আদিত্য রায় কপূর ও দিশা পাটনি
ছবি: মলং
অভিনয়: আদিত্য রায় কপূর, দিশা পাটনি, অনিল কপূর, কুনাল খেমু
পরিচালনা: মোহিত সুরি
গোয়ার সাগরতটে উদ্দাম যৌবনের উদযাপন আছে। সমান্তরালে আছে শিহরন জাগানো পরপর খুন। গল্পের তরী তবুও ডুবতে পারত প্রথমার্ধ্বের কিছুটা দায়সারা বুননে। বেঁচে গেল শুধু অনিল কপূর, আদিত্য রায় কপূর এবং কুনাল খেমুর একে অন্যকে টেক্কা দেওয়া অভিনয়ের দাপটে। যার সঙ্গতে রইল গল্পের মোড় ঘোরানো কিছু বাঁক। আর শেষপাতে ক্লাইম্যাক্সের চমকে শেষমেশ থ্রিলার হিসেবে পাশ নম্বর পেয়ে গেল যশরাজের ব্যানারে মোহিত সুরি-র ছবি ‘মলং’।
উর্দু, পঞ্জাবি, আফগানি, পার্শি— নানা ভাষায় নানা অর্থে ব্যবহৃত ‘মলং’ শব্দে মূলত বোঝানো হয় লাগামছাড়া উন্মাদনা, নেশা বা উদ্দামতা। এ ছবির নাম হিসেবে তার ব্যবহারও সেই অর্থেই। কারণ, রোম্যান্স-অ্যাকশন-সাসপেন্স-থ্রিলারের পাঁচমিশেলি এ ছবির গল্প বোনার সুতো হয়ে থেকেছে উন্মাদনা আর ড্রাগের নেশাই।
ছবির শুরুতে জেলের কয়েদিদের তুমুল মারামারির অনর্থক লম্বা দৃশ্যে আত্মপ্রকাশ অদ্বৈত ঠাকুরের (আদিত্য রায় কপূর)। যে লড়াইয়ের কেন্দ্রবিন্দু একটি ব্রেসলেট। পরে জানা যাবে, সে ব্রেসলেট আসলে অদ্বৈতর প্রেমিকা সারা-র (দিশা পাটনি)। পেশিবহুল সুঠাম চেহারায় আদিত্যকে দর্শকের চোখের সামনে দাঁড় করানো ছাড়া গল্পে এ দৃশ্যের অবশ্য তেমন কোনও ভূমিকা ছিল না। ঠিক তেমনই পরের কয়েকটি অহেতুক লম্বা দৃশ্যে দর্শকের পরিচয় হয় মাদকাসক্ত, আইনের তোয়াক্কা না করা পুলিশ অফিসার আঞ্জনে আগাসে (অনিল কপূর) এবং আইন মেনে চলা, ব্যক্তিগত জীবনে অসুখী দাম্পত্যের শিকার আর এক পুলিশ অফিসার মাইকেল রডরিগসের। এডিটিং কিছুটা টানটান করে গল্পের গতি বাড়ানো যেতেই পারত হয়তো। সে পথে অবশ্য হাঁটেনি এ ছবি। তবে হ্যাঁ, ভাল লেগেছে গোয়ার চোখজুড়নো লোকেশনে, জমকালো পার্টির দৃশ্যে মনভরানো সিনেম্যাটগ্রাফি।
‘মলং’-ছবির একটি গানের দৃশ্যে আদিত্য রায় কপূর
প্রথমার্ধের বাকিটুকু অদ্বৈতের হাতে পরপর পুলিশ অফিসারদের খুন এবং তার ঠিক আগে নিয়ম করে আগাসে-কে জানান দিতে থাকা পরবর্তী খুনটি হতে চলেছে। এবং সে ভাবেই তৃতীয় খুনের পরে নিজেই আগাসের কাছে আত্মসমর্পণ করে পুলিশের হেফাজতে চলে গিয়েছে অদ্বৈত। সে খুনগুলোতে চোরপুলিশ খেলা, খুন রুখে দিতে পুলিশের প্রাণপণ ছুট থাকলেও চমক হয়ে ওঠেনি সে ভাবে। বরং প্রত্যাশিতই লেগেছে খানিক।
আরও পড়ুন: ডিসেম্বরেই বিয়ে করছেন আলিয়া-রণবীর
এরই ফাঁকেফোকরে গল্প চলে গিয়েছে ফ্ল্যাশব্যাকে। গোয়ার সৈকতে, রেভ পার্টির উন্মাদনায় তখনই আলাপ এবং প্রেম অদ্বৈত-সারার। লন্ডন থেকে এ দেশে পা-রাখা সারা জীবনের সব রকম ভয়কে জয় করতে চায় অ্যাডভেঞ্চারের হাত ধরে। তা সে ড্রাগের নেশাতেই হোক, উদ্দাম যৌনতায় কিংবা অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসে। ভয়কে জয় করার এই এক একটা ধাপের সাক্ষী হয়ে থাকে তার হাতের ব্রেসলেট। ভাল লাগা থেকে ক্রমশ প্রেমে গড়ানো সম্পর্কে তার পরেই এক্কেবারে ‘জিন্দেগী না মিলেগি দোবারা’র ঢং-এ অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসে (এমনকী একই ধাঁচের কিছু দৃশ্যে-সংলাপেও) একের পর এক ভয়কে জয় করার পালা দু’জনের।
ছবির প্রথম ভাগে এমন ছড়িয়েছিটিয়ে থাকা গল্পের নৌকোয় শেষমেশ হাল ধরে দ্বিতীয় ভাগ। তার পরেই গতি ফেরে পরপর ট্যুইস্টে। আর তাতেই পেঁয়াজের খোসার মতো ধাপে ধাপে খুলে আসে চেনা চরিত্রগুলোর অচেনা মুখ। এবং একেবারে শেষে সপাটে আসা চমকটা অন্তত একটানে বাড়িয়ে দেয় থ্রিলারের নম্বর।
আরও পড়ুন: নিজের জন্মের সময়ের মিলিন্দের ন্যুড ফোটোশুট দেখে অঙ্কিতা বললেন...
অভিনয়ের মুন্সিয়ানায় এই বয়সেও আদিত্যর সতেজ গ্ল্যামারকে সমানে টেক্কা দিয়ে গিয়েছেন অনিল কপূর। মাদকের টান, আইন ভাঙার ক্রুরতার সঙ্গেই সমানতালে দায়িত্বশীল সিনিয়র এবং স্নেহাতুর বাবার মিশেলে কোথাও কোথাও খানিকটা যেন ম্লান করে দিয়েছেন আদিত্যর অপরাধী-সুলভ শীতলতা এবং রোম্যান্স-সেক্স অ্যাপিলের মারকাটারি যুগলবন্দিকেও। টানটান, মাপা অভিনয়ে নজর কেড়েছেন কুনাল খেমুও। উদ্দামযৌবনা অথচ পাশের বাড়ির মেয়ের সারল্যে বেশ মিষ্টি লেগেছে সুন্দরী দিশাকেও।
সবটুকু যোগ করে মন্দ লাগে না তেমন। এক বার দেখেই ফেলতে পারেন ছবিটা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy