Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
saurabh shukla

থমকে গেল কাজ, পরিচালক বসে আছেন বাইরে, ‘মনোহর পাণ্ডে’র শ্যুটিংয়ে হঠাৎ কী হল?

শ্যুটিংয়ের ফাঁকেই জমেছে আড্ডা। তারই মধ্যে হারমোনিয়াম জোগাড় করে রঘুবীর ধরেছেন গান।

সৌরভ শুক্ল আর কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়।

সৌরভ শুক্ল আর কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৫:৪৪
Share: Save:

টালিগঞ্জ এলাকার এক ছোটখাটো বাড়ি। সামনে কাঠা-খানেক জমির উপর এক চিলতে বাগান। মধ্যবিত্ত ছাপ বাড়ির সর্বত্র। দেওয়ালে টাঙানো সাতপুরনো দেবী লক্ষ্মীর ফটোফ্রেম। লাল সিমেন্টের মেঝে। দরজায় লোহার মোটা হাতল। বিকেল গড়িয়ে সন্ধে নামবে নামবে। এরই মধ্যে ভেসে আসছে একটা গলা। মনের আনন্দে ‘শাম চৌরাসিয়া’ ঘরানার গান গেয়ে চলেছেন কেউ। সালামত আলি, নজ়াকত আলি খানের খেয়াল ধরেছেন সাধাসিধে হারমোনিয়ামে। দক্ষিণ কলকাতার ছোট গলি সেই সুরে ম-ম করছে।
আরও কিছুটা এগিয়েই বোঝা গেল, এখানেই শ্যুটিং চলছে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘মনোহর পাণ্ডে’র। হাজির ছবির প্রধান তিন চরিত্রাভিনেতা। সৌরভ শুক্ল, সুপ্রিয়া পাঠক আর রঘুবীর যাদব। ৩ জনেই হিন্দি ছবির পরিচিত মুখ। সঙ্গে মিঠু চক্রবর্তী-সহ আরও কয়েক জন অভিনেতা-অভিনেত্রী।
শ্যুটিংয়ের ফাঁকেই জমেছে আড্ডা। তারই মধ্যে হারমোনিয়াম জোগাড় করে রঘুবীর ধরেছেন গান। শার্টের উপর লাল ব্লেজার গায়ে রঘুবীরের সঙ্গে কখনও কখনও গলা মেলাচ্ছেন সুপ্রিয়া। ‘বাহ বাহ’ বলে তারিফ করে উঠছেন সৌরভ। মিঠু গানের তালে মাথা নাড়ছেন। থমকে গিয়েছেন অন্য কলাকুশলীরাও। গানের জাদুতে শ্যুটিংও তাই বন্ধ। সে গানই শোনা যাচ্ছে, গলির মুখ থেকে। রঘুবীর গাইছেন আর তার ফাঁকে ফাঁকে দু’লাইন করে বলে দিচ্ছেন, সেই গানের ইতিহাস। মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনছেন বাকিরা।

দক্ষিণ কলকাতার এই এলাকায় ক’দিনের জন্য বাসা বেঁধেছে ‘মনোহর পাণ্ডে’র দল। গান শুনতে শুনতেই পরিচালক গিয়ে বসলেন বাগানের সামনে। প্লাস্টিকের চেয়ার পেতে। কোভিডের দমবন্ধ করা সময়ের পরে আবার শ্যুটিং শুরু হয়েছে। কৌশিক বলছেন, ‘‘মনে হচ্ছে, আবার যেন জীবনে ফিরে এসেছি। সেই সকালে ‘কল টাইম’। শ্যুটিংয়ে আসা। সেই ‘ক্যামেরা রোল’, ‘কাট’— এই শব্দগুলোর মধ্যে ফিরে আসা।’’ কোন দৃশ্যের শ্যুটিং হচ্ছে এখানে? পরিচালক পরিষ্কার করে বললেন না। শুধু বললেন, ‘‘সেটা ছবিটা দেখার জন্য তোলা থাক।’’

সন্ধে নেমে এসেছে। ভিতর থেকে ভেসে আসছে রঘুবীরের গান। বাইরে তীব্র মশার উৎপাত। মশা তাড়ানোর ব্যাট পায়ের কাছে চালাতে চালাতে পরিচালক আবার বললেন, ‘‘কলকাতায় শ্যুটিং করা মানেই, মনে হয়, নিজের ঘরে কাজ করছি। চিনি না, তবু সবাই যেন কত দিনের চেনা! কত কাছের!’’ বলতে বলতে বাগানের মাটি থেকে পাঁচিলের উপর উঠে পড়া মাধবীলতার ডালপালার দিকে তাকালেন তিনি। ইউনিটের অল্পবয়সি সহকারী ছুটে এসে তাঁকে বললেন, ‘‘দাদা, পাশের বাড়ির দিদি, আপনার ছবির ভক্ত। কাল দুপুরে শ্যুটিংয়ের সকলের খাবার ওঁরা পাঠাবেন বলছেন।’’ কোভিড-মুখোশের পিছনে কৌশিক মৃদু হাসলেন। দূরে সন্ধের শাঁখ বেজে উঠল। রঘুবীর তখনও ‘আয়ে পি মোরে মন্দ আরওয়া, আজ মোরে ঘর আয়ে বলমা’য় ডুবে। ‘মনোহর পাণ্ডে’র বাকিরা রঘুবীরের গলায়।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy