Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Entertainment News

‘বৌয়ের লুকের সঙ্গে আমার চেহারা যায় না’

গলার স্বর থেকে মানসিকতা— কোথাও তাড়াহুড়ো নেই। তার ওপর তাঁর সেকেন্ড মেন্টর পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, হুটহাট যে কোনও ছবি করার সিদ্ধান্ত না নিতে।

স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৮ ১৩:০৯
Share: Save:

অরিন্দম শীল আমার মেন্টর, বললেন নবাগতা তুহিনা দাস। তিনি মনে করেন, অভিনেত্রীদের শরীর নিয়ে ছুঁতমার্গ থাকা উচিত নয়। পার্টির চেয়ে বাড়ি তাঁর পছন্দ। ফেসবুক, ট্যুইট, ইনস্টাগ্রামে অ্যকাউন্ট থাকলেও ছবি পোস্ট করতে বা কিছু লিখতে তাঁর ভীষণ কুঁড়েমি। নবাগতা তুহিনা দাস। গায়ের রং, উচ্চতা দেখে মেদিনীপুরের এই মেয়েকে ছোট থেকেই সকলে বলে ‘আফ্রিকান মহিলা’ বা ভিনদেশি কেউ। মডেলিং আর বাংলা ধারাবাহিক দিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে প্রবেশ করলেও পরিষ্কার জানালেন, ‘‘বাংলা ধারাবাহিকের বৌয়ের লুকের সঙ্গে আমার চেহারা যায় না। তাই গত দু’বছরে ভ্যাম্প গার্ল বা টুকটাক চরিত্র করেই আমায় কাটাতে হয়।’’

গলার স্বর থেকে মানসিকতা— কোথাও তাড়াহুড়ো নেই। তার ওপর তাঁর সেকেন্ড মেন্টর পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, হুটহাট যে কোনও ছবি করার সিদ্ধান্ত না নিতে। সৃজিতের ‘এক যে ছিল রাজা’য় যিশু সেনগুপ্তের সঙ্গে অভিনয় করে তিনি আপ্লুত। একটাই দৃশ্য তাই মন কেড়েছে তাঁর। আসলে ‘নায়িকা নয়, অভিনেত্রী হতে চাই’, সাফ জবাব তুহিনার। ‘‘গোড়ার দিকে ইন্ডাস্ট্রিকে বুঝতে সময় লেগেছিল। বেশ কিছু খারাপ ফোন পেয়েছিলাম। ‘আমার অফিসে সন্ধেবেলা দেখা কর’ টাইপ। এই অভিজ্ঞতাগুলো আমায় আরও শক্ত হতে সাহায্য করেছে।’’ দৃপ্ত তুহিনা। তিনি জানেন, সত্যিকারের কাজের জন্য কেউ এ ভাবে আর অফিসে ডাকে না! ‘‘প্রোডাকশন হাউস সরাসরি যোগাযোগ করে। যেমন, অরিন্দমদা আমার লুক টেস্ট, আলাদা অডিশন এ সব কিছুই নেননি। অরিন্দমদা কথা বলেই চরিত্র নির্বাচন করেন।’’ উত্তেজিত তুহিনা।

আরও পড়ুন, ‘আর একটা শিবপ্রসাদকে পেলে কেরিয়ারটা আরও এগোত’

শোনা যায়, ইন্ডাস্ট্রিতে পরিচালক অরিন্দম শীল তাঁর প্রথম মেন্টর? প্রশ্নটা করতেই এক রাশ হাসি নিয়ে বললেন, ‘‘আমার যে কোনও প্রশ্নের উত্তর অরিন্দমদার কাছে আছে। আমার মনে আছে ‘আসছে আবার শবর’-এ আমার একটা অন্তরঙ্গ দৃশ্য ছিল। একটু অস্বস্তি ছিল। অরিন্দমদা কি সহজে সেটা কাটিয়ে দিলেন! হি ইজ সাচ আ সুইটহার্ট!’’ ‘হইচই’-এর জন্য রুদ্রনীল ঘোষের সঙ্গে কুড়ি মিনিটের ছবির কাজ শেষ করেছেন সদ্য। ‘‘প্রায় বাইশ ঘণ্টা টানা শ্যুট ছিল। রুদ্রদা ও রকম এক জন অভিনেতা হয়েও আমি যাতে সহজে অভিনয়টা করতে পারি তার জন্য খুব সাহায্য করেছে আমায়। ইন ফ্যাক্ট সোহিনীদি, অনির্বাণদাও ফ্লোরে যে ভাবে আমাকে সাপোর্ট করত তাতে কখনও মনে হয়নি আমি নতুন।’’ উচ্ছ্বসিত তুহিনা। পার্টিতে যাওয়ার চেয়ে বাঙালি রান্না করতে পছন্দ করেন তিনি।


কোথাও যেন মেদিনীপুরের ‘সেই মেয়ে’ হয়ে থেকে গেছেন তুহিনা।

হোয়াটস্অ্যাপের ডিপি-র ছবি যথেষ্ট খোলামেলা। সাহসী। জানতে চাই অভিনেত্রী হিসেবে খোলামেলা পোশাক, স্কিন শো করা নিয়ে কোনও ছুঁতমার্গ আছে? ‘‘প্রফেশনালি কাজ করতে হলে, চরিত্রের জন্য, অভিনয়ের জন্য অভিনেত্রীদের এই নিয়ে ছুঁতমার্গ থাকে না। শরীর নিয়ে বাতিকগ্রস্ত নই আমি।’’ বললেন তুহিনা। কিন্তু নিজে ফেসবুকে ছবি দেওয়ার কথা ভাবলেই তাঁকে কুঁড়েমিতে পায়। কিন্তু যে দিন পার্টিতে অপর্ণা সেন ডেকে বলেছিলেন তাঁর নতুন ছবির জন্য নতুন মুখ খুঁজছেন, দেখা করতে! সে দিন চমকে গিয়েছিলেন! ছোটবেলার, বড়বেলার অপর্ণা সেনের মুখোমুখি হবেন। ‘‘গিয়ে দেখলাম, আজও যে কোনও সুন্দরী টিন এজারকে টেক্কা দিতে পারেন! উফফ!’’ তা হলে কি অপর্ণা সেনের ‘ঘরে বাইরে’-তে দেখা যাবে? পরিষ্কার কোনও জবাব এল না। আনমনা হয়ে গেলেন তুহিনা। গল্ফগ্রিনের একা ফ্ল্যাটে নিজের সঙ্গে নিজে সময় কাটাতে পছন্দ করেন তিনি। কোথাও যেন মেদিনীপুরের ‘সেই মেয়ে’ হয়ে থেকে গেছেন তিনি। ঘরোয়া, একা, আপনহারা।

অন্য বিষয়গুলি:

Tuhina Das Tollywood Celebrities
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE