কঙ্গনা রানাউত। ছবি: সংগৃহীত।
গত ৮ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর আলোচনা শুরু হয়েছে বিলকিস বানোকে নিয়ে। শাস্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ২০২২ সালের ১৫ অগস্ট ৭৬তম স্বাধীনতা দিবসে বিলকিসকাণ্ডে সাজাপ্রাপ্ত ১১ জনকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় গুজরাত সরকার। ধর্ষকদের মুক্তির যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল গুজরাত সরকার, গত ৮ জানুয়ারি তা খারিজ করে দেয় শীর্ষ আদালত। অর্থাৎ, মুক্তি পাওয়া ওই ১১ জন ধর্ষককে আবার ফেরত যেতে হবে জেলে। সুপ্রিম এই রায়ে স্বাভাবিক ভাবেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন বিলকিস। নিজের আইনজীবী শোভা গুপ্তের মাধ্যমে একটি বিবৃতি দিয়ে বিলকিস বলেন, “রায় ঘোষণার পর আমি স্বস্তিতে চোখের জল মুছেছি। গত দেড় বছরে এই প্রথম বারের জন্য আমি হেসেছি। আমি আমার সন্তানদের আলিঙ্গন করেছি। মনে হচ্ছে যেন একটা পর্বত বুক থেকে নেমে গেল। আমি আবার শ্বাস নিতে পারব।” আদালতে এই বড় জয়ের পরে ইতিমধ্যে বলিউডে বিলকিসকে নিয়ে ছবি তৈরির আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। সেই আলোচনায় এগিয়ে রয়েছেন অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউত। সম্প্রতি কঙ্গনা জানান, বিলকিসকে নিয়ে একটি চিত্রনাট্য নাকি তৈরিই আছে তাঁর। কাজ শুরু হওয়ার অপেক্ষা শুধু!
সমাজমাধ্যমের পাতায় এক অনুরাগী কঙ্গনাকে প্রশ্ন করেন, বিলকিসকে নিয়ে তিনি কোনও কাজ করতে চান কি না। সেই অনুরাগীর প্রশ্নের উত্তর দিয়ে অভিনেত্রী লেখেন, ‘‘আমি অবশ্যই তাঁর গল্প নিয়ে ছবি করতে চাই। আমি গত তিন বছর ধরে বিষয়টা নিয়ে কাজ করেছি, আমার কাছে চিত্রনাট্যও তৈরি আছে। কিন্তু কোনও ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ছবিটা করতে চাইছে না, কারণ তারা কেউই রাজনীতি নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করতে চায় না।’’ কঙ্গনা আরও জানান, নামজাদা এক ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নাকি তাঁর সঙ্গে কাজ করতেই রাজি নয়, কারণ তাঁকে নাকি তাঁরা ভারতীয় জনতা পার্টির সমর্থক বলে দাগিয়ে দিয়েছেন।
২০০২ সালে গোধরাকাণ্ডের পর গুজরাতে সাম্প্রদায়িক হিংসা চলাকালীন ৩ মে দাহোড় জেলার দেবগড় বারিয়া গ্রামে হামলা চালানো হয়। গ্রামের বাসিন্দা পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বিলকিসকে গণধর্ষণ করা হয়। বিলকিসের চোখের সামনেই তাঁর তিন বছরের মেয়েকে পাথরে আছড়ে ফেলেন হামলাকারীরা। ঘটনাস্থলেই মারা যায় সে। তাঁর পরিবারের আরও কয়েক জন সদস্যকে হত্যা করা হয়। এই অপরাধকে ‘বিরলের মধ্যে বিরলতম’ আখ্যা দিয়ে মুম্বইয়ের সিবিআই আদালতে কঠোর সাজার পক্ষে সওয়াল করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ২০০৮ সালের ২১ জানুয়ারি মোট ১১ জনের বিরুদ্ধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দিয়েছিল ওই বিশেষ আদালত। জেলে ওই ১১ জন ধর্ষক এবং খুনি ‘ভাল আচরণ’ করেছেন, সে কারণেই তাঁদের সাজার মেয়াদ কমানো হয়েছে— এই যুক্তিতে তাঁদের ছাড়ার সিদ্ধান্ত জানায় গুজরাত আদালত। মুক্তির পর স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব ওই অপরাধীদের সংবর্ধনা দিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ। অন্য দিকে, কঙ্গনাও বিজেপি শিবিরের কড়া সমর্থক। বিলকিসকাণ্ড নিয়ে ছবি করলে কেমন হবে তাঁর অবস্থান, স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy