সোহিনী সেনগুপ্তের নির্দেশনায় ‘রানী কাদম্বিনী’ মঞ্চস্থ হবে ২৩ ডিসেম্বর, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়। সংগৃহীত
দেখতে দেখতে ৩৯ বছরে পা দিল নান্দীকার জাতীয় নাট্যমেলা। আগামী ২০ ডিসেম্বর থেকে ২৫ ডিসেম্বর অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস-এর মঞ্চে চলবে নাট্যোৎসব। পরম্পরা অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন নাট্যদল এতে অংশ নিলেও এ বারের মূল আকর্ষণ বাংলাই।
বেশি অর্থ ব্যয় করলেই কি দূর রাজ্য থেকে ভাল নাটক আনা যায়? তার চেয়ে ঘরোয়া আমেজেই কী ভাবে বিশেষ হয়ে ওঠা যায়, অতিমারির ধকল সামলে তারই খোঁজে ‘নান্দীকার’। পরিচালক সোহিনী সেনগুপ্ত এবং সপ্তর্ষি মৌলিকের মতে, একেবারে কিছু না হওয়ার চেয়ে অল্প আয়োজন মন্দ কী! তবু যে পাঁচ দিনের উৎসব করা যাবে, এ-ই অনেক।
জানালেন, বাজেট সীমিত। নিজেদের পকেট থেকেই বেশির ভাগ আয়োজন করতে হচ্ছে। তবু বাংলার মানুষের থিয়েটার নিয়ে উৎসাহ আছে বলেই বাকি কাজ সহজ হয়ে যায়। পাশে রয়েছে বাংলার এতগুলি নাট্যদল। দশে মিলে ঠিক কাজ হয়ে যাবে তাই। ‘নান্দীকার’-এর অগ্রজ নাট্যব্যক্তিত্ব রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত সবেতেই উৎসাহ দেন। সপ্তর্ষি মৌলিক আনন্দবাজার অনলাইনকে বললেন, “এই প্রথম জেলার নাটক থাকছে ফেস্টিভ্যালে। ঘরের কাছেই নতুন নতুন ভাবনাচিন্তা হচ্ছে যখন, সেগুলোও তো তুলে ধরা আবশ্যক। আটচল্লিশটি দলকে সঙ্গী করে ‘নদীয়া নাট্য’-এর প্রযোজনায় ‘চৈতন্য বিমঙ্গল’-এর মতো ব্যতিক্রমী নাটক এ বার দেখা যাবে নাট্যোৎসবের মঞ্চে।” সেই নাটক মঞ্চস্থ হবে ২৪ ডিসেম্বর দুপুর ৩ টেয়।
রয়েছে আর এক অমোঘ আকর্ষণ। বহু বছর পর আবারও নান্দীকার জাতীয় নাট্যমেলায় যোগ দিচ্ছেন গৌতম হালদার। তাঁর দল ‘নয় নাটুয়া’র তরফে মঞ্চস্থ হবে জনপ্রিয় প্রযোজনা ‘মৈমনসিংহ গীতিকা’। সেও বাঙালির সংস্কৃতির প্রাচীন ঐতিহ্যেরই উদ্যাপন।
নিমন্ত্রিত নাট্যগোষ্ঠীর তালিকায় বাইরের রাজ্যের দল রয়েছে একটিই। তা-ও বাংলার কোল ঘেঁষেই। বিহারের পরিচালক দিনকর শর্মার প্রযোজনায় হিন্দি নাটক ‘টিকিটও কা সংগ্রহ’ মঞ্চস্থ হবে ২৪ ডিসেম্বর।
নিমন্ত্রিতের তালিকায় রয়েছে কলকাতার জনপ্রিয় দল ‘ইচ্ছেমতো’। সৌরভ পালোধীর নির্দেশনায় ‘ঘুম নেই’ মঞ্চস্থ হবে উৎসবের তৃতীয় দিনে, অর্থাৎ ২২ ডিসেম্বর। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়। থাকছে দমদমের ‘সংস্তব’ নাট্যদলের জনপ্রিয় প্রযোজনা ‘উড়ন্ত তারাদের ছায়া’ও। ২১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় দেখা যাবে সেই নাটক।
সর্বোপরি, নান্দীকারের নিজস্ব প্রযোজনায় চারটি নাটক থাকছে এ বারের উৎসবে। সোহিনী সেনগুপ্তের নির্দেশনায় ‘রানী কাদম্বিনী’ মঞ্চস্থ হবে ২৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়। উৎসবের শেষ দিন, অর্থাৎ ২৫ ডিসেম্বর মঞ্চ মাতাবে শুধুই ‘নান্দীকার’। সকাল ১০টা থেকে শুরু করে রাত ৯টা, পুরনো-নতুনের সমাহারে রয়েছে একগুচ্ছ প্রযোজনা। সপ্তর্ষির নির্দেশনায় ‘এক থেকে বারো’ এবং সোহিনীর নির্দেশনায় ‘মানুষ’ এ দিনের বিশেষ আকর্ষণ।
সোহিনী বললেন, “সর্বভারতীয় স্তরে আগের মতো অসাধারণ প্রযোজনা আর তেমন বোধ হয় হচ্ছে না। অন্য দিকে পশ্চিমবঙ্গে কলকাতা শহরে ও শহরতলিতে অসামান্য কাজ হচ্ছে।” তাঁর মতে, সারা ভারতের নিরিখে পশ্চিমবঙ্গের থিয়েটারেই এই মুহূর্তে সেরা কাজ হচ্ছে।
তাঁর আক্ষেপ, মুম্বইয়ের তারকাখচিত থিয়েটারের দলগুলি যে বিপুল অর্থ দাবি করে, তা ‘নান্দীকার’-এর পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। নাট্যমেলার আয়োজনে এর আগেও ঘর থেকে রুদ্রপ্রসাদ-স্বাতীলেখাকে টাকা দিতে হয়েছে বলে জানালেন তিনি। সরকারি সাহায্যের ব্যাপারেও সোহিনী তেমন আশাবাদী নন। তা ছাড়া, বিভিন্ন নাট্যদলকে ভিডিয়ো জমা দিতে বলা হয়েছিল নাট্যোৎসবের জন্য। খুব ভাল প্রযোজনার সন্ধান সেখানেও মেলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy