প্রধানমন্ত্রীর সংসদ ভবন উদ্বোধনের ঘটা দেখে সরব হলেন নাসিরুদ্দিন। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
নতুন সংসদ ভবনের হয়তো প্রয়োজন ছিল, তাই বলে এত ঘটা করে অনুষ্ঠান? প্রশ্ন তুললেন অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহ। খোলাখুলি বললেন, প্রধানমন্ত্রী আসলে নিজের নামেই স্মৃতিসৌধ বানাতে চান। তিনি যা কিছু করেন সব নিজের জন্য। দেশের কথা খেয়ালই থাকে না তাঁর। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে নাম না করেও নরেন্দ্র মোদীর সমালোচনাই করলেন নাসির।
গত ২৮ মে, কুস্তিগিরদের বিক্ষোভের আবহে দিল্লিতে বিলাসবহুল নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার পরই বিরোধীদের রোষের মুখে কেন্দ্রীয় সরকার। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী একে ‘রাজ্যাভিষেক’ বলে কটাক্ষ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর পরনে ছিল সাদা কুর্তা, সোনালি জ্যাকেট এবং তার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে উত্তরীয়। রবিবার নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধনের আগে ঐতিহাসিক রাজদণ্ড ‘সেঙ্গল’-এর সামনে উপুড় হয়ে শুয়ে সাষ্টাঙ্গ প্রণাম করেন প্রধানমন্ত্রী। সেই ছবি ঘুরছে সমাজমাধ্যমে।
প্রধানমন্ত্রীর হাতে সংসদ ভবন উদ্বোধনের এই বহর দেখে সরব হলেন নাসিরুদ্দিনও। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে সব সময়েই তিনি সোজাসাপটা মন্তব্য করেন, এ বারও করলেন।
নাসিরের কথায়, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজের জন্য স্মৃতিসৌধ গড়তে চান। এ ভাবেই তিনি স্মরণীয় হয়ে থাকতে চান।” তবে অভিনেতার বক্তব্য নতুন সংসদ ভবন নিয়ে নয়। তিনি বললেন, “পুরনো সংসদ ভবনের ১০০ বছর বয়স হয়েছিল। তাই নতুন আর একটা ভবন যে প্রয়োজন ছিল, সেটা বুঝতে পারছি। কিন্তু তাই বলে ঘটা করে যে উৎসবটা হল, সেটার গুরুত্ব বুঝলাম না। সব কিছুর মধ্যেই একটা ধর্মীয় প্রচার চালানোর চেষ্টা ছাড়া কী?”
নাসিরুদ্দিন এর পর মনে করিয়ে দেন যে, দেশ ধুঁকছে। সব অর্থ যদি অনুষ্ঠানে নিঃশেষিত হয়ে যায় তা হলে দেশের হাল ফিরবে কী ভাবে? নাসিরের কথায়, “ইংল্যান্ডের রাজা যেমন বিশপ পরিবৃত হয়ে আসেন, তেমন আপনিও যদি হাতে রাজদণ্ড নিয়ে পুরোহিতদের সঙ্গে আসেন, তা হলে কি সেটা মানায়? আমাদের দেশের তো সেই পরিকাঠামো নেই!”
নতুন সংসদ ভবন গণতন্ত্রের প্রতীক হয়ে আদৌ থাকবে কি না, তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করলেন অভিনেতা। তাঁর মতে, দেশ থেকে খুল্লমখুল্লা প্রোপাগান্ডা কিংবা মুসলিম বিদ্বেষ দূর হওয়ার কোনও লক্ষ্মণ দেখছেন না। বরং মুসলিমদের ঘৃণা করাই দেশের ‘ফ্যাশন’ হয়ে গিয়েছে বলে মনে করছেন নাসির। সেই আবহে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে এটি একটি বড় চাল বলেই মনে করছেন অভিনেতা।
প্রসঙ্গত, পুরনো সংসদ ভবনের পাশেই নতুন ভবন তৈরি করা হয়েছে। প্রায় সাড়ে ৬৪ হাজার বর্গ মিটার জায়গার উপর গড়ে উঠেছে ত্রিভুজাকৃতি চারতলা ভবনটি। মোট ৩টি দরজা রয়েছে। এগুলির নাম— জ্ঞানদ্বার, শক্তিদ্বার ও কর্মদ্বার। নতুন ভবনে লোকসভা, রাজ্যসভা, সেন্ট্রাল লাউঞ্জ, সংসদীয় কর্তৃপক্ষের কার্যালয়, কনস্টিটিউশন হল, গ্রন্থাগার, ডাইনিং রুম রয়েছে, পর্যাপ্ত গাড়ি রাখার ব্যবস্থাও রয়েছে। জাতীয় পাখি ময়ূরের আদলে তৈরি হয়েছে লোকসভা। রাজ্যসভা তৈরি হয়েছে জাতীয় ফুল পদ্মের আদলে। দুই কক্ষ মিলিয়ে মোট ৩৫ হাজার বর্গফুট মেঝেতে যে কার্পেট বিছানো হয়েছে, তা তৈরি করেছে দেশের ১০০ বছরের পুরনো কার্পেট প্রস্তুতকারী সংস্থা ‘ওবিতি কার্পেট’, যার বর্তমান কর্ণধার বঙ্গসন্তান রুদ্র চট্টোপাধ্যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy