সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে কলম ধরলেন লিলি চক্রবর্তী।
সন্ধ্যাদির সঙ্গে আমার বিশেষ আলাপ ছিল না কখনওই। তবে ‘জয়া’, ‘ভানু গোয়েন্দা জহর অ্যাসিস্ট্যান্ট’-এর মতো ছবিতে ওঁর গানের সঙ্গে ঠোঁট মিলিয়েছি। স্টুডিয়োতে গেলে অনেক সময়ে ওঁর সঙ্গে দেখা হত। দেখতাম উনি তখন গান রেকর্ড করছেন। তাঁকে এ ভাবেই চিনেছি সঙ্গীতের মাধ্যমে। কারণ বয়সে বড়, গুণী মানুষদের দেখলে আমি একটু দূরে সরে যেতাম। ভয় পেতাম। তাই কখনওই খুব বেশি কথা বলা হয়ে ওঠেনি।
মিসেস সেন (সুচিত্রা সেন)-এর বহু ছবিতে গান করেছেন সন্ধ্যাদি। কী যে ভাল লাগত! অদ্ভুত এক মাদকতা ছিল ওঁর কণ্ঠে। এত মিষ্টি লাগত ওঁর গান শুনতে। সেই অনুভূতি ভোলার নয়। তিনি যে ধরনের গান গেয়েছেন, তা আমি আর কাউকে কখনও গাইতে শুনিনি। আজ সেই সন্ধ্যাদিই চলে গেলেন। রেখে গেলেন তাঁর গান। যে গান আঁকড়ে বাঁচবে পরবর্তী প্রজন্ম।
আজ থেকে প্রায় দু’দশক আগের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে বারবার। তখন আমি একটি ধারাবাহিকে অভিনয় করতাম। সেই ধারাবাহিকের প্রযোজক একটা ছবি করছিলেন। আমাকে অনুরোধ করেছিলেন, আমি যাতে সন্ধ্যাদিকে সেই ছবিতে গান করার জন্য রাজি করাই। তাঁর কথা রাখতে আমি ফোন করেছিলাম সন্ধ্যাদিকে। আমি জানতাম, বাইরের লোক ফোন করলে, সন্ধ্যাদি সরাসরি কথা বলতেন না। সে বারও তাঁর স্বামী ফোন ধরেছিলেন। আমার পরিচয় দিতেই নির্দ্বিধায় ডেকে দিয়েছিলেন সন্ধ্যাদিকে। তাঁকে ছবিতে গান গাওয়ার অনুরোধ করেছিলাম। আমার স্পষ্ট মনে আছে সন্ধ্যাদি বলেছিলেন, “আমি তো এখন আর বাইরে গান করি না। সরি লিলি, তোমাকে বলতে খুব খারাপ লাগছে। আমার বাইরে গান গাওয়া এখন বন্ধ হয়ে গিয়েছে।” সেই তখনই আমার সঙ্গে সন্ধ্যাদির একটু কথা হয়েছিল। কিছু ক্ষণের সেই কথোপকথন আমার কাছে স্মৃতি হয়ে থেকে যাবে।
আমি সন্ধ্যাদির থেকে বয়সে অনেকটাই ছোট। আমাকে আগাগোড়াই স্নেহের চোখে দেখেছেন। আর আমি তাকিয়ে থেকেছি একরাশ মুগ্ধতা নিয়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy