Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Borunbabur Bondhu

মুভি রিভিউ ‘বরুণবাবুর বন্ধু’: প্রসাধন ছাড়া আয়নার সামনে দাঁড়াবার জন্য ছবিটি দেখার প্রয়োজন

এটি কি একটি রাজনৈতিক ছবি?নিটোল প্রেমের গল্প?সামাজিক,পারিবারিক দলিল?

স্বাভাবিক অভিনয় এই ছবির অন্যতম সম্পদ।

স্বাভাবিক অভিনয় এই ছবির অন্যতম সম্পদ।

ঊর্মিমালা বসু
শেষ আপডেট: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৯:৫৪
Share: Save:

অদ্ভুত একটা সমাপতন।ঠিক যে সময় দেশের রাজধানী জ্বলছে, দেশের প্রধানতম রক্ষক পূর্বনির্ধারিত মাননীয় বৈদেশিক প্রতিনিধিকে আপ্যায়নে ব্যস্ত, ঠিক সেই সময় এলেন বরুণবাবুর বন্ধু। অনেক কিছু শিক্ষা দিলেন।দাঙ্গা বিধ্বস্ত অঞ্চল রক্ষার জরুরি মিটিং বাল্যবন্ধু সন্দর্শনের চেয়ে অধিকতর প্ৰয়োজন। দেশের কোটি কোটি মানুষের উনকোটি সমস্যা সমাধানই যাঁর কর্তব্য, বালখিল্যতা তাঁকে মানায় না।
অনীক দত্ত পরিচালিত ‘বরুণবাবুর বন্ধু’ দেখার পর প্রাথমিক অভিব্যক্তি, ‘বাহ! চমৎকার!’ কেন? এটি কি একটি রাজনৈতিক ছবি? নিটোল প্রেমের গল্প? সামাজিক, পারিবারিক দলিল?
পারিবারিক নিশ্চয়ই, খুব চেনা চৌহদ্দিতে একটি অধুনা, প্রায় অচেনা হয়ে যাওয়া মূল্যবোধ সম্পন্ন মানুষের গল্প। তার পরতে পরতে জড়িয়ে আছে প্রাত্যহিক জীবনের ভাল-মন্দ,সুখ-অসুখ, প্রেম-অপ্রেম।এতই চেনা, এত স্বাভাবিক যে. ছবি দেখতে দেখতে কোথাও ধাক্কা লাগে না,আরোপিত মনে হয় না কিছু।

ছবির একটি দৃশ্য।

আরও পড়ুন: জরুরি একটা থাপ্পড়​

আরও পড়ুন: গাইনিকলজিস্টের চরিত্রে আয়ুষ্মান​

প্রবীণ বরুণবাবু আর তাঁর স্ত্রীর দীর্ঘ দাম্পত্য জীবনের বিবিধ শাখা প্রশাখা তাদের বিস্তার, বিবাদ বিষমবাদে এই মূল্যবোধ সম্পন্ন মানুষটির মূল্য প্রায় শূন্য। যেমন হয়ে থাকে সংসারে। কিন্তু তাঁকে উপড়ে ফেলা যায় না, এমনই তাঁর আত্মশ্লাঘা এবং সম্মান বোধ।এই বিজনে তাঁর সঙ্গী তাঁর নাতি আর বাল্যবন্ধু সুকুমার। এমনিতেই জমিয়ে কুলপি করে দেওয়ার উপাদান ছবিটিতে নেই। তাই গল্প ফাঁস করে দিয়ে দর্শকদের উৎসাহ নষ্ট করতে চাইনা। শুধু বলি,বরুণবাবু আজকের পৃথিবীতে দুর্লভ এবং বিশেষ দরকারি একটি চরিত্র।তাঁকে অসামান্য দক্ষতার সঙ্গে একটি রক্তমাংসের মানুষ হিসেবে চিত্রায়িত করেছেন পরিচালক।অনুসরণীয় বিষয়গুলি গল্পের সঙ্গে এমন সহজে আনা হয়েছে যে, কোথাও জ্ঞান বলে মনে হয়নি। অসাধারণ বুদ্ধিদীপ্ত সংলাপ, একবার শুনলে মন ভরে না। আর কি সাট্‌ল, সূক্ষ্ম বললে সবটা বলা হয়না। সরকারি কর্মচারীর ডিএ নিয়ে ঘেউঘেউ আছে, আছে ‘কেন কি’র দৌরাত্ম্য, রঙিন ধুতির বাড়াবাড়ি আর নির্বিশেষ সুঅভিনয়। সুকুমারের (পরান বন্দ্যোপাধ্যায়) চিঠি পড়া,বরুণবাবুর স্ত্রীর (মাধবী মুখোপাধ্যায়) মৃত্যুর দৃশ্যে স্বামীর হাত ধরা, বরুণবাবুর (সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়) বিভিন্ন অবস্থায় কায়িক, বাচিক অসামান্য অভিব্যক্তি,আর তাঁর পরিবারের বিভিন্ন সদস্যের (ঋত্বিক, কৌশিক সেন, বিদীপ্তা, দেবলীনা,অর্পিতা, শ্রীলেখা, অলকানন্দা রায়, বরুণ চন্দ, পাড়ার দাদা, নাতিবাবু) অনায়াস, স্বাভাবিক অভিনয় এই ছবির অন্যতম সম্পদ।রবীন্দ্রসঙ্গীতের ব্যবহার সুপ্রযুক্ত।
বরুণবাবুর বাড়ির নরম আলোটি অন্দরমহলের প্রতিভূ মনে হয়। শেষ দৃশ্যটি কালোত্তীর্ণ।
মাঝে মাঝে প্রসাধন ছাড়া এমনিই একটু আয়নার সামনে দাঁড়াবার জন্য ছবিটি হলে গিয়ে দেখার প্রয়োজন আছে। অন্য ধারার এই বিশেষ ছবিটির জন্য পরিচালক অনীক দত্ত এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে সাধুবাদ জানাই।

অন্য বিষয়গুলি:

Borunbabur Bondhu Cinema Movie Tollywood
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy