Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Movie Review

ঠগিরা ঠকালেও মান রাখলেন আমির-অমিতাভ

একের পর এক স্বাধীন রাজা ও তাঁদের সাম্রাজ্য ইংরেজের পায়ের তলায় লুটিয়ে পড়ে। তবে কেউ কেউ ছিলেন নাছোড়বান্দা। তাঁদের রক্তে ছিল আজাদি।

আমিরের পরিমিত অভিনয়ই একমাত্র প্রাপ্তি।

আমিরের পরিমিত অভিনয়ই একমাত্র প্রাপ্তি।

অময় দেব রায়
শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৮ ১৯:৫৩
Share: Save:

ছবি: থাগস অব হিন্দুস্তান

পরিচালক: বিজয়কৃষ্ণ আচারিয়া

অভিনয়: অমিতাভ বচ্চন, আমির খান, ক্যাটরিনা কাইফ, ফতিমা সানা শেখ

সময় ১৭৯৫।ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এসেছিল বাণিজ্য করতে। বদলে ক্রমশ গ্রাস করতে থাকে ভারতবর্ষ। একের পর এক স্বাধীন রাজা ও তাঁদের সাম্রাজ্য ইংরেজের পায়ের তলায় লুটিয়ে পড়ে। তবে কেউ কেউ ছিলেন নাছোড়বান্দা। তাঁদের রক্তে ছিল আজাদি। অতএব যুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী।গল্প গড়পড়তা এই।আয়োজনে কোনও খামতি নেই।শ’য়ে শ’য়ে যুদ্ধজাহাজ, সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস, ভরপুর অ্যাকশন, ভিএফএক্সের কারিকুরি—কী নেই! যদিও হলিউডি স্পেক্টাকলের কাছে এ সব নস্যি, তবু অমিতাভের জলদগম্ভীর কণ্ঠের সততা ও বিশ্বাসের বাণী,পাশাপাশি আমিরের দুষ্ট স্বরের শঠতার মিশ্রণেও শেষ রক্ষা হল না! গল্পের গরু মাঝে মধ্যে গাছে চড়ে জানতাম, কিন্তু ঠগিদের গল্প যে এমন মগডালে চেপে বসে থাকে কে জানত!

রৌনকপুরের স্বাধীন রাজা মির্জা ইংরেজের দাবি মেনে নিতে অসম্মত ছিলেন। ফলত, রাজা ও তাঁর পরিবারকে নৃশংস ভাবে হত্যা করেন ক্লাইভ। বেঁচে যায় রাজার একমাত্র শিশুকন্যা জাফিরা (ফতিমা সানা শেখ)। চিলের মতো ছোঁ মেরে তাকে উদ্ধার করে খুদাবক্স(অমিতাভ বচ্চন)। এখানে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন আসে, কে এই ক্লাইভ? ইতিহাস বইয়ে পড়া সেই অতি পরিচিত লোকটি? কিন্তু তিনি ১৭৯৫-এ কোথায়? তবে কি তিনি চিত্রনাট্যকারের কল্পনাপ্রসূত? উত্তর অজানা!

একদিকে খুদাবক্স, অন্যদিকে ফিরিঙ্গি মল্লা(আমির খান)। খুদাবক্স বিশ্বাস করেন, স্বাধীনতা কোনও স্বপ্ন নয়,স্বাধীনতা একটা জোরালো বিশ্বাস। এই বিশ্বাসে ভর করেই তিনি তাঁর নিজস্ব মহল্লা গড়ে তুলেছেন। যেখানে বিশ্বাসঘাতকতার শাস্তি মৃত্যু। বিপরীতে দাঁড়িয়ে ফিরিঙ্গি মল্লা। কারণ, শঠতাই তাঁর রক্ষাকবচ। বিশ্বাসঘাতকতাই তাঁর সম্পদ। কিন্তু খুদাবক্সের জোরালো বাণী আর উগ্র জাতীয়তাবাদের পাকেচক্রে তিনিকি একজোট হয়ে ইংরেজ বিরোধী লড়াইয়ে নামবেন? নাকি ইতিহাসে বিশ্বাসঘাতক হিসেবেই চিহ্নিত হবেন? উত্তর মিলবে হলে। কিন্তু উত্তর মিলবে না ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির প্রধান কেন হঠাৎ দশেরা উৎসবে মেতে রাবণ বধে উন্মুখ হবেন? আর কেনই বা ছবির শেষে তাঁদেরই রাবণ বানিয়ে দেওয়া হবে! শুধুই কি দেশজোড়া উগ্র জাতীয়াতাবাদের বাতাবরণে আরও খানিক ইন্ধন দিতে? জানা নেই! জানা নেই, যুদ্ধের শেষ দিকে ক্লাইভের একান্ত বিশ্বস্ত অনুচরও কেন দল বদল করে বসেন! এক প্রকার মরে গিয়েও কোন এক অলৌকিক উপায়ে অমিতাভকে আবার কেন ফিরিয়ে আনতেই হবে? শুধুমাত্র হিরোইক সমাপতনের উদ্দেশ্যে? না, জানা নেই!

আরও পড়ুন: বিয়ে করছেন সুস্মিতা সেন?​

আরও পড়ুন: দেওয়ালি সেলিব্রেশনে মন খারাপ সোনালির…​

তবে হ্যাঁ, প্রাপ্তি বলতে আমিরের পরিমিত অভিনয়। একদিকে দর্শককে কমেডি করে মজা দেওয়ার পাশাপাশি পর্দার চরিত্রদের বিশ্বাস অর্জন। এ মোটেই সহজ কাজ নয়! এর জন্য অভিনয়ে যে ভারসাম্য প্রয়োজন আমির তাতে অনবদ্য। অমিতাভ এ বয়সেও যে লম্ফঝম্ফ দেখালেন তাকে সেলাম ঠুকতেই হয়। ফতিমার সাবলীলতার অভাব নজরে এল। ক্যাটরিনার অঙ্গ সঞ্চালন এখানেও বড় নিষ্প্রাণ!

তবে ছবি যা-ই হোক, বলে রাখা ভাল, হলে সিটির কোনও কমতি ছিল না!

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE