Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Batla House

মুভি রিভিউ ‘বাটলা হাউজ’: গদগদ দেশভক্তি ছবিটিকে গিলে খায়নি

পনেরোই অগস্টের সকালে এই ছবি ভারতীয় জাতীয়তাবাদে কিঞ্চিৎ সুড়সুড়ি দেওয়ায় চেষ্টা করলেও সেই রকম গদগদ দেশভক্তি ছবিটিকে গিলে খায়নি। বরং থ্রিলার হিসেবে বেশ টানটান চিত্রনাট্যের জন্য পরিচালক নিখিল আডবাণীর সাধুবাদ প্রাপ্য।

বাটলা হাউজে জন আব্রাহাম এবং অন্যান্যরা

বাটলা হাউজে জন আব্রাহাম এবং অন্যান্যরা

বুবুন চট্টোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৯ ১৮:০৯
Share: Save:

অভিনয়: জন আব্রাহাম, ম্রুনাল ঠাকুর, রবি কিসান

পরিচালক: নিখিল আডবাণী

ইন্ডিয়ান মুজাহিদদের বিরুদ্ধে দিল্লি পুলিশের হঠাৎ অপারেশনে দু’জন জঙ্গি মারা যায়, দু’জন আহত হয় এবং এক জন পালিয়ে যায়। এই এনকাউন্টারের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ ইনস্পেকটর কে কে-র মৃত্যু হয়। মহল্লার মানুষের ধারণা হয়, বাটলা হাউজের ওই ফ্ল্যাটে পার্শ্ববর্তী ওখলা ইউনিভার্সিটির নিরীহ ছাত্রদের দুষ্কৃতী সন্দেহে পুলিশ শুধু শুধু মারল। প্রতিবাদে স্থানীয় মানুষ দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। পাশাপাশি সাংবাদিক, টিভি চ্যানেলও নিরীহ ছাত্রদের উপর অত্যাচারের জবাব চায়। এই রকম একটি উত্তাল অবস্থায় খুব স্বাভাবিক ভাবেই রাজনীতির উপর মহল থেকেও দিল্লি পুলিশের উপর চাপ দেওয়া হয় এবং ধৃত দুই জঙ্গিকে নিরীহ ছাত্র হিসেবে ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এই এনকাউন্টারের মূল দায়িত্বে ছিলেন ইনস্পেক্টর সঞ্জয় কুমার ওরফে জন আব্রাহাম। তিনি হাল ছাড়তে নারাজ। তিনি শেষ অবধি দেখতে চান এবং প্রমাণ করতে চান, যে দু’জন ছাত্র মারা গেছে এবং যে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে তারা সকলেই ইন্ডিয়ান মুজাহিদের ট্রেনিংপ্রাপ্ত জঙ্গি। কিন্তু কিছু ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধির জন্য রাজনীতির ওপর মহল থেকে জন আব্রাহাম অভিনীত ইনস্পেক্টর সঞ্জয় কুমারকে প্রবল ভাবে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। সেই সরকারি প্রতিরোধ টপকে, রাজনীতির কূটচাল ডিঙিয়ে জন আব্রাহাম কী ভাবে প্রমাণ করলেন বাটলা হাউসের নিরীহ ছাত্রেরা আদৌ কেউ নিরীহ ছিল না। বরং সকলেই জঙ্গি। সেই কাহিনি নিয়েই এই সিনেমা।

পনেরোই অগস্টের সকালে এই ছবি ভারতীয় জাতীয়তাবাদে কিঞ্চিৎ সুড়সুড়ি দেওয়ায় চেষ্টা করলেও সেই রকম গদগদ দেশভক্তি ছবিটিকে গিলে খায়নি। বরং থ্রিলার হিসেবে বেশ টানটান চিত্রনাট্যের জন্য পরিচালক নিখিল আডবাণীর সাধুবাদ প্রাপ্য। ইনস্পেক্টর সঞ্জয় কুমারের চরিত্রে জন আব্রাহাম অসম্ভব পরিণত অভিনয় করেছেন। এই চরিত্রে জন আব্রাহামকে নির্বাচন ভীষণ ভাবে উপযুক্ত মনে হয়েছে। জনের স্ত্রীর চরিত্রে ম্রুনাল ঠাকুর যথাযথ। তবে কাহিনিতে তাদের দাম্পত্য কলহটি দেখানোর কোনও প্রয়োজন ছিল বলে মনে হয় না। সন্ত্রাস এবং হিংসাও যতটা প্রয়োজন পরিচালক ততটাই দেখিয়েছেন। কাজেই পরিবারের সকলে বসে এই ছবি দেখাই যেতে পারে।

ইনস্পেক্টর সঞ্জয় কুমারের চরিত্রে জন আব্রাহাম

বাস্তবে যা হয়েছিল ২০০৮-এর ১৩ সেপ্টেম্বর দিল্লির বিভিন্ন অঞ্চলে কিছু এলোপাথাড়ি বিস্ফোরণ হয়। এই ঘটনায় বেশ কিছু লোকের মৃত্যু হয়। ওই বছরেরই ১৯ সেপ্টেম্বর দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চের ইনস্পেক্টর সঞ্জীব কুমার যাদবের নেতৃত্বে দিল্লির জামিয়া নগরের ১৮/এ বাটলা হাউসের আবাসিকদের উপর পুলিশ আচমকা হামলা চালায়। এই হামলায় দু’জন জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয় এবং এক জন পালিয়ে যায়। যদিও ইনস্পেক্টর মোহনচাঁদ শর্মার মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় সে সময় জামিয়া মিলিয়া ইউনিভার্সিটির ছাত্রছাত্রী এবং শিক্ষকেরা দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামেন এবং দু’টি নিরীহ ছেলের উপর অত্যাচার হয়েছে বলে গর্জে ওঠেন। পুরো ঘটনাটি ‘অপারেশন বাটলা হাউস’ হিসেবে কুখ্যাত।

অন্য বিষয়গুলি:

Batla House John Abraham Bollywood Celebrities
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy