর সেই কারণে ওয়েব সিরিজগুলিতে ‘খোলাখুলি কালচার’-এর এক বিশাল রমরমা। সেটা শুধু বাংলায় নয়, হিন্দি ওয়েব সিরিজগুলিতেও এটা লক্ষণীয়। খোলা শরীরের প্রদর্শনী, উদ্দাম মুখখিস্তি, যে কোনও দৃশ্যেই মদ-গাঁজা-সিগারেট সেবনের অবতারণা— এই সিম্পটমগুলো ভারতীয় ওয়েব প্ল্যাটফর্মে জলভাত। কেমন যেন একটা নিয়মই হয়ে দাঁড়িয়েছে এই সবের উপস্থাপন। অনেক সময়েই এই অভ্যাসকে বাড়াবাড়ি ও অপ্রয়োজনীয় বলে মনে হলেও সিরিজ-কর্তারা তা মনে করেন না। তাঁদের ধারণা, এটাই ওয়েব-মশলা। এই মশলার অতিমাত্রায় প্রয়োগে যে দর্শকের নাভিশ্বাস উঠতে পারে, তা কি তাঁরা এক বারের জন্যও ভাবেন?
চরিত্রহীনতা দেখার জন্য ওয়েব-স্যাভি প্রজন্ম ঝাঁপিয়ে পড়বে— এমনই কি ভেবেছিলেন পরিচালক?
‘চরিত্রহীন’-এর মধ্যে বার বার সেই প্রবণতাকেই দেখা গিয়েছে। কার্য-কারণহীন চিত্রনাট্য, অতি দুর্বল অভিনয় ইত্যাদির পাশাপাশি অবিরল শয্যাদৃশ্য এবং যেখানে সেখানে প্রায় বিনা কারণে মুখখিস্তি আর মদ-গাঁজা-সিগারেটের চাষ থেকে আর আর যাই উৎপাদিত হোক, ‘সাবালকত্ব’ যে হয় না— এ কথা বুঝতে গেলে বিশেষ পরিশ্রমের প্রয়োজন নেই। আর এই সিরিজ তোলার জন্য কেন শরৎচন্দ্রের আশ্রয় নিতে হল, সেটাও ভাবার। সাম্প্রতিক প্রজন্মের বাঙালির কাছে কি শরৎ-সাহিত্যের আদৌ কোনও আবেদন রয়েছে? নাকি শুধুমাত্র ‘চরিত্রহীন’ নামটুকু ব্যবহারের জন্যই এই ভ্যানতারা? চরিত্রহীনতা দেখার জন্য ওয়েব-স্যাভি প্রজন্ম ঝাঁপিয়ে পড়বে— এমনই কি ভেবেছিলেন পরিচালক? কিন্তু যেখানে একটি মাত্র ক্লিকে খুলে যেতে পারে বিশ্বের সেরা পর্ন-সম্ভার প্রায় বিনামূল্যে, সেখানে পয়সা খরচা করে কারা এই ধরি মাছ না ছুঁই পানি-মার্কা বিছানা-বিলাস দেখবেন, তা ভাবায়। হিন্দি ওয়েব সিরিজ ‘মির্জাপুর’ বা ‘সেক্রেড গেমস’ চিত্রনাট্যে, অভিনয়ে স্তম্ভিত করে দিচ্ছে দর্শককে, সেখানে বাংলায় এই ধরনের কাণ্ডকারখানা ছেলেমানুষি বলেই বোধ হয়। অহেতুক খোলা শরীরের কসরৎ দেখিয়ে খুব বেশি দূর এগোনো যাবে না, এটা বাঙালি ওয়েব প্ল্যাটফর্ম-কর্তাদের বোঝা প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: জন্ম এ রাজ্যে, এক কালের সেক্স সিম্বল এই বলি নায়িকা এখন কোথায়
আরও পড়ুন: এক কালের হট সুপারহিট এই নায়িকার গ্যাংগ্রিন ধরা দেহ মিলেছিল মুম্বইয়ের ফ্ল্যাটে
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy