মমতাশঙ্কর। ছবি: সংগৃহীত।
চারপাশে যা ঘটে চলেছে, তাতে বড্ড বিরক্ত লাগছে। চারদিকে এমন সব কথা উড়ে বেড়াচ্ছে, মাঝেমধ্যে হাসিও পাচ্ছে। আবার রাগও হচ্ছে। শুনলাম, রাজ্যের মন্ত্রী মেয়েদের মদ্যপানের বিরোধিতা করেছেন। রাতে যেন কোনও ভাবেই মহিলাদের মদ পরিবেশন না করা হয়, সে বিষয়েও নিদান দিয়েছেন। তাঁর দাবি, রাতদখল কর্মসূচিতে গিয়ে মেয়েরা রাস্তায় মদ্যপান করছেন। নিজের বিধানসভা এলাকায় রাতে মেয়েদের মদ পরিবেশনেও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন।
কিন্তু, এ ভাবে কি মেয়েদের মদ্যপান আটকানো যাবে, এটা আমার প্রশ্ন। কারণ, যখন আমরা নিষেধাজ্ঞা জারি করি তখনই সেই কাজ লুকিয়ে করার প্রবণতা বাড়ে। আজকে যে সমস্ত মেয়ে দোকানে গিয়ে মদ কিনছেন, তাঁরা কি নিষেধাজ্ঞা জারি হলে মদ্যপান বন্ধ করবেন! বরং, এমন কিছু হলে তাঁরা লুকিয়ে মদ্যপান করবেন। নিজে না কিনতে পারলে অন্যকে দিয়ে কিনিয়ে আনবেন। বিষয়টা খানিকটা ‘বজ্র আঁটুনি ফস্কা গেরো’র মতো।
তবে এটুকুই নয়। আমার মনে আরও একটা প্রশ্ন আছে। মদ্যপান বন্ধ করলেই কি নারীসুরক্ষায় দারুণ কোনও উন্নতি ঘটানো সম্ভব? সেটা আমার মনে হয় না। তবে আজকাল এ সব দেখি আর ভাবি, এ সমস্ত ফতোয়া এক সময় জারি করা হয়েছিল ইসলামিক দেশগুলিতে। সেখানেও কি মদ্যপান বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে! তা হলে আমাদের মতো দেশেই বা কী করে সম্ভব?
অর্থাৎ, মেয়েদের কী করা উচিত বা করা উচিত নয়, বিষয়টা সে ভাবে বিচার না করে, আমার মনে হয়, যে কোনও সভ্য দেশে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে মানুষের করণীয় কী সেটা ভেবে দেখা উচিত। মেয়েরা মদ্যপান করবে না, এটা যেমন আমি মানি না, তেমনই এটাও মনে করি, স্বাধীনতার অর্থই মদ্যপান নয়। আর সেটা শুধু মেয়েদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য নয়। তা ছাড়া, প্রকাশ্য রাস্তায় মদ্যপান করাটাও শোভন নয়। রাস্তায় মদ্যপান তাই আমার কাছে অত্যন্ত কুরুচিকর এবং অন্যায়।
শালীনতার সংজ্ঞা যেমন নারী-পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই এক, স্বাধীনতারও। অন্তত এমনই মনে করি আমি। কোনও মহিলা ব্যক্তিগত পরিসরে কী করছেন, তার উপর নজরদারি করা আমাদের কারও কাজ নয়। তবে সকলকেই মনে রাখতে হবে, আমার স্বাধীনতা যেন অন্যের বিরক্তির কারণ না হয়ে ওঠে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy