Mandira Bedi has made her life more colourful with controversy dgtl
bollywood
শাড়ির কুঁচিতে জাতীয় পতাকায় বিতর্ক, দীর্ঘ অপেক্ষার পরে কন্যাসন্তান দত্তক নিয়ে সাধপূরণ করেন মন্দিরা
মন্দিরার সঞ্চালনাতেই নতুন মাত্রা পায় ক্রিকেট সম্প্রচার। ম্যাচের আগে মন্দিরার সঞ্চালনায় আগের থেকে অনেকটাই রঙিন হয়ে ওঠে ক্রিকেট। তবে খোলামেলা পোশাকে তাঁর উপস্থিতিতে বিশুদ্ধবাদীরা জলঘোলাও করেছিলেন বিস্তর। তাঁদের মতে, ক্রিকেটকে রোমাঞ্চকর এবং বর্ণময় করে তোলার জন্য মন্দিরার উপস্থিতির প্রয়োজন নেই।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২০ ১০:৩৮
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
ক্রিকেটীয় বিনোদন থেকে দ্রুত নিখুঁত শাড়ি পরার কায়দা— তাঁর উপস্থিতি সব কিছুতেই। ছোট পর্দার দৌলতে দর্শকদের বৈঠকখানায় পরিচিত হয়েছিলেন ‘শান্তি’ হিসেবে। সময়ের সঙ্গে সেই পরিচয় ভেঙে ফেলে নিজেকে নতুন ছা্ঁচে গড়েছেন বার বার। তবে এখনও খল চরিত্রেই অভিনয় করতে ভালবাসেন মন্দিরা বেদী।
০২২০
১৯৭২ সালের ১৫ এপ্রিল মন্দিরার জন্ম কলকাতায়। বাবা বীরেন্দ্র এবং মা গীতার সঙ্গে শৈশবেই তিনি চলে যান মুম্বই। পড়াশোনা সেখানেই। ক্যাথিড্রাল অ্যান্ড জন কনন স্কুলের পরে তিনি স্নাতক স্তরের পড়াশোনা সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে। সোফিয়া পলিটেকনিক কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর স্তরের পড়াশোনা।
০৩২০
অভিনেত্রী হিসেবে মন্দিরার প্রথম কাজ দূরদর্শনের ‘শান্তি’ ধারাবাহিকে। ১৯৯৪ সালে প্রদর্শিত ‘শান্তি’ ছিল ভারতীয় ছোটপর্দার বিনোদন জগতে মেগা সিরিয়ালের ক্ষেত্রে পথপ্রদর্শক। এই ধারাবাহিকে অভিনয় করে মন্দিরা আকাশছোঁয়া সাফল্যে ও জনপ্রিয়তার শরিক হয়েছিলেন। আসল পরিচয়ের বদলে দর্শকরা তাঁকে চিনতেন ‘শান্তি’ নামেই।
০৪২০
নয় এবং তার পরের দশকেও মন্দিরা ছিলেন ছোট পর্দার প্রথম সারির অভিনেত্রী। দূরদর্শন পরবর্তী সময়ে তিনি কাজ করেছেন বিভিন্ন বেসরকারি চ্যানেলে। ছোট পর্দায় তাঁর কাজের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ‘আহত’, ‘ঘরজামাই’, ‘সিআইডি’, ‘কিঁউকি সাস ভি কভি বহু থি’, ‘জসসি জ্যায়সি কোই নহিঁ’ এবং ‘সারাভাই ভার্সেস সারাভাই’।
০৫২০
নয়ের দশকেই মন্দিরার আত্মপ্রকাশ সিনেমাতে। ১৯৯৫ সালে তাঁর প্রথম অভিনয় ‘দিলওয়ালে দুলহনিয়া লে যায়েঙ্গে’ ছবিতে। এর পর ‘বাদল’, ‘শাদি কা লাড্ডু’, ‘নাম গুম যায়েগা’, ‘দশ কহানিয়াঁ’-সহ বেশ কিছু ছবিতে পার্শ্বচরিত্রে মন্দিরার অভিনয় দর্শকদের মনে দাগ কেটে গিয়েছে।
০৬২০
শুধু অভিনেত্রীই নন। মন্দিরাকে দর্শক মনে রেখেছেন ‘ডিল ইয়া নো ডিল’, ‘ইন্ডিয়ান আইডল জুনিয়র’, ‘জো জিতা ওহি সুপারস্টার’-এর সঞ্চালক হিসেবেও। ‘খতরোঁ কে খিলাড়ি’-তে তিনি ছিলেন প্রতিযোগী।
০৭২০
মন্দিরার সঞ্চালনাতেই নতুন মাত্রা পায় ক্রিকেট সম্প্রচার। ম্যাচের আগে মন্দিরার সঞ্চালনায় আগের থেকে অনেকটাই রঙিন হয়ে ওঠে ক্রিকেট। তবে খোলামেলা পোশাকে তাঁর উপস্থিতিতে বিশুদ্ধবাদীরা জলঘোলাও করেছিলেন বিস্তর। তাঁদের মতে, ক্রিকেটকে রোমাঞ্চকর এবং বর্ণময় করে তোলার জন্য মন্দিরার উপস্থিতির প্রয়োজন নেই।
০৮২০
২০০৭ সালে ক্রিকেট বিশ্বকাপের সময়ে মন্দিরা পোশাক নিয়ে তীব্র বিতর্ক দেখা দেয়। অস্ট্রেলিয়া-শ্রীলঙ্কা ফাইনালের দিন মন্দিরা ম্যাচ সংক্রান্ত আলোচনায় অংশ নেন শাড়ি পরে।
০৯২০
তাঁর শাড়িতে সব দেশের জাতীয় পতাকা প্রিন্টেড ছিল। ভারতের জাতীয় পতকা দেখা যাচ্ছিল শাড়ির কুঁচির অংশে, হাঁটুর নীচে, পায়ের পাতার কিছুটা উপরে। এই ঘটনায় চরম বিতর্ক দেখা দেয়। শেষ অবধি মন্দিরা ক্ষমা চাইতে বাধ্য হন।
১০২০
কেরিয়ারের শুরুতেই, ১৯৯৯ সালে মন্দিরা বিয়ে করেছেন। তাঁর স্বামী রাজ কৌশল পরিচালক এবং প্রযোজক। বিয়ের ১২ বছর পরে জন্ম হয় তাঁদের প্রথম সন্তানের। ছেলের নাম তাঁরা রাখেন ‘বীর’।
১১২০
তবে মন্দিরার মনে হয়েছিল, কন্যাসন্তান না হলে তাঁর পরিবার পরিপূর্ণ হবে না। তা ছাড়া বীরকে এক জন খেলার সঙ্গীও দিতে চেয়েছিলেন মন্দিরা এবং রাজ। তবে দ্বিতীয় সন্তান তাঁরা পেতে চেয়েছিলেন দত্তকের মাধ্যমে।
১২২০
সেন্ট্রাল অ্যাডপশন রিসোর্স অথরিটিতে আবেদন জানান রাজ এবং মন্দিরা। ২ বছরেরও বেশি অপেক্ষার পরে চলতি বছরে তাঁরা পেয়েছেন ৪ বছর বয়সি কন্যাসন্তানকে। মেয়ের নাম রেখেছেন ‘তারা’।
১৩২০
এ বছরের ২৮ জুলাই তাঁদের পরিবারে এসেছে তারা। তাকে স্বাগত জানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবিও শেয়ার করেছেন মন্দিরা। ছেলে বীর এবং মেয়ে তারাকে নিয়ে সেখানে ছবি পোস্ট করেছেন রাজ ও মন্দিরা।
১৪২০
বহু অপেক্ষার পরে কন্যাসন্তানের প্রাপ্তিতে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দনে ভেসে যান রাজ এবং মন্দিরা।
১৫২০
স্বাস্থ্য-সচেতন মন্দিরা নিয়মিত দীর্ঘ ক্ষণ শরীরচর্চা করেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় শরীরচর্চার উপরে তাঁর ভিডিয়ো খুবই জনপ্রিয়। মহিলাদের শরীরচর্চার উপরে খুবই গুরুত্ব দেন মন্দিরা।
১৬২০
ইউটিউবে মন্দিরার শাড়ি নিয়ে বিভিন্ন ভিডিয়োরও চাহিদা তুমুল। সুইমসুট-সহ বিভিন্ন খোলামেলা পোশাকে স্বচ্ছন্দ মন্দিরার প্রিয় পোশাক শাড়ি। নানা ধরনের শাড়ি তিনি সংগ্রহ করতে ভালবাসেন।
১৭২০
মাঝে মাঝে ডায়েট ভাঙতেও তাঁর দ্বিধা নেই। চিনা খাবারের পাশাপাশি জমিয়ে খান চকোলেট এবং পনির মাখনওয়ালাও।
১৮২০
আগে আমিষ খাবার খেলেও এখন মন্দিরা পুরোদস্তুর নিরামিশাষী। পশুপ্রেমী মন্দিরা বর্তমানে পেটা-র সক্রিয় সদস্য।
১৯২০
শাহরুখ-আমির-হৃতিকের ভক্ত মন্দিরার প্রিয় ছবি ‘দিলওয়ালে দুলহনিয়া লে যায়েঙ্গে’। অভিনেত্রীদের মধ্যে পছন্দ পরিণীতি চোপড়াকে।
২০২০
ব্যস্ত সূচির মধ্যেও পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো তাঁর কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিতর্ক এবং জনপ্রিয়তা দিয়েই নিজের জীবনকে রঙিন করে তুলতে ভালবাসেন মন্দিরা, ঘনিষ্ঠজনদের ‘ম্যান্ডি’।