নন্দনে তাঁর নতুন ছবি ‘অপরাজিত’ না-দেখানো নিয়ে শ্রীলেখা মিত্র, জয়জিৎ বন্দোপাধ্যায়, ইন্দ্রাশিস আচার্য-সহ এক মুঠো তারকার খুল্লমখুল্লা সমর্থন পরিচালক অনীক দত্তকে। তাঁরা প্রশ্ন তুলছেন অধুনা তৃণমূল নেত্রী তথা অভিনেত্রী সায়নী ঘোষের ভূমিকা নিয়েও।
অনীকের পাশে টলিউড?
ফের সরব হয়ে উঠল টলিউডের একাংশ। নন্দনে তাঁর নতুন ছবি ‘অপরাজিত’ না-দেখানো নিয়ে শ্রীলেখা মিত্র, জয়জিৎ বন্দোপাধ্যায়, ইন্দ্রাশিস আচার্য-সহ এক মুঠো তারকা খুল্লমখুল্লা সমর্থন করলেন পরিচালক অনীক দত্তকে। একই সঙ্গে তাঁদের প্রশ্ন, অতীতে অনীকের ‘ভবিষ্যতের ভূত’ ছবিটি মুক্তির সময় রাজ্য সরকারের ‘কোপে’ পড়েছিলেন পরিচালক। তখন প্রকাশ্যেই তাঁর পাশে ছিলেন অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ। এ বারও তিনি অনীকের ছবিতে রয়েছেন। কিন্তু একইসঙ্গে সায়নী শাসক তৃণমূলের শাখা সংগঠনের সর্বোচ্চ নেত্রীও বটে। এ বারেও নন্দন-প্রশ্নে তিনি পরিচালককে সমর্থন জানাবেন কি?
জানাবেন কি না, সেই প্রশ্ন নিয়ে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগের চেষ্টা করেছিল সায়নীর সঙ্গে। তাঁর ফোনটি বন্ধ রয়েছে। সায়নীর কোনও বক্তব্য পাওয়া গেলে সেটি অবশ্যই গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করবে আনন্দবাজার অনলাইন।
এত দিন সারা বিশ্বের সিনেমাপ্রেমীরা সত্যজিৎ রায়ের ছবি দেখেছেন। অনেকের বক্তব্য, তাঁর ছবির মাধ্যমেই প্রাথমিক ভাবে বাংলাকে চিনেছিলেন তাঁরা। শুক্রবার আরও এক বার সেই সত্যজিৎ শহর কলকাতায়। তবে তাঁর ছবির কারণে নয়। বরং তিনিই এ বার ছবির বিষয়। ছবির চরিত্র। পরিচালক অনীক তাঁর ছবিতে খ্যাতনামী পরিচালকের কর্মকাণ্ড তুলে ধরেছেন। কিন্তু ঘটনাচক্রে দেখা যাচ্ছে, অনীকের ছবিটি সরকারি প্রেক্ষাগৃহ ‘নন্দন’-এ ঠাঁই পায়নি। সেই প্রেক্ষাগৃহ, যার নামকরণ এবং নামাঙ্কন করেছিলেন সত্যজিৎ নিজে। অনীক নিজে এর কারণ জানেন না বলেই জানিয়েছেন। তবে সরকারের তরফে একটি বক্তব্য প্রকাশ্যে এসেছে। তা হল— গত ৬ মে নন্দন খুলেছে। চারটি ছবি চলছে। ২০টি ছবি অপেক্ষায় রয়েছে। এই অল্প সময়ের মধ্যে ওই চারটি ছবিকে তুলে দেওয়া সম্ভব নয়। সরকারি আধিকারিকের আরও বক্তব্য, ‘‘কার ছবি, সে বিচার সরকার করে না।’’ প্রসঙ্গত, মুক্তিপ্রাপ্ত নতুন ছবি নন্দনে জায়গা না-পেলেও সেখানে এখনও চলছে ‘অভিযান’, ‘কিশমিশ’ এবং ‘মিনি’। এর মধ্যে ‘অভিযান পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের ছবি, ‘কিশমিশ’ দেব-এর এবং ‘মিনি’ মিমি চক্রবর্তীর। এঁদের মধ্যে শেষোক্ত দু’জন শাসক তৃণমূলের সাংসদ। প্রথমজন শাসকদলের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলেই পরিচিত।
ঘটনাচক্রে, নন্দন-প্রশ্নে যাঁরা অনীকের পাশে দাঁড়িয়েছেন, প্রাাথমিক ভাবে তাঁরা শাসকদলের বিরোধী অবস্থানেই রয়েছেন। তবে তাঁদের পরিচিতদের বক্তব্য, এই প্রতিবাদের সঙ্গে তাঁদের রাজনৈতিক অবস্থানের কোনও যোগসূত্র নেই। প্রতিবাদ জানিয়ে শ্রীলেখা যেমন নেটমাধ্যমে লিখেছেন, ‘বাংলা ছবির পাশে দাঁড়ানো নিয়ে যাঁরা গলা ফাটিয়েছিলেন, এ বার তাঁরা পরিচালকের পাশে দাঁড়াবেন কি? প্রতিবাদ জানাবেন এই অন্যায়ের? তা হলে বোঝা যাবে তাঁদের চলচ্চিত্র প্রেম। নইলে আবারও প্রমাণিত, সব ভণ্ডামি!’ নাম না করে জয়জিতের সরাসরি কটাক্ষ, ‘আগের বার পরিচালকের পাশে যিনি ছিলেন, এবারেও তিনি থাকবেন তো?’ নাম না-করলেও অভিনেতার কটাক্ষের লক্ষ্য যে অভিনেত্রী তথা তৃণমূলনেত্রী সায়নী, তা বুঝতে পারছেন সকলেই। ঘটনাচক্রে, সায়নী অনীকের ‘ভবিষ্যতের ভূত’ ছবির মুক্তির সময়ে সমস্যা তৈরি হওয়ায় প্রকাশ্যেই পরিচালকের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। তবে তখন তিনি সরাসরি সক্রিয় রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন না। এখন সায়নী যুব তৃণমূলের সভানেত্রী। গতবছর বিধানসভা নির্বাচনে তিনি তৃণমূলের হয়ে ভোটেও লড়েছিলেন। ঘটনাচক্র আরও বলছে, অনীকের এই ছবিতেই সায়নী অভিনয় করেছেন। কিন্তু নন্দন-বিতর্কে তাঁর কোনও প্রকাশ্যে বক্তব্য এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
নন্দন-বিতর্কে অভিমত প্রকাশ করেছেন পরিচালক ইন্দ্রাশিস আচার্যও। তাঁর যুক্তি, তাঁর ছবি ‘বিল্লু রাক্ষস’ নন্দনে জায়গা পায়নি। ‘পিউপা’ পঞ্চম সপ্তাহে পৌঁছে এক সপ্তাহের জন্য নন্দন প্রেক্ষাগৃহ পেয়েছিল। আরও বহু ছবি কষ্ট করে টাকা জোগাড় করে তৈরি হওয়ার পরেও নন্দনে জায়গা পায় না। এ বার এর প্রতিবাদ হোক!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy