‘দৃষ্টিকোণ’
দু’ দশকেরও বেশি সময় পর তাঁরা একসঙ্গে পর্দায় ফিরছেন। সঞ্জয় দত্ত এবং মাধুরী দীক্ষিত। অনস্ক্রিন তো বটেই, পর্দার বাইরেও যাঁরা পরস্পরের মুখোমুখি হতেন না, তাঁদের আবার ফিরিয়ে আনা বোধহয় কর্ণ জোহরের পক্ষেই সম্ভব। বাংলাতে যেমনটা করেছিলেন শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও নন্দিতা রায় ‘প্রাক্তন’ ছবিতে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত এবং প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে একফ্রেমে এনে। তাঁরা ফিরছেন কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘দৃষ্টিকোণ’-এ। অভিষেক বর্মনের পরিচালনায় ‘কলঙ্ক’-য় মাধুরী-সঞ্জয় আবার একসঙ্গে। যদিও শোনা যাচ্ছে, মাধুরী শর্ত দিয়েছেন, ছবিতে তাঁদের একসঙ্গে বেশি দৃশ্য রাখা চলবে না।
সঞ্জয়-মাধুরী হোক বা প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণা, পর্দার জনপ্রিয় জুটিদের রসায়ন স্ক্রিন পেরিয়ে হয়তো পা রেখেছিল তাঁদের ব্যক্তিগত চৌহদ্দিতে। তাই দর্শকেরও ছিল অমোঘ আকর্ষণ। নিক্তিতে মেপে নিতে চাইতেন পত্রপত্রিকায় পড়া তারকাদের এই ‘লিঙ্কআপ’-এর সত্যতা। জল্পনা চলতই এবং সেটা আজও সমান ভাবে প্রাসঙ্গিক।
‘সাজন’-এর সময় থেকে মাধুরী ও সঞ্জয়ের সম্পর্কের গুঞ্জন পত্রপত্রিকায় ছয়লাপ। এক আলাপচারিতায় ‘খলনায়ক’ প্রসঙ্গে বলিউড সুন্দরী বলেছিলেন, ‘ও-ই একমাত্র মানুষ, যে আমাকে সব সময় হাসাতে পারে। ও খুব খোলা মনের।’ কিন্তু তাঁরা কেউই সম্পর্কের কথা স্বীকার করেননি। মাধুরী-সঞ্জয়ের ঘনিষ্ঠতার খবরে অভিনেতার তৎকালীন স্ত্রী রিচা মেয়ে ত্রিশালাকে নিয়ে নিউ ইয়র্ক থেকে দেশে ফেরেন। এবং পরিষ্কার জানান, তিনি ডিভোর্স চান না। যদিও রিচার বোন সরাসরি আঙুল তোলেন মাধুরীর দিকে।
প্রসেনজিৎ ও ঋতুপর্ণা
১৯৯৩-এ মুম্বই ধারাবাহিক বিস্ফোরণের ঘটনায় বেআইনি ভাবে অস্ত্র মজুত রাখার মামলায় সঞ্জয়কে গ্রেফতারের পর থেকে মাধুরী অস্বীকার করতে থাকেন তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক। মুক্তি পেয়ে সঞ্জয় বলেছিলেন, ‘আমি ওর সঙ্গে অনেক ছবি করেছি এবং মাধুরী হোক বা শ্রীদেবী, সকলের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভাল। মাধুরী কী বলল, তাতে আমার কিছু যায় আসে না।’ পরবর্তী সময়ে সঞ্জয়ের জীবনের সবচেয়ে অন্ধকার দিনগুলোয় মাধুরী আর সঞ্জয়ের মুখোমুখি হননি।
'সাজন'
নব্বইয়ের দশকে টলিউডের সফলতম জুটির ক্ষেত্রেও ঘটনাপ্রবাহ অল্প হলেও মেলে। প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণা জুটির অনস্ক্রিন ও অফস্ক্রিন রয়াসন পত্রপত্রিকায় অন্যতম আলোচিত বিষয় ছিল। একটা সময়ের পর তিক্ততা এবং টানা ৪৬টা ছবির পর আর ছবি না করার সিদ্ধান্ত... ‘জামাইবাবু জিন্দাবাদ’-এ এসে জুটি ভেঙেছিল। এখন ‘প্রাক্তন’-এর পর আবার এই জুটির প্রতীক্ষায় দর্শক। ঋতুপর্ণার কথায়, ‘‘সব কিছু তো আর এক রকম চলে না। সিদ্ধান্তটা আমিই নিয়েছিলাম। পরিস্থিতি তখন এমন ছিল যে, কাজ করার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। ‘চোখের বালি’, ‘দোসর’, ‘অপরাজিতা তুমি’র মতো ছবি ছেড়েছিলাম। আমার তরফ থেকে দর্শককে বঞ্চিত করতে চাইনি। তবে বলেছিলাম, পছন্দ মতো পরিচালক ও গল্প হলে কাজটা করব। প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জির পছন্দও হয়েছিল বিষয়টা। আর কাজের মধ্য দিয়েই তো বাঁচি। তাই দর্শকের সঙ্গে তঞ্চকতা করব না।’’ কিন্তু শট শেষেও কি প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের মুখোমুখি হতে অস্বস্তি হয় না? ‘‘তার বাইরে যে আমরা খুব একটা কথা বলি, তা নয়।’’ শীতলতা বোধহয় এখনও তার স্পর্শ ছাড়েনি।
প্রসেনজিতের কথায়, ‘‘ফিরে আসাটা কঠিন ছিল এবং কাজ না করাটা অ্যাক্সিডেন্ট। আমাদের সম্পর্কটা অদ্ভুত। দুটো মানুষ লম্বা সময় একই জায়গায় থাকলে, ভালবাসা, বন্ধুত্ব, ইগোও থাকে। তবে আমরা কাজকে প্রথম স্থান দিয়েছি।’’
মাধুরী ও সঞ্জয়
দু’জনেই বড় তারকা ও দীর্ঘ বিরতির পর ক্যামেরার মুখোমুখি হওয়া। ইগো কি বাধা সৃষ্টি করেনি? ‘‘আমার অত ইগো নেই, কিছু প্রিন্সিপাল আছে। ব্যক্তিগত ভাবে কারও সঙ্গে শত্রুতা নেই,’’ খুব বেশি বলতে চাইলেন না ঋতুপর্ণা। অন্য দিকে প্রসেনজিতের কথায়, ‘‘আমাদের সমস্যাগুলো খুব গভীর ভাবে না দেখলে কেউ বুঝবে না। অতীতকে বর্তমানে টেনে আনার মানেও নেই। যা ঘটেছিল, তা ভবিতব্য বা দুর্ঘটনা... কিন্তু সেটা মাথায় রাখলে, কাজে প্রভাব পড়বে। তবে কাজের পর বসে গল্প আগেও করিনি, আজও হয় না। কোন গান রিলিজ করতে হবে, কাকে আগে ডেট দিতে হবে, সেই আলোচনায় জীবনের নব্বই ভাগ কেটে গিয়েছে।’’
তারকা হলেও দিনের শেষে তাঁরা মানুষ। তাই কখনও ব্যক্তিগত মান-অভিমান জীবনে বড় হয়ে দাঁড়ায়। আবার ‘বক্স অফিস’-এর টানে ফিরেও আসেন। যেমন এসেছেন রণবীর-দীপিকা, সলমন-ক্যাটরিনা, রণবীর সিংহ-অনুষ্কা শর্মাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy