সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে কলম ধরলেন মাধবী মুখোপাধ্যায়
সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের গান শুনেই আমি সঙ্গীত চিনেছি। তার পরে সেই মানুষের গানে আমি ঠোঁট মিলিয়েছি। কিন্তু সন্ধ্যাদি যখন সুচিত্রা সেনের গলায় গান গাইতেন, তখন মনে হত যেন সুচিত্রাই গাইছেন। কী সুন্দর যে মিলত! ‘অগ্নিপরীক্ষা’-র সেই বিখ্যাত ‘গানে মোর কোন ইন্দ্রধনু‘ গানটি আর কেউ ও রকম ভাবে গাইতে পারবে কি না সন্দেহ! ‘তমাল বনে এ সখী এ দু’জনে’- সন্ধ্যাদির গলায় এই গান আজও আমার কানে বাজে। ‘হয়তো কিছুই নাহি পাব, তবুও তোমায় আমি দূর হতে ভালবেসে যাব... ধূপ চির দিন নীরবে জ্বলে যায়, প্রতিদান সে কি পায়’ গানটি যেন তাঁকেই চেনায়। উনি প্রতিদান কি সত্যিই পেলেন?
ঠিক ওঁর চলে যাওয়ার আগে যে পুরস্কারটি দেওয়া হল, যে ঘটনাটি ঘটল, তা কি সত্যিই উচিত ছিল? ওঁকে তো অপমান করা হল ও ভাবে।
মনে পড়ছে, ‘এ শুধু গানের দিন’ বলে যে রেকর্ড বেরলো, তখন আমার সবে বিয়ে হয়েছে। এক শীতের রাতে উনি আমার বাড়ি এলেন। জানতেন, আমি ওঁর গানের ভক্ত। আমার বাড়িতে এসে সেই রেকর্ড দু’টি আমার হাতে দিয়ে গেলেন। ভাবা যায়!
‘কলকাতা ২৮’ থেকে সন্ধ্যাদিকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছিল। যে দিন পুরস্কার দেওয়া হচ্ছিল, সে দিন বর্ধমান রাজবাড়িতে আমার শ্যুটিং। কিন্তু সন্ধ্যাদি বায়না ধরলেন, আমাকে ডাকতে হবে। ওঁর ডাকে শ্যুটিংয়ের পোশাক ছেড়ে নিজের শাড়ি পরে কলকাতায় ফিরে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলাম। আবার তার পরে বর্ধমানে ফিরে বাকি কাজ সেরেছি। সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় আমার কাছে এ রকমই। সব কিছু ছাপিয়ে সন্ধ্যাদির নাম আসে!
সন্ধ্যাদির মতো মানুষ হয় না। সহজ, সরল। তাঁর স্বামী শ্যামলবাবুও ওঁর ভাল চাইতেন সব সময়ে। আজেবাজে গান গাইতে দিতেন না। তাঁর স্ত্রী যাতে ভুল না করে বসে, তার খেয়াল রাখতেন।
ইদানীং প্রতি দিনই নানা জনের কাছ থেকে ওঁর শরীরের খবর নিতাম। এই শনিবার পর্যন্ত ফোনাফুনি করেছি। শুনতাম, ভাল আছেন। এ বার বাড়ি ফিরবেন। রবি এবং সোমবার, শুধু এই দু’টি দিন খবর নিইনি। তার পরেই এল এই খবর!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy