Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
National film awards

রাষ্ট্রপতির বদলে স্মৃতি কেন, বয়কটে শিল্পীরা

সব মিলিয়ে ৬৫তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অনুষ্ঠান ছন্দপতনের এক নয়া দৃষ্টান্ত গড়ল। চলচ্চিত্র  মহলের বর্ষীয়ানরা বেশির ভাগই বলছেন, অনিবার্য কারণে এক-আধ বারের ব্যতিক্রম ছাড়া এমন কখনও ঘটেনি।

প্রতিবাদ: জাতীয় পুরস্কারপ্রাপকদের বিক্ষোভ। ছবি: পিটিআই।

প্রতিবাদ: জাতীয় পুরস্কারপ্রাপকদের বিক্ষোভ। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০১৮ ০৩:০০
Share: Save:

চলচ্চিত্রের জাতীয় পুরস্কার নিয়ে বিতর্ক নতুন নয়। পুরস্কার বাছাইয়ে কখনও স্বজনপোষণ, কখনও বা রাজনৈতিক রং লাগার অভিযোগ মাঝে মাঝেই ওঠে। কিন্তু এ বার পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান ঘিরে কার্যত যে বিদ্রোহ জন্ম নিল, তা-ও রাষ্ট্রপতির মতো সাংবিধানিক শীর্ষপদকে ঘিরে, তা প্রায় বেনজির। অনুষ্ঠানটি বয়কটই করলেন ৬৮ জন পুরস্কারপ্রাপক।

বিদ্রোহের মূলে রয়েছে, প্রথাভঙ্গের অভিযোগ। প্রতিবারের মতোই জয়ী শিল্পী-কলাকুশলীদের আমন্ত্রণপত্রে লেখা ছিল, রাষ্ট্রপতি পুরস্কার দেবেন। শিল্পীদের একাংশের অভিযোগ, কাল দিল্লি পৌঁছনোর পরে প্রথামাফিক তাঁদের যখন অনুষ্ঠানের জন্য মহড়ায় নিয়ে যাওয়া হয়, তাঁরা জানতে পারেন, রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ নিজে ১১টি পুরস্কার দেবেন। বাকিদের পুরস্কৃত করবেন কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। এই ‘বিভাজনে’ অসম্মানিত বোধ করেন শিল্পীরা। তা থেকেই বয়কট আন্দোলনের সিদ্ধান্ত।

কেন এমন ঘটল? রাষ্ট্রপতি ভবনের পক্ষ থেকে জানানো হচ্ছে, কোবিন্দ রাষ্ট্রপতি হওয়ার পরে যে প্রোটোকল তৈরি হয়েছে, তাতে একমাত্র প্রজাতন্ত্র দিবস ছাড়া অন্য কোনও অনুষ্ঠানেই তাঁর এক ঘণ্টার বেশি থাকার কথা নয়। রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব অশোক মালিক বলেছেন, ‘‘কোবিন্দ দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এটাই প্রোটোকল। কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রককে এক সপ্তাহ আগে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল।’’

সম্মান: ‘সেরা অভিনেতা’ ঋদ্ধি সেনের হাতে জাতীয় পুরস্কার তুলে দিচ্ছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। রয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী রাজ্যবর্ধন সিংহ রাঠৌর। বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: এপি।

আরও পড়ুন: গেলেন না কৌশিক-অতনু

সে কথা আগে থেকে শিল্পীদের জানানো হল না কেন? বিষয়টি নিয়ে অতএব শেষ পর্যন্ত স্মৃতির তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের দিকেই তর্জনী উঠছে। যদিও মন্ত্রকের মুখে কুলুপ। আজ অনুষ্ঠানের কয়েক ঘণ্টা আগে ক্ষুব্ধ পুরস্কারজয়ীরা রাষ্ট্রপতির দফতর, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক ও ডিরেক্টরেট অব ফিল্ম ফেস্টিভ্যালকে চিঠি দিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন। এই ঘটনায় তাঁরা অত্যন্ত আহত বোধ করছেন বলে তাঁদের দাবি। আগুনে ঘি ঢেলে এফটিআইআই-এর প্রাক্তন কর্তা গজেন্দ্র চহ্বান আবার বলেন, মন্ত্রীর থেকে পুরস্কার নিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ছবি তুললেই তো হয়!

সব মিলিয়ে ৬৫তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অনুষ্ঠান ছন্দপতনের এক নয়া দৃষ্টান্ত গড়ল। চলচ্চিত্র মহলের বর্ষীয়ানরা বেশির ভাগই বলছেন, অনিবার্য কারণে এক-আধ বারের ব্যতিক্রম ছাড়া এমন কখনও ঘটেনি। বরং দীর্ঘ ৬৪ বছর ধরে রাষ্ট্রপতির হাত থেকে পুরস্কার নেওয়াটাই প্রথা। যে ১১ জন আজ রাষ্ট্রপতির হাত থেকে পুরস্কার পেলেন, তাঁদের মধ্যে বাংলা থেকে একমাত্র অভিনেতা ঋদ্ধি সেন। এ ছাড়াও সঙ্গীতপরিচালক এ আর রহমান এবং প্রয়াত শ্রীদেবী ও বিনোদ খন্নার নামাঙ্কিত পুরস্কারগুলিও নিজের হাতে তাঁদের পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE