কেন তাঁর মাথায় সেরা-র তাজ বসল না? তার জন্য মধু দায়ী করেন প্রশ্নোত্তর রাউন্ডকেই। তাঁর কথায়, তাঁদের বলা হয়েছিল তাঁরা যেটা ঠিক মনে করছেন, সে কথাই যেন উত্তরে বলেন। উত্তর পলিটিক্যালি কারেক্ট করার কোনও প্রয়োজন নেই।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০২০ ১২:৫৮
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৬
খেলাধুলো আর মডেলিং চলছিল হাত ধরাধরি করেই। তার মধ্যে জীবনের একটা পর্বে মডেলিং-ই বেশি প্রাধান্য পেল। মডেলিং থেকে বিশ্বসুন্দরীর মঞ্চ। অন্ধেরীর এক সাধারণ মেয়ে মধু সাপ্রের জীবন তাক লাগিয়ে দেওয়ার মতোই।
০২১৬
পুরো নাম মধুশ্রী। জন্ম ১৯৭১ সালের ১৪ জুলাই। মুম্বইয়ের অন্ধেরীর সাধারণ পরিবারে জন্ম। বড় হওয়াও আটপৌরে ভাবেই। লোকাল ট্রেনে যাতায়াত, রাস্তার খাবার খাওয়া— সবই ছিল জীবনের অঙ্গ।
০৩১৬
নব্বইয়ের দশকে মডেলিংয়ের দুনিয়ায় পরিচিতি পান মধু। ১৯৯২ সালে তিনি মিস ইউনিভার্সের মঞ্চে ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন। দ্বিতীয় স্থান পান। অথচ বিজয়িনী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে ছিলেন তিনি-ই।
০৪১৬
কেন তাঁর মাথায় সেরা-র তাজ বসল না? তার জন্য মধু দায়ী করেন প্রশ্নোত্তর রাউন্ডকেই। তাঁর কথায়, তাঁদের বলা হয়েছিল তাঁরা যেটা ঠিক মনে করছেন, সে কথাই যেন উত্তরে বলেন। উত্তর পলিটিক্যালি কারেক্ট করার কোনও প্রয়োজন নেই।
০৫১৬
তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী হলে দেশে কী কী পরিবর্তন আনবেন? মধু উত্তরে বলেছিলেন, তিনি ক্রীড়াক্ষেত্রে আরও সুযোগ সুবিধে আনার চেষ্টা করবেন।
০৬১৬
কারণ তাঁর মনে হয়েছিল, তিনি প্রধানমন্ত্রী হলেই এত বছরের দারিদ্র হঠাৎ চলে যাবে না। তা ছাড়া, এক জন খেলোয়াড় হিসেবে নিজের জীবনের সমস্যার কথা তাঁর মনে ছিল।
০৭১৬
মধুর মনে হয়েছিল, তাঁর ইংরেজি বলতে না পারার দুর্বলতার জন্য তিনি নিজের বক্তব্য ভাল করে পেশ করতে পারেননি। তবে বিজয়িনী হতে না পারায় মডেলিংয়ের কেরিয়ার কিছু ব্যাহত হয়নি।
০৮১৬
নিজের সময়ে মধু ছিলেন দেশের সেরা মডেলদের মধ্যে এক জন। কেরিয়ারে সাফল্যের পাশাপাশি এসেছে বিতর্কও। সুপারমডেল মিলিন্দ সোমানের সঙ্গে তিনি নগ্ন হয়ে মডেলিং করেন।
০৯১৬
জুতোর সেই বিজ্ঞাপনে ব্যবহার করা হয়েছিল অজগর সাপ। ফলে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে মিলিন্দ, মধু, বিজ্ঞাপন সংস্থা এবং ওই জুতো প্রস্তুতকারী সংস্থার বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়। ১৪ বছর মামলা চলার পরে আদালত রেহাই দেয় অভিযুক্তদের।
১০১৬
২০০১ সালে মধু বিয়ে করেন ইটালীয় ব্যবসায়ী জিয়ান মারিয়া এমেনদাতোরিকে। তার পর থেকে মধুর ঠিকানা ইটালির পূর্ব উপকূলে রিসিওয়ান শহরে। সেখানেই স্বামী আর মেয়েকে নিয়ে থাকেন অতীতের এই ডাকসাইটে মডেল।
১১১৬
যে মধু একসময় ইংরেজি বলতে হোঁচট খেতেন, এখন তিনি হিন্দি-মরাঠি-ইংরেজির পাশাপাশি ঝরঝর করে বলেন ইটালিয়ানও। একমাত্র মেয়ে ইন্দিরাকেও মরাঠি শেখানোর চেষ্টা করছেন।
১২১৬
মেয়েকে একাই বড় করেছেন মধু। তাঁর স্বামীকে ব্যবসার কাজে নানা জায়গায় ঘুরতে হয়। ফলে মধু নিজে বাড়িতে থেকেছেন মেয়ের জন্য। তিনি চাননি অন্য কারও কাছে মেয়ে বড় হোক।
১৩১৬
মধুর স্বামীর পারিবারিক ব্যবসা আইসক্রিমের। তা ছাড়া, বড় আঙুর বাগিচার মালিক তাঁরা। মধুর কথায়, বিয়ের পরে তিনি এখন অনেক রকম খাবার খেতে শিখেছেন।
১৪১৬
শাশুড়ি এবং দিদিশাশুড়ির কাছ থেকে শিখে জমিয়ে রান্না করেন ইটালীয় খাবার। আবার মধুর হাতের চিকেন কারি খেতেও খুব পছন্দ করেন তাঁর শ্বশুরবাড়ির পরিজনরা।
১৫১৬
ভারতের সঙ্গে যোগসূত্রও ছিন্ন হয়নি। নিয়মিত আসেন ভারতে, নিজের লোকদের কাছে। ২০০৩ সালে অভিনয়ও করেছিলেন বলিউডের ‘বুম’ ছবিতে।
১৬১৬
এখনও রাস্তার পানিপুরি আর আর ভেলপুরী না খেলে মধুর মুম্বই-সফর অসম্পূর্ণ। অতীতের গ্ল্যামারসর্বস্ব দিন ফেলে এসে ঘরোয়া ঘেরাটোপেই জীবনে উপভোগ করেছন মধু সাপ্রে।