হাই গ্রেড মেটাস্টেসিস ক্যানসার শরীরে বাসা বেঁধেছে। এ কথা প্রকাশ্যে এল ২০১৮-য়। নিজেই টুইট করে জানালেন তা। খবর আসতেই পায়ের তলার মাটি সরে গিয়েছিল সোনালি বেন্দ্রের। নিউ ইয়র্কে উড়ে গিয়েছিলেন সত্বর। চিকিৎসা চলাকালীনই প্রথম ক্যানসারের খবর কী ভাবে তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে দুরমুশ করে দিয়েছিল, সে কথাও জানিয়েছিলেন এক টিভি শো-য়ে। “ক্যানসার হয়েছে শুনে আমি সারা রাত ঘুমোতে পারিনি। শুধু কেঁদেছি। আর ভেবেছি, কেন আমার সঙ্গেই এমনটা হল?”
তাঁর ক্যামেরার সামনে সপ্রতিভ আচরণ, অভিনয় দক্ষতার জেরে মাত্র ১৯ বছর বয়সেই চিত্রপরিচালক কে রবিশংকরের নজরে আসেন তিনি। ১৯৯৪-তে মুক্তি পায় ‘আগ’। সেখানে গোবিন্দা ও শিল্পা শেট্টির সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করেন সোনালি। এই ছবিই তাঁকে এনে দিল সেরা নতুন মুখের পুরস্কার। এর পর পরই আসতে থাকে বলিউডি ও দক্ষিণী নানা ছবির অফার।
‘‘নব্বইয়ে সোনালি বেন্দ্রে মানেই যেন এক আলাদা আবেদন! ‘নরাজ’, ‘জখম’, ‘অঙ্গারে’ এ সব চবি তো চলতই সোনালির নামে। সবেতেই যে সে নায়িকা ছিল এমন নয়, কিন্তু তাঁর অভিনয়ের প্রসাদগুণে অনেক তাবড় অভিনেত্রীর সঙ্গেও পাল্লা দিতে পারতেন। এক সহজাত সৌন্দর্যও ছিল, যা নয়নাভিরাম।’’— সোনালি বেন্দ্রের অভিনয় নিয়ে এখনও মুগ্ধ সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়।
মাঝে ২০০২-এ বহু দিনের বন্ধু পরিচালক গোল্ডি বেহলকে বিয়ে করেন সোনালি। ২০০৪-এ জন্ম নেয় তাঁদের পুত্রসন্তান। এই সময় সংসার সামলে ছেলেকে একটু বড় করা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন সোনালি। পরে ২০১২-তে অক্ষয় কুমারের বিপরীতে ‘ওয়ান্স আপন আ টাইম ইন মুম্বই দোবারা’ ছবিতে কামব্যাক করেন সোনালি। তার পর থেকে ২০১৭ রপর্যন্ত ফিল্ম ও টেলিফিশন নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন এই জনপ্রিয় নায়িকা। রোমান্স, অ্যাকশন এবং কমেডি মিলিয়ে ইতিমধ্যেই প্রায় পঞ্চাশটিরও বেশি বলিউডি ছবিতে অভিনয় করে ফেলেছেন সোনালি।
বাধ সাধল ক্যানসার। ২০১৮-র পর জীবনের এই কঠিন অধ্যায়েও এতটুকু মনোবল হারাননি তিনি। পাশে পেয়েছিলেন গোটা পরিবারকেই। নিউ ইয়র্কে চিকিত্সা চলাকালীন সোনালির সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন একাধিক বলিউড তারকা। কখনও প্রিয় বন্ধু সুজান খান বা গায়ত্রী জোশীর সঙ্গে ছবি শেয়ার করেছিলেন সোনালি। কখনও বা অনুপম খের, প্রিয়ঙ্কা চোপড়াদের দেখা গিয়েছে সোনালির সঙ্গে। তাঁর হার না মানা মানসিকতাকে কুর্নিশ জানিয়েছেন সকলে।
এমনকি কোমরের নীচে জল ভরা একটি ট্যাঙ্ক নিয়ে বিভিন্ন ব্যায়াম করার ছবি ও ভিডিয়ো সোশ্যাল ওয়ালে শেয়ার করেছেন সোনালি। কষ্টকর এই অ্যাকোয়া থেরাপি নিয়েও কিছুই লুকোননি। এই সময় পরিবারের সঙ্গে কাটানো কিছু মুহূর্তও ভাগ করেছেন ভক্তদের সঙ্গে। নিজেই বার বার তাঁদের সাহস জুগিয়েছেন। নিজের শারীরিক অবস্থা নিয়ে ভয় পেতে বারণ করেছেন।
সময়মতো চিকিৎসার পাশাপাশি সোনালির এমন মনের জোর ও সাহসই তাঁকে এই বড় যুদ্ধ জয় করতে সাহায্য করেছেন বলে মনে করেন ক্যানসার বিশেষজ্ঞ সোমনাথ সরকার। ফের টিভি ও রুপোলি পর্দায় ফের দাপিয়ে ফিরে আসুন সোনালি এমনই আকাঙ্ক্ষা তাঁর তামাম ভক্তকুলের। অন্য দিকে ক্যানসার রোগীরাও তাঁর এই কামব্যাক ইনিংস দেখে নিচ্ছেন সাহস ও মনের জোরের পাঠ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy